×
  • প্রকাশিত : ২০২৫-০১-১৮
  • ৫৬ বার পঠিত
খন্দকার মোহাম্মাদ আলী ,সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে।কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের কারণে এ অধিদপ্তরের ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষুর্ন্ন হচ্ছে।এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরে অভিযোগ দেওয়া হলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না যানবাহনের যাত্রী ও চালকরা। 
অনুসন্ধান করে জানা যায়, মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের কর্তাব্যাক্তিরা প্রকাশ্য দিবালোকে দীর্ঘদিন ধরে বহিরাগত ও সোর্সদের মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের পোশাক পরিধান করিয়ে নিজেরা দাঁড়িয়ে থেকে তাদের দিয়ে রীতিমত মহাসড়কের বিভিন্ন যানবাহনে তল্লাসী অভিযান পরিচালনা করাচ্ছেন। যা সরকারী চাকরি আইন অনুযারী সর্ম্পন্ন বেআইনী ও অবৈধ। অথচ এই আইনকে উপেক্ষা করে উত্তরবঙ্গের একমাত্র  প্রবেশ দ্বার সিরাজগঞ্জ-হাটিকুমরুল,ঢাকা-বগুড়া,ঢাকা-রাজশাহী ও বগুড়া-নগরবাড়ি মহাসড়কে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত দ্রুরপাল্লার যানবাহনগুলো থামিয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পোশাক পরে যাত্রীদের ব্যাগ, পার্স ও দেহ তল্লাসী করে আসছেন ।আইনের তোয়াক্কা না করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন কর্মকর্তাদের এমন কর্মকান্ডে বর্তমানে ক্ষিপ্ত যাত্রী,চালক ও স্থানীয়রা।এ হয়রানীর ব্যাপারে অভিযোগ দিলেও কোন প্রতিকার পাননি ভুক্তোভোগীরা।

সরজমিনে গত বুধবার (১৫ জানুয়ারী)দুপুরে সিরাজগঞ্জ হাটিকুমরুল গোল চত্বরে গিয়ে দেখা যায় কিছু মানুষ মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের লোগো লাগানো শরীরে লাল ও হলদে রংয়ের কাপড় পড়ে  কর্মচারী সেজে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রক অধিদপ্তরের জিপ গাড়ি নিয়ে ও  পোশাক  পরে ঢাকাগামী ও বগুড়াগামী দূরপাল্লার যানবাহনে তল্লাশী করছেন।ঘটনাস্থলে গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে ও ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও করতে দেখামাত্র তল্লাশী বন্ধ করে দেন তারা। তল্লাশী চালানো কর্মীদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা বলেন আমরা মাদকদ্রব্যের লোক। কিন্তু পরিচয় পত্র জানতে চাইলে মূহূর্তের মধ্যে সটকে পড়ে দৌড়ে পালিয়ে যান তারা। বহিরাগত ও সোর্সদের সরকারী পোশাক পড়িয়ে কেন এমন কাজ করা হচ্ছে? সে বিষয় জানতে চাইলে কথা বলতে রাজি হননি ঘটনাস্থলে উপস্থিতি থেকে অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া  সিরাজগঞ্জ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের পরিদর্শক এমদাদুল হক। এ সময় তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের ক্যামেরা দেখে এড়িয়ে যান ও ভিডিও করতে না করেন। এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য বারবার অনুরোধ জানান। 
 
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় এভাবেই দীর্ঘদিন যাবৎ সোর্সদের পোষাক পড়িয়ে দিয়ে তাদের দিয়ে নানা অনিয়ম ও অনৈতিক কর্মকান্ড করে যাচ্ছেন সিরাজগঞ্জ মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয়রা জানান,মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা দুরে দাঁড়িয়ে থেকে সোর্স ও বহিরাগত মানুষদের তাদের দপ্তরের পোশাক পড়িয়ে মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যাত্রীবাহী বাস ও ট্রাক থামিয়ে প্রতিনিয়ত সাধারন মানুষরের ব্যাগ, পার্স ও দেহ তল্লাসী করেন । ফরে চরম বিরম্বনায় পড়েন দুরপাল্লার যাত্রী ও চালকরা।অনেকেই প্রতিবাদ করতে চাইলেও ভয় পান। যদিও মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে এমন কর্মকান্ড হলে তার শাস্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এর কোন কিছুই পরোয়া করে না। 

এদিকে সিরাজগঞ্জ জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রোসিকিউটর মো: রফিক সরকার বলেন, নির্দিষ্ট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ব্যতীত কারো ব্যাক্তিগত সম্পত্তি তল্লাশী করার অধিকার কারো নেই। যারা এ কাজগুলো করছেন তারা সর্ম্পন্নভাবে অবৈধভাবে করছেন। মাদকদ্রব্য কর্মকর্তাদের আরো সচেতন হওয়ার দরকার ছিলো। এছাড়াও আইনে বলা আছে এমন কর্মকান্ড হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবে ভুক্তভোগীরা ।

এ বিষযে সিরাজগঞ্জ মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ রুহুল আমিন  বলেন, কখনোই কোন সোর্স আমাদের দপ্তরের পোশাক পরে কারো ব্যাগ, ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে বা দেহ তল্লাশী করতে পারে না। এগুলো সর্ম্পন্ন আইন পরিপন্থি কাজ। যদি করে থাকে তাহলে সেটা সর্ম্পন্নভাবে অবৈধ। কারা এর সাথে জড়িত বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান ।

এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ নজরুল ইসলাম  বলেন,এমন ঘটনা হলে তদন্ত করে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 (ছবির ক্যাপশন: সিরাজগঞ্জে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বহিরাগতদের  দপ্তরের পোষাক ও পরিচয় দিয়ে চালাচ্ছেন অভিযান ও তল্লাশী,ছবিগুলা হাটিকুমরুল-বগুড়া মহাসড়ক থেকে তোলা)

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
lube
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat