আবু হাসান আপন নবীনগর উপজেলা প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর সরকারি কলেজ নবীনগর উপজেলার একমাত্র সরকারি কলেজ।কলেজটি ১৯৬৯ সালের জুলাই মাসে বেসরকারি ভাবে নবীনগরের স্থানীয় ব্যক্তিদের উদ্যোগে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
১৯৮৫ সালে দীর্ঘ ষোল বছরের ফলাফল ও শিক্ষার মান ভালো হওয়ায় সরকার প্রতিষ্ঠানটিকে জাতীয়করণ করেন।একটি সময় কলেজের শিক্ষার মান ভালো থাকায় নবীনগর উপজেলা সহ পার্শ্ববর্তী মুরাদনগর ও রায়পুরা উপজেলা থেকে অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনার জন্য এই কলেজে ভর্তি হতো।
শিক্ষার পরিবেশও ছিল চমৎকার, নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন হতো সর্বশেষ ১৯৯৭ সালে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়। প্রতিটি রাজনৈতিক দলের ছাত্র নেতাদের আগমনে কলেজ ক্যাম্পাস থাকতো মুখর। নবীনগর সরকারি কলেজের অবকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি পড়াশোনার মান উন্নত হয়নি।
নবীনগর সরকারি কলেজের ফলাফল ও পাশের হার নবীনগরের অন্যান্য কলেজের তুলনায় খুবই কম।কলেজে ছাত্রাবাসে ছাত্রদের থাকার পরিবেশ না থাকলেও কলেজের শিক্ষকদের ছাত্রাবাসে থাকার চমৎকার ব্যবস্থা রয়েছে।ছাত্রাবাসের চতুর্থ তলা শিক্ষকদের দখলে আর নিচতলায় থাকেন প্রিন্সিপাল।
ছাত্রাবাসে শিক্ষক থাকার নিয়ম না থাকলেও সকল অনিশম এখানে নিয়ম হয়ে উঠেছে। ছাত্রাবাসে মাত্র আট জন শিক্ষার্থী রয়েছে। অথচ ছাত্রাবাসে ৪৮ জন শিক্ষার্থী থাকার ব্যবস্থা থাকার কথা।
কলেজের খাতা রেখেও ছাত্রাবাসের অনেক রুম তালাবদ্ধ করে রাখা আছে।কলেজের ছাত্রদের একমাত্র কমন রুমেরও অস্ত্বিত্ব নেই।কমন রুমের যাবতীয় খেলাধূলার সরঞ্জাম শিক্ষকদের দখলে রয়েছে। কমন রুমটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলেন আমরা অবসর সময়ে কমন রুমে খেলতে পারিনা অথচ এক সময় আমাদের কমন রুমে পত্রিকা আসতো,ইনডোর খেলা ধূলা যেমন টেবিল টেনিস, ক্যারাম খেলার ব্যবস্থা ছিল। এখন কোন ব্যবস্থা নেয় আমরা দ্রুত কমন রুম চাই।
কলেজের শিক্ষকরা কলেজে সপ্তাহে পাঁচ দিন ক্লাস করার নিয়ম থাকলেও ক্লাশ করেন দুইদিন এমন অভিযোগ ও পাওয়া গিয়েছে। তবে কলেজে পদার্থ বিজ্ঞানের কোনো শিক্ষক নেই।
বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা খুবই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। নবীনগর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা অন্যান্য কলেজের তুলনায় কোন সুযোগ-সুবিধা পাই না বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।
অথচ পাশের অন্যান্য বেসরকারি কলেজগুলোতে ক্লাস পরীক্ষা, সাপ্তাহিক পরীক্ষা ও মাসিক পরীক্ষা মডেল টেস্ট এর ব্যবস্থা থাকলেও এর কোন কিছুর বালাই নেই সরকারি কলেজে।ছাত্রদের কমন রুমে কর্মচারীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রিন্সিপালকে জাতীয় কোন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতেও দেখা যায় না। নবীনগর সরকারি কলেজের প্রিন্সিপাল এ. কে. এম রেজাউল করিম নবীনগর কলেজে ভাইস প্রিন্সিপাল হিসেবে যোগদান করেন ২০২২ সালের ১লা সেপ্টেম্বর, তিনি ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপালের দায়িত্ব গ্রহন করেন২০২৩ সালের ২৬ অক্টোবর, তিনি চলতি বছরের মার্চের ৩ তারিখে অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন।
তিনি কলেজে দীর্ঘ দুই বছর অবস্থান করলেও শিক্ষার মান উন্নয়নে তেমন কোন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেননি।নবীনগর সরকারি কলেজে বাংলা, ইংরেজি,পদার্থ ও আইসিটি বিভাগে ১টি করে প্রভাষকের পদ শূন্য, গণিত বিভাগে ১ টি সহকারী অধ্যাপকের পদ শূন্য রয়েছে।
চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষক না থাকা অন্য দিকে কর্মরত প্রভাষক ও সহকারী অধ্যাপকদের পাঁচ দিন কলেজের ক্লাসে অবস্থান না করায় পড়াশোনার মানের নাজেহাল অবস্থা। অভিযোগ রয়েছে শিক্ষকরা কলেজ ছাত্রাবাসে থাকার সুযোগ পাওয়ায় পরিবার নিয়ে নবীনগরে বসবাস করে না,প্রভাষকরা ঢাকা,কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে পরিবার নিয়ে বসবাস করে এজন্য কলেজে অবস্থান করে সপ্তাহে তিনদিন।
কলেজের পূর্ব প্রান্তে চারতলা ভবনের কাজের উদ্ভোদনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন আমরা অতি দ্রুততর সময়ে আগড় তলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামী নবীনগরের কৃতি সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা সার্জেন্ট মুজিবুর রহমান এর নামে এই ভবনের নামকরণ করে উদ্ভোদন করবো, এই স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্য মহোদয় জনাব ফয়জুর রহমান বাদল মহোদয়ের সাথে কথা হয়েছে, তিনি উপস্থিত হয়ে সুবিধা জনক সময়ে ভবনের উদ্ভোদন করবেন।
অনিয়মের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি প্রতিটি সমস্যা সৃষ্টির পিছনের কারণ দর্শান।তবে তিনি দাবি করেন তিনি অধ্যক্ষের দায়িত্ব নেওয়ার পর সব কিছু চমৎকার ভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
এ জাতীয় আরো খবর..