সিলেটে ৩০টি যৌতুকবিহীন বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। স্থানীয় একটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে সোমবার এই আয়োজন সম্পন্ন হয়। অনুষ্ঠানে পাত্র-পাত্রীদের পরিবার ও স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন এবং তারা এই উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
আয়োজক সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়, দরিদ্র পরিবারগুলোর অর্থনৈতিক সংকট ও যৌতুকপ্রথার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে এ ধরনের গণবিবাহের আয়োজন করা হয়েছে। তারা আরও বলেন, যৌতুক প্রথা আমাদের সমাজের একটি বড় সমস্যা। এই প্রথা দূর করতে এবং দরিদ্র পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়াতে আমরা এমন উদ্যোগ নিয়েছি।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন। তারা যৌতুকবিহীন এই বিবাহকে সমাজের জন্য একটি ইতিবাচক উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন।
নবদম্পতিরা ও তাদের পরিবার এ উদ্যোগের জন্য আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, যৌতুক ছাড়াই বিয়ের আয়োজন করায় আমাদের পরিবারগুলোর জন্য এটি এক অনন্য সুযোগ।
সোমবার সিলেট নগরীর একটি কনভেনশন হলে এই গণবিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যদিয়ে দাম্পত্য সম্পর্কে আবদ্ধ হলেন সিলেটের ৩০ তরুণ-তরুণী। গাড়িতে করে অর্ধশত বর-কনে দুপুরে ওয়েডিং হলে আসলে অন্যরকম এক পরিবেশের তৈরি হয়।
বরদের পরনে ছিল ঐতিহ্যবাহী পাগড়ি আর কনেদের পরনে ছিল লালশাড়ি। অনুষ্ঠানে রীতি অনুযায়ী খাওয়া-ধাওয়া আনুষ্ঠানিকতা থেকে শুরু করে সবকিছুই ছিল চোখে পড়ার মতো। দুই পক্ষের পরিবারের লোকজনও বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
গণবিয়ের অনুষ্ঠানে আসা বর-কনেরা জানান, আলাদা করে বিয়ের অনুষ্ঠান করার মতো সামর্থ্য নেই তাদের। গরিব হওয়া সত্ত্বেও ধুমধাম করে বিয়ের আয়োজনে খুশি স্বজনরাও। এ সময় স্বজনরা বলেন, এমন ধমধাম করে বিয়ে দিতে পারব তা কল্পনাওকরতে পারিনি। এমন সুন্দর পরিবেশে বিয়ে হওয়ায় খুবই আনন্দ লাগছে।
বিয়ের পাশাপাশি সংসার জীবন শুরুর জন্য নবদম্পতিদের একটি সেলাই মেশিন, একটি ভ্যানগাড়ি, রান্নার চুলা, কম্বলসহ ঘরের কাজে লাগে এমন নানা সরঞ্জাম দিয়েছে সংস্থাটি। একইসাথে বর-কনে আনা-নেয়ার জন্য যে গাড়িগুলো রয়েছে সেগুলোও ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে দেয়া হয় বলে জানিয়েছেন ফাউন্ডেশনের কো-অর্ডিনেটর আবদুল বাছিত।
সমাজে যৌতুকবিরোধী প্রচারণার অংশ হিসেবে এই ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আল খায়ের ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর তারেক মাহমুদ। তিনি জানান, যৌতুকবিহীন এই গণবিয়েতে মসজিদের ইমাম, দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষেরা ধুমধামের সাথে নতুন জীবনে পদার্পন স্মৃতি হিসেবে থাকবে বলে প্রত্যাশা জানিয়েছেন।
এ জাতীয় আরো খবর..