আহসান হাবীব লায়েক, জকিগঞ্জ:
সিলেটের কানাইঘাটে নিজের প্রতিষ্ঠিত এতিমখানায় বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হারিছ চৌধুরীর মরদেহ পুনরায় দাফন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিষ্টার সামিরা তানজিম চৌধুরীসহ তাঁর আত্মীয়-স্বজনদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়াত হারিছ চৌধুরীর বাবা শফিকুল হক চৌধুরীর নামে প্রতিষ্ঠিত শফিকুল হক চৌধুরী মেমোরিয়াল এতিমখানা প্রাঙ্গনে হারিছ চৌধুরীর মরদেহ পুনরায় দাফন করা হবে। সকল আইনী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর চলতি মাসেই পুনরায় দাফন সম্পন্ন হবে জানিয়েছেন হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমরা নানাভাবে অবিচারসহ হয়রানীর শিকার হয়েছি। আমার বাবা মারা যাওয়ার পরও সে সময় সরকারকে জানিয়ে কোনো প্রতিকার পাইনি। উল্টো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি এবং তার মৃত্যুর বিষয়টি অমিমাংসিত থেকে যায়। আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে বাবার লাশ সনাক্ত করে তার ইচ্ছা অনুযায়ী কানাইঘাটে দাফন করতে পারবো। যার জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা নাসরিন জানান, উচ্চ আদালতের নির্দেশনার প্রেক্ষিতে প্রশাসনকে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সেভাবে মুক্তিযোদ্ধার সম্মাননায় বীরমুক্তিযোদ্ধা মরহুম হারিছ চৌধুরীর মরদেহ দাফন করা হবে। তার পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শফিকুল হক চৌধুরী মেমোরিয়াল এতিমখানা প্রাঙ্গনে কবরের জায়গার স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে।
দাফনের জায়গার স্থান নির্ধারণের সময় হারিছ চৌধুরীর আত্মীয়-স্বজন ছাড়াও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ফয়ছল আহমদ ছাড়াও স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় স্থানীয় সাংবাদিকদের কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা ফয়ছল আহমদ বলেন, বিগত ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগ সরকার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের অন্যতম নীতিনির্ধারক দেশপ্রেমিক রাজনীতিবিদ সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব বীরমুক্তিযোদ্ধা আবুল হারিছ চৌধুরীর বিরুদ্ধে অসংখ্য মিথ্যা মামলা দিয়েছিলো। কিন্তু তিনি দেশ থেকে কোথাও পালিয়ে যাননি, তিনি ঢাকাতে আত্মগোপনে ছিলেন। ব্যক্তিগত ভাবে তিনি আমাকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন। আমি বিভিন্ন সময়ে আমাদের নেতা হারিছ চৌধুরীর সাথে সাক্ষাতও করেছি এবং তার সাথে সব-সময় যোগাযোগ ছিল। স্বাধীন দেশে মুক্তভাবে হারিছ চৌধুরীর লাশ তার নিজ এলাকা সিলেটের কানাইঘাটে এখন দাফন করা হবে।
প্রসঙ্গত যে, আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় ২০২১ সালের ৩ সেপ্টেম্বর ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আবুল হারিছ চৌধুরী মারা যান। ৪ সেপ্টেম্বর প্রফেসর মাহমুদুর রহমান নামে ঢাকার সাভারে একটি মাদ্রাসায় তার লাশ দাফন করা হয়। এরপর আবুল হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিষ্টার সামিরা চৌধুরী প্রফেসর মাহমুদুর রহমানই তার পিতা আবুল হারিছ চৌধুরী দাবী করে লাশের পরিচয় সনাক্ত করার জন্য উচ্চ আদালতের স্মরনাপন্ন হলে আদালতের নির্দেশে তার লাশ কবর থেকে তোলা হয়। এরপর ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে লাশের পরিচয় সনাক্ত করা হয়।
এ জাতীয় আরো খবর..