রিয়াজ স্টাফ রিপোর্টার শেরপুর
শেরপুরের পাহাড়ি ঢলে বিধ্বস্ত রাস্তা -ঘাট, সেতু কালভার্ট ৩ মাসেও সংস্কার হয়নি। ফলে জেলার সর্বত্র হাজার হাজার মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। আবার কিছু কিছু শুরু হলেও কাজ চলছে ধীরগতিতে । অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্ঠ বিভাগের নেই তেমন কোন তৎপরতা। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শতশত পথচারীদের। স্থানীয়বাসিন্দারা বিধ্বস্ত সড়ক, রাস্তা- ঘাট, সেতু কালভার্ট জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।
জানা যায়, গত ৪ অক্টোবর শুক্রবার জেলার সীমান্তবর্তী নালিতাবাড়ি উপজেলার ভোগাই,চেল্লাখালি, ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশিও সোমেশ্বরী নদীর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির তোড়ে সড়ক,রাস্তা-ঘাট, সেতু- কালভার্টের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।
এতে শেরপুর সদরসহ জেলার,ঝিনাইগাতী,নালিতাবাড়ী, শ্রীবরদীও নকলা উপজেলার অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। দুর্ভোগে পড়ে লাখো মানুষ। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি'র হিসাব মতে শেরপুর জেলাসদরসহ ৫টি উপজেলায় ১২২ টি রাস্তার ৪০৯ কিলোমিটার বিধ্বস্ত হয়েছে। সেতু বিধ্বস্ত হয়েছে ১৮ টি, কালভার্টের ক্ষতি হয়েছে ৫০টি।
এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ধরা হয়েছে ১শ,কোটি টাকার উপরে । ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলার মধ্যে নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি সাধিত হয়।
শেরপুরসদর, নকলা ও শ্রীবরদী উপজেলায় তুলনামুলকভাবে ক্ষতি হয়েছে কম । শেরপুর জেলা সড়ক ও জনপদ বিভাগের হিসাব মতে পাহাড়ি ঢলের পানিতে জেলার বিভিন্ন স্থানে সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়কের ক্ষতি ও বিভিন্ন স্থানে সেতুর দুপাশের মাটি সরে গেছে।
এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ধরা হয়েছে প্রায় ১৫ কোটি টাকা। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় মহারশি ও চেল্লাখালি নদীর ১১২০ মিটার বাঁধ ভেঙ্গে গেছে। নদীর পাড় ভেঙে গেছে ১৫৪০ মিটার। এতে ক্ষতি সাধিত হয়েছে প্রায় ২০ কোটি টাকা।
কিন্তু দীর্ঘ ৩ মাসেও বিধ্বস্ত রাস্তা- ঘাট, সেতু কালভার্টে বিধ্বস্ত নদীর বেরিবাধ সংস্কারের বিষয়ে সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরগুলোর তেমন কোনো তৎপরতা নেই বললেই চলে।
এ অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। ফলে পাহাড়ি ঢলে বিধ্বস্ত রাস্তা ঘাটের গ্রামীন জনগোষ্ঠীর চলাচল করতে দুর্ভোগ কমেনি মানুষের।
শেরপুরের সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিরুল ইসলাম বলেন পাহাড়ি ঢলের পানিতে ৬টি রাস্তার ১০ কিলোমিটার এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২০ কোটি টাকা।
তিনি বলেন ইতিমধ্যেই দুএকটি রাস্তা ছাড়া বাকি কাজ গুলো করা হয়েছে। সড়ক যোগাযোগ চালুর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। বাদবাকি রাস্তাগুলো পর্যায়ক্রমে করা হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো,নকীবুজ্জামান খান বলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় মহারশি ও চেল্লাখালি নদীর বাঁধ ভেঙ্গে ১১২০ মিটার ও নদীর পাড় ভেঙে ১৫৪০ মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে ক্ষতি পরিমাণ ধরা হয় ১২ কোটি টাকা।
তিনি বলেন এগোলো নকশা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। কিছু বরাদ্দ পাওয়া গেছে। তা জরুরি ভিত্তিতে টেন্ডার আহ্বান করা হবে। বাকিগুলো বরাদ্দ পাওয়া গেলে তা সংস্কার করা হবে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি'র শেরপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজের রহমানের সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
সিনিয়র প্রকৌশলী জাহানারা বেগম বলেন ছোটখাটো ভাঙ্গা রাস্তা গুলো সংস্কার করে যাতায়াত ব্যবস্থার চালু রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
বাকিগুলো প্রস্তাব প্রেরন করা হয়েছে বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে নিয়ম মাফিক কাজ করা হবে।
এ জাতীয় আরো খবর..