ওসমান গনি, গজারিয়া প্রতিনিধি:
মুন্সীগঞ্জ গজারিয়া উপজেলা কোটা আন্দোলনকারী নিহতের ঘটনায় মুন্সীগঞ্জে সদর থানায় দায়ের করার দুটি মামলায় আসামি করা হয়েছে গজারিয়ার উপজেলার এক বিএনপি নেতার পরিবারের পাঁচ সদস্যকে। সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে তারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার বলে জানিয়েছেন।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রসুলপুর খেয়াঘাট এলাকায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে গজারিয়া উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ আলম মোল্লা বলেন, ছোটবেলা থেকে আমরা বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত। যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি মজিবুর রহমানের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমাদের বিরোধ ছিল। একটা সময় আমরা তার সাথে রাজনীতি করলেও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে মতবিরোধ এবং তিনি টাকার বিনিময়ে মানুষকে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দেওয়া শুরু করলে আমরা তার কাছ থেকে দূরে সরে আসি। পরবর্তীতে মজিবুর রহমান ও তার সহযোগীরা পরিকল্পিতভাবে আমার ছোট ভাই বি.আলম মোল্লাকে হত্যা করে। মৃত্যুর আগে আমার ভাই মজিবুরের নাম বলে গেছে। সে হত্যা মামলার আসামি হওয়ায় আমাদের উপর আরো ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। সাম্প্রতিকালে শুনতে পেলাম কোটা আন্দোলনে মুন্সীগঞ্জ সদরে ৩জন নিহত হয়। এই ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলায় আমার পরিবারের পাঁচ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে। বিষয়টি শোনার পর আমরা কিছুটা অবাক হয়েছি। পরবর্তীতে জানতে পেলাম মজিবুর আমাদের ঘায়েল করতে আমাদের নামগুলো হত্যা মামলায় ঢুকিয়েছে।
শাহ আলম মোল্লার ছোট ভাই সবুজ মোল্লা বলেন, চলমান কোটা আন্দোলনের সমর্থনে প্রথম থেকে আমি মাঠে ছিলাম। ঘটনার দিন আমি ঢাকায় অবস্থান করছিলাম। আন্দোলন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার অসংখ্য ছবি এবং ভিডিও ক্লিপ আছে আমার কাছে। এখন শুনছি মুন্সীগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারী হত্যা মামলায় আমাদের পরিবারের পাঁচ সদস্যকে আসামি করা হয়েছে। মামলাতে আমি,আমার বড়ভাই শাহ আলম মোল্লা, মামুন মোল্লা,ভাতিজা আব্দুল্লাহ ও ফারদিন মোল্লাকে আসামি করা হয়েছে। বিষয়টি পানির মত আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ মজিবুর রহমান প্রভাব খাটিয়ে আমাদের মামলায় আসামি করেছেন।
বিষয়টি সম্পর্কে অভিযুক্ত যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি মজিবুর রহমান বলেন, হত্যা মামলায় তারা কিভাবে আসামি হয়েছে তা আমার জানা নেই। এ বিষয়ে আপনারা মামলার বাদির সাথে কথা বলতে পারেন। আমি শুধু এটা বলতে পারি এই পরিবারটি একসময় বিএনপি করলেও পরবর্তীতে তারা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিল।
বিষয়টি সম্পর্কে মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার বলেন, নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে বাদী হয়ে মামলা দুটি করা হয়েছে। আমরা নিয়েছি। মামলা দুটি নিয়ে গভীরভাবে তদন্ত করা হবে। প্রকৃতপক্ষে যারা অপরাধী তারাই আসামি হিসেবে থাকবেন। যারা নিরাপরাধ তদন্ত সাপেক্ষে প্রত্যেকে এখান থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট মুন্সীগঞ্জ সদরের সুপার মার্কেটে এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কর্মসূচিতে হামলায় ওইদিনের ঘটনায় ৩ জন নিহত হয়। ৯৫ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হন দেড় শতাধিক। এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত দুটি মামলায় ১১২২জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ জাতীয় আরো খবর..