আত্মহত্যা কোনো সমস্যার সমাধান নয়। এই বিষয়টি যদি আত্মহত্যাকারী ব্যক্তি বুঝতেন নিশ্চয়ই তিনি এমন কাজ করতেন না। বরং আত্মহত্যাই তাদের কাছে সব সমস্যার সমাধান বলে বিবেচিত হয়।
আজ ১০ সেপ্টেম্বর, বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস। সারাবিশ্বের মত বাংলাদেশেও আত্মহত্যার হার দিন দিন বেড়েই চলেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণাপত্রের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ৩২ জন মানুষ আত্মহত্যা করেন।
কোনো মানুষ যদি অসুস্থ না হোন তবে কখনোই তিনি আত্মহননের চিন্তা বা এই কাজ করতে পারেন না। নির্দিষ্ট করে বলা বেশ কঠিন যে কে, কখন, কীভাবে আত্মহত্যার মত ঘটনা ঘটাতে পারেন। কিন্তু আমরা যদি খুব ভালোভাবে খেয়াল করি-এমন ভাবনার ব্যক্তিদের কথাবার্তা বা আচরণগত গতিবিধির পরিবর্তন বেশ লক্ষ্যণীয়।
কীভাবে বুঝবেন যে আপনার কাছের মানুষটি আত্মহত্যার কথা ভাবছেন কি না। বেশ কিছু লক্ষণে এই ব্যাপারটি কাছের মানুষরা বুঝতে পারবেন। খেয়াল রাখুন আপনার পাশের মানুষটির দিকে তার মধ্যে এসব লক্ষণ আছে কি না-
১. কারণে- অকারণে প্রায়ই মৃত্যুর কথা বলতে থাকা।
২.নিজের সব ইচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা কমে যেতে থাকা।
৩.সব নেতিবাচক ঘটনার জন্য নিজেকে দায়ী করতে থাকা।
৪. সব সময় হতাশাগ্রস্ত থাকা।
৫. বেঁচে থাকার উদ্দেশ্য খুঁজে না পাওয়া।
৬. সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন হতাশামূলক পোস্ট দেওয়া-মানসিকভাবে তিনি ভালো নেই।
৭. দুঃসময়ে পারিবারিক বা সামাজিকভাবে সহমর্মীতা না পেয়ে বরং হেয়প্রতিপন্ন হওয়া।
৮. হঠাৎ খুব বেশি হাইপার এক্টিভ হওয়া বা একেবারেই চুপচাপ হয়ে যাওয়া।
৯. চরম অনুতপ্ত হওয়া ও একাকিত্বে ভোগা থেকেও আত্মহননের ভাবনা মাথায় আসতে পারে।
এই বিষয়গুলো কারো মধ্যে খুঁজে পেলে অবশ্যই সেই মানুষটাকে বিচার না করে তার কথাগুলো মনযোগ দিয়ে শোনার চেষ্টা করুন ও সহমর্মীতা প্রদর্শন করুন এবং প্রয়োজনে প্রফেশনাল মনোবিজ্ঞানী বা মনরোগবিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে উৎসাহিত করুন।
দিন-রাতের মধ্যে আমরা হয়তো আত্মহত্যার হার শুণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে পারবোনা; তবে কাছের মানুষদের একটু সহযোগিতা, সহমর্মিতা অনেকটাই এই সমস্যাকে কমিয়ে আনতে পারে। আপনার আশপাশের সবার খোঁজ নিন, বন্ধু বা প্রিয়জনকে সময় দিন। কারো মধ্যে এমন কিছু অস্বাভাবিক লক্ষ্য করলে সতর্ক হোন।
এ জাতীয় আরো খবর..