লিওনেল মেসির সৌদি আরবের পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্রকে বেছে নেওয়ার অন্যতম কারণগুলোর একটি ছিল তাঁর পরিবার। মেসির স্ত্রী আন্তোনেল্লা রোকুজ্জোও নাকি চাননি মেসি সৌদি আরবে যান। আল হিলালকে বাদ দিয়ে মেসির ইন্টার মায়ামিকে বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রেও নাকি মেসি স্ত্রীর চাওয়াকে গুরুত্ব দিয়েছেন। ইন্টার মায়ামিতে এসে এরই মধ্যে দুটি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। গ্যালারিতে স্ত্রী–পুত্রদের সরব উপস্থিতিতে এই দুই ম্যাচে দারুণভাবে জ্বলে উঠেছেন মেসি।
প্রথম ম্যাচে অন্তিম মুহূর্তে গোল করার পর দৌড়ে গিয়ে স্ত্রী–সন্তানদের সঙ্গে উদ্যাপনও করেছেন মেসি। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে মেসি ছিলেন আরও ক্ষুরধার। জোড়া গোলের সঙ্গে করেন একটি অ্যাসিস্টও। মাঠে নেমে ইন্টার মায়ামির দর্শকদের কাছ থেকেও মেসি পেয়েছেন দারুণ অভ্যর্থনা। সব মিলিয়ে ইন্টার মায়ামিতে এসে শুরু থেকেই বেশ উপভোগ করছেন বিশ্বকাপজয়ী এই মহাতারকা।
মায়ামিতে নিজের সময়টা এতই দারুণ কাটছে যে মেসি সেখানে নতুন বাড়ি কেনার উদ্যোগও নিয়েছেন। এরই মধ্যে ফ্লোরিডার বোকা রাতোনেতে রোকুজ্জো ও বড় ছেলে থিয়াগোর (১০) সঙ্গে নতুন বাড়ি দেখতেও গেছেন মেসি। সে সময় থিয়াগোর পরনে ছিল বাবার নাম লেখা ইন্টার মায়ামির জার্সি। বাড়ি দেখতে যাওয়ার সময় তিনজনেরই পরনে ছিল কালো রঙের পোশাক।
মেসিকে যে অঞ্চলটিতে বাসা খুঁজতে দেখা গেছে, সেটি থেকে ইন্টার মায়ামির মাঠ ডিআরভি পিএনকে স্টেডিয়ামের দূরত্ব ২৫ মিনিটের মতো। স্টেডিয়ামের উত্তর দিকে মূলত সেই বাড়ির অবস্থান। এ সময় পুরো বাড়িটি মেসি ঘুরে দেখেছেন। এক ব্যক্তি তখন মেসি ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে ছিলেন। সেই ব্যক্তিকে সে সময় দেখা যায় বাড়ি সম্পর্কে মেসিকে বিস্তারিত বর্ণনা দিতে। তবে এই বাড়ি যদি শেষ পর্যন্ত মেসি কিনে নেন, তবে এটিই দক্ষিণ ফ্লোরিডায় মেসির একমাত্র সম্পদ হবে না।
মায়ামি শহরে আগে থেকেই ৯০ লাখ ডলারের বাড়ি আছে তাঁর। পোরশে ডিজাইন টাওয়ারের এই বাড়ি মেসি কিনেছিলেন ২০১৯ সালে। বাল হারবার এবং অ্যাভেনচুরার মাঝামাঝি বিলাসবহুল ৬০ তলার এই টাওয়ারও ডিআরভি পিএনকে স্টেডিয়াম থেকে ২৫ মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত।মেসির মায়ামি–প্রীতি অবশ্য আরও থেকেই ছিল।
২০১৮ সালে মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) ২৫তম ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে ইন্টার মায়ামি অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর ক্লাবমালিকদের একজন ডেভিড বেকহাম লিওনেল মেসির পাঠানো একটি ভিডিও বার্তা নিজের ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেন। বেকহামকে নিজের নতুন প্রজেক্টের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে মেসি তাঁর বার্তার সমাপ্তি টানেন এভাবে, ‘কে জানে, কয়েক বছরের মধ্যে তুমি হয়তো আমাকে ফোন করবে।’
৫ বছরের ব্যবধানে ঠিকই সেই ফোনটি পেয়েছেন মেসি। যার ফলশ্রুতিতে মেসি এখন ইন্টার মায়ামির খেলোয়াড়। সাবেক দুই সতীর্থ ও বন্ধু সের্হিও বুসকেতস এবং জর্দি আলবা এরই মধ্যে মায়ামিতে এসেছেন। শিগগিরই হয়তো মেসির আরেক কাছের বন্ধু সুয়ারেজকেও হয়তো দেখা যাবে ইন্টার মায়ামিতে। মেসি সামনের দিনগুলোতেও যে মায়ামিতে সময়টা দারুণ কাটাবেন, সেই ইঙ্গিতও এখন থেকে পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলে নিজের তৃতীয় ম্যাচ খেলতে মাঠে নামবেন মেসি। লিগস কাপের এই ম্যাচে মেসিদের প্রতিপক্ষ অরল্যান্ডো সিটি। গ্রুপ ‘আই’ থেকে দুই ম্যাচের একটিতে জিতে এবং অন্যটিতে ড্র করে শীর্ষে থেকে পরের পর্বে গেছে অরল্যান্ডো। অন্য দিকে মেসির ইন্টার মায়ামি জিতেছে দুই ম্যাচের দুটিতেই। মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) ম্যাচে মেসিকে দেখতে অবশ্য অপেক্ষা করতে হবে ২১ আগস্ট পর্যন্ত। সেদিন শার্লটের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে প্রথম লিগ ম্যাচ খেলতে নামবেন মেসি।
এ জাতীয় আরো খবর..