×
  • প্রকাশিত : ২০২৪-১২-০৯
  • ৪৯ বার পঠিত
এএসএম হারুন, ফেনী:
স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত ফেনীর জনপদ। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্পষ্ট হয়ে উঠছে কৃষিখাতের ক্ষতচিহ্ন। জেলার ছয় উপজেলায় বন্যায় ফসল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ হাজার  কোটি টাকা।  

যেখানে ছয়টি উপজেলায় শুধুমাত্র ফসলের ক্ষতি হয়েছে ৫২৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকার বেশি। এতে প্রায় দুই লক্ষাধিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, জেলার ৩৫ হাজার ৬৭৪ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা মোট ফসলি জমির ৯৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ। তারমধ্যে ১ হাজার ৮৬৫ হেক্টর আমন বীজতলা, ২৬ হাজার হেক্টর আমন, ১ হাজার ৮৫৪ হেক্টর আউশ, আবাদকৃত ৫২৫ হেক্টর শরৎকালীন সবজির পুরো অংশ, ৬৯ হেক্টর ফলবাগান, ৭ হেক্টর আদা, ১৬ হেক্টর হলুদ এবং ১৬ হেক্টর আখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া ফেনী সদর উপজেলার ধর্মপুরে জান্নাত এগ্রোর খামার মালিক তোফায়েল আহমেদ রনি জানায়, বন্যায় তার ৪০ হেক্টর জমিতে অন্তত ৬০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। যেখানে ৫ হাজার ড্রাগন ফল গাছ, মালটা গাছ ১৫ শত, পেয়ারা গাছ ১৫ শত, প্রায় ৫'শত কুল (বরই) গাছ ও ৩'শত আম গাছ'সহ বিভিন্ন ফুল ও ফলজ গাছ সরাসরি বন্যার পানিতে নষ্ট হয়ে যায়। তিনি আরো বলেন, এত বড় ক্ষতি হওয়ার পরও সরকারি ভাবে বড় ধরনের কোনো অনুদান পাইনি। এভাবে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে সরকার না দাঁড়ালে, উদ্যোক্তা হওয়ার মনোবল হারিয়ে ফেলবে তরুণরা। 

জেলার ফুলগাজী উপজেলার মুহুরী নদী তীরবর্তী কৃষক আমিন পাটোয়ারী বলেন, ৫ বিঘা জমিতে ধান লাগানোর অপেক্ষায় ছিলাম, সব বীজ নষ্ট হয়ে গেছে। নদীর বালি এসে বর্তমানে জমি অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। 

ছাগলনাইয়া উপজেলার কৃষক মহিউদ্দিন জানায়, সবজি বিক্রি করে তার পরিবার চলতো, সর্বনাশা বন্যা তার সব স্বপ্ন ধ্বংস করে দিয়েছে। তিনি আরো বলেন, উপজেলা থেকে সামান্য বীজ পেয়েছি, তবে তা অনেকটাই অপ্রতুল্য। 

ফেনীর বন্যায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হওয়া পরশুরাম উপজেলার আজমীর হোসেন মিশু নামে এক কৃষক বলেন, লক্ষ টাকা ঋণ করে চরের পাশে আখ বাগান করি। হঠাৎ করে বন্যা এসে সব নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, আমরা মুহুরী নদী তীরবর্তী এলাকায় থাকি মাঝে মধ্যে বন্যা হতো। তবে এমন ভয়াবহ বন্যা আগে দেখিনি। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. একরাম উদ্দিন বলেন, বন্যায় কৃষিতে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানোর পর বেশ কিছু প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া বসতবাড়ীতে সবজি চাষ, মাঠে হাইব্রিড জাতের সবজি, বোরো ধান (উফশী জাত) ও (হাইব্রিড জাত)' সহ বর্তমানে বাস্তবায়নের শেষে বেশ কিছু প্রকল্প রয়েছে বলে জানায় তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
lube
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat