এম. এ. হাসনাত, আজমিরীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি;
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে এক্সেভেটরে কৃষিজমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি করছে এলাকার একাধিক অসাধুচক্র। আজমিরীগঞ্জ থেকে শিবপাশাগামী রাস্তার পাশে ও সদর ইউনিয়নের বিরাট ভাটিপাড়া গ্রামের অদূরের কৃষিজমির উপরিভাগ কেটে গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে এলাকার লালমিয়া বাজারে একটি ভিটা নির্মাণের কাজ চলামান রয়েছে। এছাড়া আরও দু'টি জায়গায় একইভাবে মাটি কাটা ও ভিটা নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে। উল্লেখ্য যে, আজমিরীগঞ্জে প্রশাসনের তোয়াক্কা না করেই এক্সেভেটরের মাধ্যমে চলছে ফসলি জমির মাটি কাটা। একাধিক প্রভাবশালী চক্র দিনের পর দিন মাটি কেটে নগদ টাকায় বিক্রি সহ ভিটা নির্মাণ করে দেয়ায় অলিখিতভাবে চুক্তিবদ্ধ। সরজমিনে দেখা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে আজমিরীগঞ্জ - শিবপাশা রাস্তা সংলগ্ন এলাকায় বিরাট ভাটিপাড়া গ্রামের অদূরে শিবপাশার একটি অসাধু চক্রের মাধ্যমে এক্সেভেটর দিয়ে কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি কেটে ডায়নাভর্তি করে এলাকার বিভিন্ন জায়গায় নগদ টাকায় বিক্রি করছে। অপরদিকে আজমিরীগঞ্জের ঘরদাইর থেকে শিবপাশাগামী রাস্তার পাশে ও ঘরদাইর গ্রামের অদূরে অপর আরেকটি একটি অসাধুচক্রের দ্বারা এক্সেভটরের মাধ্যমে মাটি কেটে বিক্রি করছে। ডায়নাভর্তি প্রতি গাড়ি মাটি বিক্রয়মূল্য ৯০০ টাকা।এদিকে প্রতিদিন ৭/৮ টি ডায়নাভর্তি মাটি বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করছেন তারা। তাদের সরবরাহ করা মাটি রাস্তা ভরাট, বসতঘর নির্মাণসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। ওই দুই এলাকায় প্রায় ১৫-২০ একর ফসলি জমি থেকে এক্সেভেটর দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। জোর করে কৃষিজমি থেকে মাটি কেটে নেওয়ায় প্রভাবশালীরা উপকৃত হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এলাকার প্রান্তিক কৃষকরা, এতে করে জমির উপরিভাগের উর্বর মাটি কেটে নেওয়ায় কয়েক দশক এসব জমিতে ফসল উৎপাদন করা কঠিন হবে বলে জানিয়েছেন কৃষিবিদ ও কৃষকেরা।জমির উপরিভাগের উর্বর মাটি কেটে নেওয়ায় জমিতে সৃষ্টি হয়েছে গর্ত। ফলে অনেক কৃষকই এ বছর কোনো ফসল ফলাতে পারেননি। জমিতে ভালো ফসল উৎপাদনের উপযোগী হলো উপরিভাগের মাটি। ওই মাটি প্রতিনিয়ত কেটে ফেলার কারণে জমির উর্বরতা শক্তি দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। অন্যদিকে পরিবেশেরও ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে। জমির উপরিভাগের মাটি একবার কেটে নিয়ে গেলে তা পূরণ হতে ৮-১০ বছর সময় লাগে। এলাকার একাধিক কৃষকের অভিযোগ, মাটি কাটতে নিষেধ করা হলেও তারা কথা শুনছেন না। বাঁধা দিতে গেলে তাদের লোকজন হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন বলে জানা যায়। অপরদিকে আজমিরীগঞ্জ থেকে কাকাইলছেওগামী রাস্তার পাশে রনিয়া গ্রামের অদূরে, ঘরদাইর গ্রামের একাধিক অসাধু চক্রের উদ্যোগে এক্সেভেটর লাগিয়ে একটি শুকনো পুকুর থেকে মাটি কেটে ভিটা নির্মাণের কাজ চলছে। তবে স্থানীয়রা জানায়, ওই পুকুরটি কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করে একাধিক ব্যাক্তির নিকট বিক্রি করে দিয়েছে। ওই ক্রেতারাই তাদের ক্রয়কৃত জায়গায় মাটিভরাট করে ভিটা নির্মাণকাজ করাচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মুজিবুল ইসলাম বলেন, "বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্হা নেয়া হবে"।