খালেদ সাইফুল্লাহ,কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার)
মৌলভীবাজার রেঞ্জের আওতাধীন কমলগঞ্জ উপজেলার মাগুড়ছড়া হতে লাউয়াছড়া ও কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়কের ধলাইর ব্রিজ থেকে ফুলবাড়ী পর্যন্ত সামাজিক বনায়নের ষ্ট্রিপ বাগানের মেয়াদ পূর্ণ হলে ও নিলাম না দেয়ায় রাতের আঁধারে গাছ চুরি হচ্ছে।
এছাড়া বিভিন্ন সময় ঝড়ের তান্ডবে কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়কে গাছ উপড়ে পড়ে মানুষের প্রাণহানী ঘটছে। পাশাপাশি রেলপথের উপরে গাছ পড়ে ট্রেন যোগাযোগে বিঘ্ন সৃষ্টি করছে।
এছাড়াও ডাকাতরা রাতের আধারে রাস্তার পাশে থাকা গাছ ফেলে কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়ক ডাকাতি করে। ফলে মানুষজন সর্বশান্ত হওয়ার সাথে সাথে দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
এ সড়কের গাছ সমুহ চুরি ও ঝড়ে পড়ে নষ্ট হওয়ার কারনে সরকার লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে ও উপকার ভোগীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন।
উপকার ভোগী সমিতির সভাপতি মো.আব্দুল হামিদ জানান, সামাজিক বনায়নের আওতায় ১৯৯২-১৯৯৩ সনে আকাশমনি ও চিকরাশী ষ্ট্রিপ প্ল্যান্টেশনে গাছ রোপন করা হয়। মৌলভীবাজার রেঞ্জের আওতাধীন লাউয়াছড়া হইতে মাগুড়ছড়া রেলপথের উভয়পাশের ২কিলোমিটার এবং ধলাই ব্রিজ হইতে ফুলবাড়ী পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার এর মধ্যে ১কিলোমিটারের গাছ কাটা হয়েছে।
গাছ সমুহ পরিপক্ষ হওয়ায় প্রায় রাতেই এক শ্রেণীর অসাধু গাছ চোর চক্র সামাজিক বনায়নের গাছ চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। ফলে সরকার ও উপকারভোগীরা আর্থিক ভাবে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন।
প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ঝড়ের তান্ডবে লাউয়াছড়া হইতে মাগুড়ছড়া রেলপথের উভয়পাশের গাছ রেল সড়কের উপর পড়ে রেল যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটছে।
এদিকে উপকার ভোগী সমিতির সভাপতি মো. আব্দুল হামিদ গত বছর ১৯ জানুয়ারী এক আবেদনে বিভাগীয় বন সংরক্ষক সিলেট বরাবরে ষ্ট্রিপ প্ল্যান্টেশনের গাছ সমুহ কর্তনের জন্য অনুরোধ জানান। পত্রের প্রেক্ষিতে বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. তৌফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত স্মারক নং-২২.০১.০০০০.৬৭২.১৭.০০১.২৩.২৭৫৮ ১৪ জুন ২৩ এ একপত্রে (লাউয়াছড়া হইতে মাগুড়ছড়া ২ কিলোমিটার) সরজমিন তদন্তক্রমে সামাজিক বিধিমালা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট রেঞ্জ কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিলেও এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়নি। অথচ মাগুড়ছড়া টু ভানুগাছ রেল সড়কের ৫ কিলোমিটার একই সময়ের ঐ বাগানটি অকশন হয়ে গেছে।
উপকার ভোগী সমিতির সভাপতি মো. আব্দুল হামিদ সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, অদৃশ্য কারণে বাকি ২টি বাগান নিলাম না তোলায় অসাধু গাছ চোর বনায়নের গাছ চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এখানে ফরেস্টের কোন মাথা ব্যাথা নেই। তাছাড়া ঝড়ের তান্ডবে বিভিন্ন সময় গাছ উপড়ে পড়ে রোধে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে বিনষ্ট হচ্ছে।
সরকার রাজস্ব আয় ও উপকার ভোগীরা আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। তিনি সংশ্লিষ্ট বন বিভাগের উধর্বতন কর্তৃপক্ষকে সরজমিন তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।
কমলগঞ্জ ভানুগাছ চৌমুহনী সিএনজি সমিতির সভাপতি বেলাল আহমেদ বলেন, আমাদের গাড়ি চালকরা কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়কে প্রায় সময় দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন ও রাস্তায় গাছ ফেলে ডাকাতি হয়।
রাস্তার দুপাশের গাছগুলো দ্রুত সময়ে অপসারণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে সহকারী বন সংরক্ষক সিলেটের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাজমুল আলম এই প্রতিবেদককে জানান, শুক্রবার আমাদের অফিস বন্ধ থাকায় আবেদনের কাগজপত্রগুলো দেখা যাচ্ছ না। উপকার ভোগী সমিতির সভাপতি মো. আব্দুল হামিদ যেন শ্রীমঙ্গল রেঞ্জ অফিসে যোগাযোগ করেন।
এ জাতীয় আরো খবর..