×
সদ্য প্রাপ্ত:
চকরিয়ায় যুবদলের দ্বি বার্ষিকী কাউন্সিল সম্মেলন ২০২৪ অনুষ্ঠিত রাঙ্গাবালীতে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবি চকরিয়ায় বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের ১ আরোহী নিহত" মহিপুরে চোর চক্রের ৩ সদস্য গ্রেফতার দীর্ঘ ১৬ বছর পর দেশে আসলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিএনপি নেতা ইব্রাহিম ফরিদপুর বিসিসি ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাথে সমঝোতা স্মারক চুক্তি স্বাক্ষরিত বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজির বরগুনা পুলিশের বিশেষ কল্যাণ সভায় যোগদান ভান্ডারিয়াকে বাল্য বিবাহ মুক্ত উপজেলা ঘোষনা রাণীশংকৈলে পুষ্টি বিষয়ক সচেতনামূলক ক্যাম্পেইনিং পুষ্টি মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরন গাইবান্ধায় পুকুর থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার, সৎ মা আটক
  • প্রকাশিত : ২০২৪-০৮-১৫
  • ৪৪ বার পঠিত
মাইনুদ্দিন আল আতিক, কুয়াকাটা:
‘আমার সামনেই পুলিশ-বিজিবির গুলিতে কয়েকটি তাজা প্রাণ ঝরে যায় চোখের পলকেই। তখন আমিও গুলিবিদ্ধ। বাম হাত নাড়াতে পারছি না, এরমধ্যে আরেকজন গুলি খেয়ে আমার সামনেই লুটিয়ে পড়ে। ডান হাত দিয়ে কোনো রকম তাকে আগলে সামনে অগ্রসর হতেই আমার বাম পায়ের রানে পিছনদিক থেকে আরেকটি গুলি এসে লাগতেই মাটিতে ঢলে পড়ে যাই। তখন আশপাশ থেকে কয়েকজন এগিয়ে এসে আমাকে নিয়ে দ্রুত হাসপাতালে যায়। আমি ততক্ষণে অচেতন হয়ে পড়ি।’ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসে এমনই লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দিলেন রাজধানীর প্রাইম ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের ছাত্র মোঃ বাকি বিল্লাহ (২৪)। তিনি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামের বাসিন্দা মোঃ ইমাম হোসেনের বড় ছেলে। গত ১৮ জুলাই দেশব্যাপি যখন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন পুরো চাঙ্গা হয়ে ওঠে তখন বাকি বিল্লাহ ঢাকার রামপুরায় অবস্থান করছিলেন। ক্লাসমেটদের সাথে তিনিও নেমে পড়েন সেই আন্দোলনে। ছাত্র-প্রশাসন মুখোমুখি, থমথমে অবস্থা। স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল রাজধানীর অলিগলি। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ-বিজিবি এলোপাথাড়ি গুলি ছুঁড়তে থাকে। তবুও ছাত্ররা পিছু না হটে সম্মুখপানে এগিয়ে চলে দুরন্ত গতিতে। তখন সন্ধ্যা নেমে এসেছে, ঘড়ির কাঁটায় ৭ টা ছুঁই ছুঁই। স্লোগানে স্লোগানে এগিয়ে যেতেই বাকি বিল্লাহ’র বাম হাতে একটি গুলি এসে লাগে। হাত ছিদ্র হয়ে হাড্ডি গুঁড়ো হয়ে ওপাশ দিয়ে ভেদ করে। তবুও মরণপণ এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এমন সময় তার সামনে আরেকজন গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়ে। তাকে ডান হাত দিয়ে কাঁধে তুলে সামনে অগ্রসর হওয়ার সময় আরেকটি গুলি লাগে তার পায়ে। বাকি বিল্লাহর সাথে এ প্রতিবেদকের কথা হলে তিনি বলেন, ‘নিরস্ত্র ছাত্র-জনতাকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। এরমধ্যে একটি মৃত্যু আমাকে খুবই মর্মাহত করেছে, খুব কাঁদিয়েছে। আমার সামনেই একটি পথশিশুকে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। ছেলেটা আমাদের মিছিলের সাথেই ছিলো। ওর বাহুতে একটি গুলি লেগে ওর বাম হাতটা প্রায় ৪-৫ ফুট দূরে গিয়ে ছিটকে পড়ে, ছেলেটা ওখানেই মারা যায়। চোখ বুজলেই আমি স্পষ্ট দেখতে পাই। এখনও গা শিউরে উঠে, কান্না আসে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় প্রথমে রাজধানীর নাগরিক হাসপাতালে, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানের কর্তব্যরত ডাক্তাররা প্রাথমিক চিকিৎসা দিলেও পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে পরিচিত এক আইনজীবী অত্যন্ত গোপনীয়তার সাথে তার বাসায় রেখে সেবাযত্ন করেন। পরে মা গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বাড়ি নিয়ে আসেন।’ এরই মধ্যে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালের বেডে শুয়ে তার মায়ের সাথে ফোনে কথোপকথনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা যায় বাকি বিল্লাহ তার মাকে আসল ঘটনা আড়াল করে অ্যাজমা সমস্যার কথা বলছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার মা হার্টের রোগী। আমি চাইনি মা-বাবা টেনশন করুক, কিংবা আমার এমন অবস্থার কথা শুনে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ুক। তাই বিষয়টা গোপন রেখেছিলাম।’ তিনি বলেন, ‘স্বাধীন-সার্বভৌম দেশে যেন এভাবে আর কারো ওপর গুলি ছোঁড়া না হয়। অধিকার আদায়ের জন্য যেন আর কোনো মায়ের বুক খালি না হয়। আমি মনে করি, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শহিদদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি তা হবে বৈষম্যহীন। যেখানে সবার সমান অধিকার থাকবে।’ মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত বিপ্লবী এই ছাত্র সুস্থতার জন্য সকলের দোয়া কামনা করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
lube
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat