মাসুদুর রহমান,কিশোরগঞ্জ
কিশোেরগঞ্জ শহরের নাগরিক জনদুর্ভোগের আরেক নাম জি ইজি বাইকের যানজট। সকাল ৮ টার পর থেকে রাত অবধি এই যানজট লেগেই থাকে। শহরের প্রতিটি প্রবেশ মুখ দিয়ে ভোর হতে ব্যাপক হারে ইজিবাইক প্রবেশ করতে থাকে এবং৯ টা থেকে ১০ টার মধ্যেই ব্যাপক যানজট লেগে যায়। যানজটের কারণে প্রতিটি কর্মক্ষেত্রের লোকজন শহরে তাদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করতে পারে না। স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীরা সময় মতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছাতে পারে না। এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে হেঁটে যাবার অবস্হাও থাকেনা। দুপুরের দিকে কিশোরগঞ্জ রেলস্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়া এগারসিন্দুর গোধূলি ট্রেনের যাত্রাীরা প্রায়ই ট্রেন মিস করে। যানজটের কারনে অসুস্থ রোগী বহনকারী অম্ব্যুলেন্স ও ইজিবাইক রাস্তায় আটকে সময়মতো হাসপাতালে পৌঁছাতে পারেনা। শহরের একরামপুর মোড়, স্টেশন রোড, আঠার বাড়ির কাচারি, কালীবাড়ি মোড়,গৌরাঙ্গবাজার মোড়ে যানযটের চিত্র খুবই ভয়াবহ। কিশোরগঞ্জ পৌর কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা যায় তাদের ৬৫০ টির মতো নিবন্ধন করা ইজিবািক আছে এবং এগুলো হলুদ রংয়ের। কিন্তু বাস্তবে অনিবন্ধিত ইজি বাইকের সংখ্যা দশ গুণের বেশি। বিগত ১১ এবং ১২ সেপ্টেম্বর পুলিশ সুপার মোঃ হাসান চৌধুরী ইজি বাইক সমিতি,বেসরকারী ক্লিনিক,ফলব্যাবসায়ী,দোকান মালিক সমিতি সহ সকল অংশীজনের সমন্বয়ে ধারাবাহিকভাবে দুইদিন মিটিং করে যানযট নিরসনে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।সকল অংশীজান পুলিশ প্রশাসনকে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। নাগরিকদের অসচেতনতাই যানজটের অন্যতম প্রধান কারণ বলে উল্লেখ করেন সচেতন নাগরিক কমিটির প্রতিনিধিরা। রাস্তার উপর যত্রতত্র পার্কিং, ভ্যান গাড়িতে মালামাল রেখে ব্যবসা যানজটের অন্যতম কারন বলে উল্লেখ করেন সাধারন জনগন। এদিকে রথখলা এলাকার ব্যাবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে যানযটের কারনে বিরক্ত হয়ে সাধারন ক্রেতারা এখন শহরে এসে কেনাকাটায় অনীহা প্রকাশ করে।জেলা ট্রাফিক বিভাগ তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেও বেপরোয়া চালকদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। অপরদিকে তারা তাদের নির্দিষ্ট পয়েন্টের বাইরে ভ্যান গাড়ী,অবৈধ পার্কিং ও ফুটপাতের দোকান সরাতে পারেন না।
পৌরসভার অনুমোদিত ইজি বাইক চালক সুমন মিয়া ও কাসেম মিয়ার সাথে কথা বলে জানা যায় অণুমোদনহীন ইজি বাইকের কারণে সৃষ্ট যানজটের ফলে তারা প্রতিদিন তাদের মালিক কে ভাড়া পরিশোধ করতে পারছেন না। কারণ হিসেবে বলেন পূর্বে তারা যেখানে দশ ট্রিপ যাত্রী পরিবহন করতে পারতো সেখানে তারা যানজটের কারনে তিনটির বেশি ট্রিপে যাত্রী পরিবহন করতে পারেনা।
সকল শ্রেণীর নাগরিকদের সাথে কথা বলে জানা যায় তাদের দাবি অতি শীঘ্র মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে শহরে রাস্তাঘাটে ভ্যান সহ ফুটপাত দখলমুক্ত করে নির্দিষ্ট পরিমান অনুমোদিত যানবাহন চলাচলের অনুমতি প্রদান করলেই কেবল যান চলাচলের স্বাভাবিক গতি ফিরে আসবে এবং শহরবাসী যানজট নামক এ ভয়াবহ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি লাভ করবে।
এ জাতীয় আরো খবর..