রিয়াজ, স্টাফ রিপোর্টার শেরপুর:
ঝিনাইগাতীর সোমেশ্বরী নদী থেকে নির্বিচারে বালু লুটপাট বন্ধ করে দিয়েছে সীমান্ত ফাঁড়ির বিজিবি ।
শুক্রবার (৩৯ নভেম্বর) বিকালে নকশি সীমান্ত ফাঁড়ির বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সদস্যরা সোমেশ্বরী নদীর ইজারা বহির্ভূত এলাকা থেকে বালু লুটপাট বন্ধ করে দেয়।
বিজিবি সুত্রে জানা গেছে, সোমেশ্বরী নদীর তাওয়াকোচা মৌজায় ৭.৭ একর এলাকা থেকে বালু উত্তোলনের অনুমতি দেয় জেলা প্রশাসন। ট্রেন্ডারের মাধ্যমে এক কোটি টাকায় বালু মহালের ইজারা পায় শ্রীবরদী উপজেলার শামীম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আক্তার হোসেন। বাংলা ১৪৩১ সালের চলতি বছর ১ বৈশাখ থেকে বালু উত্তোলন শুরু করে ইজারাদারের লোকজন।
বিজিবি সদস্যদের অভিযোগ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বালু মহালের তাওয়াকোচা মৌজায় ৭ একর জমির স্থান নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি। ফলে ইজারাদারের লোকজন ইজারা বহির্ভূত তাওয়াকোচা,জুকাকুড়া, হালুয়াহাটি, খাড়ামুড়া, বালিজুরি রাঙ্গাজানসহ বিভিন্ন এলাকার কয়েক শ একর এলাকা থেকে বালু লুটপাট চালিয়ে আসছিল।
৭ একর ইজারাকৃত এলাকায় ২৮ টি ড্রেজার মেশিন বসানোর সুযোগ রয়েছে। কিন্তু ইজারাদারের লোকজন ২ শতাধিক ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদীর ৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে অবাধে বালু লুটপাট চালিয়ে আসছিল।
দুই শতাধিক ড্রেজার মেশিনে অবাধে বালু উত্তোলন ও অতিরিক্ত বোঝাই বালুর ট্রাক ও মাহিন্দ্র পরিবহন করায় বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছেন নদী ভাঙ্গন। রাস্তাঘাট ভেঙ্গে দুমড়ে মুছরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। হুমকির সম্মুখীন হয়ে পরেছে পরিবেশের ভারসাম্যের। সরকার বঞ্চিত হচ্ছে রাজস্ব আয় থেকে ।
ইজারাদারের লোকদের বেপরোয়া ভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের লক্ষ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হয়। ধ্বংস করা হয়েছে বালু উত্তোলন যন্ত্র। জরিমানা ও সাজাও দেয়া হয়েছে অবৈধ বালু উত্তোলনের সাথে জরিত শ্রমিকদের। কিন্তু অবৈধভাবে বালু লুটপাট বন্ধ হয়নি।
বালু মহালের ইজারাদার নীতিমালায় শর্ত ভঙ্গের দায়ে বালু ইজারা বাতিল করার বিধান থাকলেও তা করা হয়নি। বিজিবি সদস্যদের অভিযোগ সারারাত বালুর ট্রাক সীমান্ত এলাকায় যাতায়াত করে থাকে। এতে সীমান্ত এলাকা জুড়ে নানা ধরনের অপরাধ সংগঠিত হয়। সীমান্তে বেড়ে গেছে চোকারবারি ও মাদক পাচারকারীদের দৌরাত্ম ।
এসব কারনে বিজিবি'র পক্ষ থেকে বালু উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়। ইজারাবহির্ভূত এলাকা থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়ে বালু মহলের ইজারাদার শামীম আহাম্মেদ বলেন মেশিন মালিকরা তাদের দিকনির্দেশনা অমান্য করে লীজ এলাকার বাইরে থেকে বালু উত্তোলন করে।
তারা ইজারাদারের কথায় কর্ণপাত করেন না।
এ বিষয়ে বিজিবির ৩৯ ব্যাটেলিয়ানের ময়মনসিংহ সেক্টর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোঃ সাবিবর হাসান মজুমদার বলেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে বালু মহালের স্থান নির্ধারণ ও নীতিমালা অনুযায়ী বালু উত্তোলনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আগ পর্যন্ত বালু উত্তোলন বন্ধ থাকবে।
তিনি আরও বলেন সীমান্তে সরকারি সম্পদ লুটপাট রক্ষায় বিজবির এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। উল্লেখ্য, বিজিবি হস্তক্ষেপে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ হওয়ায় নদীভাঙ্গন কবলিত এলাকাবাসীর মধ্যে ফিরে এসেছে স্বস্তি ।
এ জাতীয় আরো খবর..