এএসএম হারুন, ফেনী:
গতকাল গাজীপুরে পিকনিক বাসে দুর্ঘটনায় মারা ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির ছাত্র মীর মোজাম্মেল হোসেন। আজ সকালে তার গ্রামের বাড়ি ফেনীর ফতেহপুরে হাজারো মানুষের জানাযার মধ্যে দিয়ে শেষবিদায় জানানো হয় তাকে।
২৩'ই নভেম্বর সকালে গাজীপুরের ইইউটি শিক্ষার্থীদের বহনকারী বনভোজনের বাসে বিদ্যুতায়িত হয়ে তিনজন গুরুতর আহত হয়। পিকনিক বাস থেকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন। দুর্ঘটনায় নিহত তিন শিক্ষার্থীর একজন ফেনীর মীর মোজাম্মেল নাঈম। সে ইইউটির মেকানিক্যাল এন্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার এমন আকস্মিক মৃত্যুতে শোকের মাতম বইছে পরিবার, সহপাঠ ও এলাকাবাসীর মাঝে।
আজ ভোরে নাঈমের লাশ ফেনী সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। সকাল দশটায় কয়েক হাজার মানুষের অংশগ্রহণে নাঈমের জানাযার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
ফতেপুর গ্রামে আজ সকালে ছিল শোকার্ত মানুষের ঢল। স্বজনদের সান্তনা কোনোভাবেই থামাতে পারছিল না সন্তান হারা বাবা কলেজ শিক্ষক মীর মোতাহের হোসেনের আর্তনাদকে।
মোতাহেরের দুই ছেলেও এক মেয়ের মধ্যে নাঈম ছিলেন দ্বিতীয়। বড় ভাই বাক প্রতিবন্ধী। নাঈমকে ঘিরেই ছিল পরিবারের আশা-ভরসা। সংসারের জলজ্যান্ত প্রদীপ এভাবেই নিভে যাবে, তা মানতে পারছেন না এই শিক্ষক।
পিকনিকে (বনভোজন) যাওয়ার আগের দিন রাতে মা নাহিদা ইয়াসমিনের সঙ্গে নাঈম এর শেষ কথাও হয়েছিল। বনভোজন শেষ করে শহরের মাস্টারপাড়ার বাড়িতে ফিরবেন বলেও শেষবারের মতো জানিয়েছিলেন তার মা'কে। মায়ের বাধ্য ছেলে ঠিকই তার কথা শুনেছে, নাঈম ফিরেছেন নিথর দেহ হয়ে।
স্থানীয়রা জানায়, নাঈম ছিলেন মিশুক প্রকৃতির। গ্রামে গেলে খবর নিতেন পাড়া-প্রতিবেশীদের। কথাও বলতেন বেশ হাস্যজ্জল হয়ে।
নাঈমের স্বজনেরা জানালেন, ছোটবেলা থেকেই খুব মেধাবী ছিল সে। ফেনী পাইলট স্কুল থেকে ২০১৯ সালে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। এসএসসি ও এইচএসসিতে পেয়েছেন জিপিএ-৫। এরপর প্রকৌশলী হবেন এমন দৃঢ় ইচ্ছায় গাজীপুরের ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজিতে ভর্তি হন। কিন্তু দুর্ঘটনায় যেন শেষ হয়ে গেল সব স্বপ্ন।
এ জাতীয় আরো খবর..