সোহেল রানা নীলফামারীঃ
নীলফামারীর সদর উপজেলার রামনগড় ইউনিয়নে দলবল নিয়ে পৈত্রিক সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল,বাড়ি লুটপাট ও মারধরের ঘটনায় একই পরিবারের তিন জন গুরুতর আহত হওয়ায় আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী খাদিমুল ইসলাম। তিনি ইউনিয়নের মেম্বারপাড়া এলাকার আলতাফ হোসেনের পুত্র।
ঘটনাটি শুক্রবার (১৫ নভেম্বর/২৪) সকাল আনুমানিক সাড়ে দশটার দিকে এলাকার তফসিল বর্ণিত সম্পত্তিতে ঘটে। ঘটনার চারদিন পরে মঙ্গলবার এলাকার মৃতঃ মশোতুল্লাহের তিন পুত্র এমদাদুল হক ও নুরুল হক এবং শামসুদ্দিনসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে নীলফামারী সদর আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণীতে জানা যায়, রামনগড় মৌজার জে.এল নং ৪০ এর এস.এ ১৫৮ খতিয়ানে ৫৮৯ দাগে ৩৭ শতাংশের মধ্যে ২০ শতাংশ, ৫৯০ দাগে ৩২ এর মধ্যে ২০ শতাংশ এবং ৫৯১ দাগে ১.১৮ এর মধ্যে ২০ শতাংশ মিলে মোট ৬০ শতাংশ সম্পত্তি আলতাফ হোসেন তার মাতা মৃত হামিতন বেগম সূত্রে পায়। উক্ত সম্পত্তি দির্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে চাষাবাদ করে আসছিলেন তিনি। এরআগেও অভিযুক্ত এমদাদুল হকের পরিবার তাদের সম্পত্তি জবরদখলের পায়তারা চালায় এবং ভুক্তভোগী খাদিমুল ও তার বাবাকে মারধোর ও হুমকী দেয়। এবিষয়ে খাদিমুলের পিতা বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালত,সদর বরাবর স্বত্ব ঘোষনার দাবীতে অন্য ৩১৮/২৩ নং মোকদ্দমা আনায়ন করেন। যা বর্তমানে বিচারাধীন আছে। এমতাবস্থায় গত শুক্রবার আলতাফ হোসেন উক্ত সম্পত্তিতে হালচাষ করতে গেলে অভিযুক্তরা বেআইনী জনতার দলবদ্ধ হয়ে হাতে লাঠি-সোটা, দা, লোহার রড, হাসুয়া ইত্যাদি মারাত্মক অস্ত্রে সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তফসিল বর্ণিত জমিতে বেআইনী অনুপ্রবেশ করে আলতাফ হোসেনকে বাঁধা-নিষেধ করে। আলতাফ হোসেন প্রতিবাদ করলে অভিযুক্তরা তাকে এলোপাথারী কিল,ঘুষি মারতে থাকেন এবং তাদের হাতে থাকা লোহার রড দ্বারা হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথার মাঝ বরাবর আঘাত করে ও বাম পায়ের কিমার বরাবর আঘাত করায় গুরুত্বর হাড় ভাঙ্গা জখম করে। পিতার চিৎকারে খাদিমুল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে অভিযুক্তদের হাতে থাকা ধারালো হাসুয়া দিয়ে তার মাথা বরাবর চোট মারলে খাদিমুল মাথা কিছুটা সরিয়ে নেয়। যারকারণে চোটটি মাথার বাম পাশে লেগে গুরুত্বর আঘাত পায় এবং তাকে হত্যার উদ্দেশে অন্ডকোষ চেপে ধরে। মার খেয়ে তারা মাটিতে পড়ে গেলে তাদের রান্না ঘরে প্রবেশ করে থালা-বাসন, চাটি বেড়া ইত্যাদি ভাংচুর করে। এতে প্রায় পঁচিশ হাজার টাকার ক্ষতি সাধন হয়। এরপর অভিযুক্ত আলামিন, শিবলু, সাদ্দাম, শামিম খাদিমুলের ঘরে থাকা পনের হাজার টাকা মুল্যের ৩২ ইঞ্চি ওয়ালটন টেলিভিশনের ক্ষতি সাধন করেন। একই সময় সাদ্দাম শয়ন ঘরে থাকা সোকেছের ড্রয়ার ভেঙ্গে পঁচাশি হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। ঘটনার শোরগোলে ভুক্তভোগীর পরিবারের অন্যান্য লোকজন ও এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে অভিযুক্তরা তাদের হাতে থাকা ধারালো ছোড়া প্রদর্শন করেন। এরপরে খাদিমুল জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন করলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুলিশ অভিযুক্তদের কবল হতে তাদের উদ্ধার করেন। তাদের অবস্থা বেগতিক হলে অপরিচিত অটোযোগে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করান।
জানতে চাইলে মারধোর ও সম্পত্তি জবরদখলের বিষয়টি অশ্বিকার করে সাবেক ইউপি সদস্য অভিযুক্ত শামসুদ্দিন বলেন, আমার বোন মৃত হামিতন বেগমকে বাবাই সম্পত্তি দিয়েছে। তারা বোনের প্রাপ্য সম্পত্তির চেয়ে বেশী দাবী করেন। ওই দিন একটু তর্ক-বিতর্ক হয়েছে আর কিছু না। আমরা আমাদের সকল বোনদের ডেকেছি, তারা আসলে আমরা তাদের সম্পত্তি বুঝিয়ে দিবো।