ইব্রাহিম মুকুট, ময়মনসিংহ: বিজয় ব্যাবধানে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক) নির্বাচনে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ইকরামুল হক টিটু।বিপুল ব্যাবধানের অন্যতম কারন করোনা কালীন সময়ে নগরবাসীর পাশে থাকা। এছাড়া ৯১.৩১৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় রাস্তা ঘাট,ড্রেনেজ ব্যাবস্থার উন্নয়ন,মসিক নগরীর একপ্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত এলইডি লাইটের মাধ্যমে নগর আলোকিতকরণ, জলাবদ্ধতা নিরসন,দখলকৃত খাল উদ্ধার।এমনকি তিনি নিজে ৯১ বর্গ কিলোমিটারের মসিক এলাকার ৩৩টি ওয়ার্ডের প্রতিটি পাড়া মহল্লার অলিগলি ঘরে ঘরে ভোটারদের কাছে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে ভোট চেয়েছেন।এত বিশাল সংখ্যক কর্মী বাহিনী তার জন্য ভোটারদের কাছে ভোট চেয়েছে তাএক বিরল দৃষ্টান্ত।বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কর্মীরা যেখানে টেবিল ঘড়ি প্রতিকে ভোট চেয়েছেন ভোটারা উত্তর দিয়েছেন আমরাও ইকরামুল হক টিটু'র জন্য টেবিল ঘড়ি প্রতীকে ভোট চাচ্ছি।গতকাল ৯মার্চ শনিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি রেকর্ড পরিমাণ ভোট পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হন।কোন ষড়যন্ত্র প্রপাগান্ডা নির্বাচনে ভোটারদেরকে প্রভাবিত করতে পারেনি।
ইকরামুল হক টিটু টেবিল ঘড়ি প্রতিকে ১৩৯৬০৪ ভোট পেয়েছেন।জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেসামুল আলম ঘোড়া প্রতিকে ১০৭৭৩ ভোট, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সাবেক সদস্য মোঃ রেজাউল হক হরিণ প্রতিকে ১৪৮৭ ভোট, জাতীয় পার্টির শহিদুল ইসলাম লাঙ্গল প্রতিকে ১৩২১ ভোট ,শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সাধারন সম্পাদক সাদেকুল হক খান মিল্কী টজু হাতি প্রতিকে ৩৫৭৬৩ ভোট পেয়েছেন।টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র মোঃ ইকরামুল হক টিটু নিকটতম প্রতিদ্বন্দী সাদেকুল হক খান মিল্কি টজুর চেয়ে ১ লক্ষ্য ৩ হাজার ৮শত ৪১ ভোট বেশি পেয়ে টানা ২য়বার মেয়র নির্বাচিত হন।মোট বৈধ ভোটের সংখ্যা১৮৮৯৪৮টি,বাতিলকৃত ভোটের সংখ্যা ৪৯১টি,সর্বমোট প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ১৮৯৪৩০টি,প্রদত্ত ভোটের শতকরা হার ৫৬.৩০%।ভোটের হিসাবে জামানত হারালেন আলহাজ্ব এহতেসামুল আলম, রেজাউল হক ও শহিদুল ইসলাম স্বপন মণ্ডল।প্রাপ্ত ভোটের প্রায় ৭৪% ভোট পায় ইকরামুল হক টিটু।নগরীর ১২৮টি কেন্দ্রের সবগুলোতেই টেবিল ঘড়ি প্রতীক বিজয়ী হয়েছে।ভোট কেন্দ্রগুলোতে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। আওয়ামী লীগের ডাকসাইটে ২ নেতার শোচনীয় পরাজয়ে ময়মনসিংহের রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ তৈরি হলো। নতুন করে পালে হাওয়া লাগলো মেয়র টিটু পন্থীদের মধ্যে। শনিবার সন্ধ্যার আগে একে একে বিভিন্ন কেন্দ্রের খবর পাওয়ার পর নবনির্বাচিত মেয়র টিটুর সমর্থকরা বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো বিজয় উল্লাস করেন। রাত ৯টায় বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং অফিসার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন চৌধুরী।নবনির্বাচিত মেয়র টিটুকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাতে কালীবাড়ি এলাকায় ভিড় করেন হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক। ছাদ খোলা গাড়িতে তিনি টাউন হল পর্যন্ত দীর্ঘ ২ কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দেন। রাতের নগরীতে সৃষ্টি হয় অভূতপূর্ব দৃশ্যের। নগরীজুড়ে চলছে উৎসব আমেজ।ইভিএম পদ্ধতিতে শনিবার (০৯ মার্চ) সকাল ০৮টা থেকে বিকাল ০৪টা পর্যন্ত নগরীর ১২৮টি কেন্দ্রে ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়।
ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের ইতিহাসে এবার দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন পদ মিলিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন মোট ২২২ জন। এরমধ্যে, মেয়র পদে ০৫ প্রার্থী ছাড়াও নগরীর ৩৩টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৯ এবং ১১টি সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে প্রার্থী ছিলেন ৬৯ জন। নগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ফরহাদ আলম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ায় কাউন্সিলর পদে ৩২টি ওয়ার্ডে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।সিটি নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিজিবি, র্যাব, পুলিশ, এপিবিএন, আনসার ব্যাটালিয়ন, সাধারণ আনসার মিলে ৪ হাজার ৫০০ জন দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি ৩৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ১১ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাঠে ছিলেন। সাধারণ ভোটকেন্দ্রে পুলিশ ও আনসার মিলে ১৬ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করেন।সিটি নির্বাচনে মোট ১২৮টি ভোটকেন্দ্রের ৯৯০টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ করা হয়। নগরীর বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে স্বতঃস্ফূর্তভাবে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটারগণ ভোট প্রদান করেন। ভোটদান শেষে ভোটারগণ নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। ২০১৮ সালে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন গঠিত হয়েছে ৯১ দশমিক ৩১৫ বর্গ কি.মি.এলাকা নিয়ে।২১ টি ওয়ার্ড থেকে ৩৩টি ওয়ার্ডে উন্নীত হয়েছে।ময়মনসিংহে ফলাফলের পর বিজয় চিহ্ন দেখান টিটু।সর্বসাধারণ মনে করেন ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনকে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদায় উন্নীত করা হোক।
এ জাতীয় আরো খবর..