×
সদ্য প্রাপ্ত:
বিয়ের ছয় মাস পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা কুড়িগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় মটরসাইকেল আরোহীর মর্মান্তিক মৃত্যু রাজবাড়ী হোমিওপ্যাথিক কলেজের প্রাচীর ভেঙে দখলে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা ফ্লিকের বার্সেলোনায় মুগ্ধ মেসি দেশের সব সংকট সমাধানে দ্রুত নির্বাচন প্রয়োজন: তারেক রহমান ডেঙ্গুতে প্রাণ গেল আরও ১০ জনের আওয়ামী লীগ মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকে বঙ্গোপসাগরে ছুড়ে ফেলেছে -অধ্যক্ষ মাওলানা শাহজাহান আল মাদানী বান্দরবানে নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত ছাত্রশিবিরের শতভাগ সদস্য মাদকমুক্ত: কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জাহিদুল ইসলাম আমাদের জ্ঞানের মাধ্যম হচ্ছে বই ময়মনসিংহ বিভাগীয় বইমেলা'র সমাপনীতে বিভাগীয় কমিশনার
  • প্রকাশিত : ২০২৪-০৪-২৩
  • ৫৮ বার পঠিত
মোঃ হাবিবুর রহমান, গাজীপুর: গাজীপুরের কালিয়াকৈরে পানি নিষ্কাশনের মুখে নন্দন পার্কের মাটির বাঁধে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। ফলে জলাবদ্ধতার কারনে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ। নিজেরা মেশিন দিয়ে সেচের মাধ্যমে কোনরকমে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করলেও বৃষ্টি হলে ঘরে ঘরে আবর্জনা-ময়লাযুক্ত পানি ঢুকে পড়ার আশঙ্কা করছেন দুর্ভোগে পড়া কালিয়াকৈর উপজেলার মানুষ গুলো। এখান থেকে বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান চান ওই গ্রামবাসী।

এলাকাবাসী, ভুক্তভোগী পরিবার ও নন্দন পার্ক কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার আটাবহ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বড়ইছুটি গ্রামে প্রায় দেড়শতাধিক বাড়িতে প্রায় ৫ হাজার লোকের বসবাস। এসব বাসা-বাড়ির আবর্জনা-ময়লাযুক্ত পানি যুগের পর যুগ ধরে কৃষি জমির উপর দিয়ে প্রবাহিত হতো। কিন্তু কালিয়াকৈর উপজেলার বড়ইছুটি মৌজার ও পার্শবর্তী ঢাকার সাভার উপজেলার বাড়ইপাড়া ও কালিয়াকৈর উপজেলার বড়ইছুটি মৌজার প্রায় ৮০ বিঘা  কৃষি জমি ভরাট করে গড়ে উঠেছে নন্দন পার্ক নামে একটি বিনোদন কেন্দ্র। এর মধ্যে বেশির ভাগ জমিই বড়ইছুটি গ্রামের মানুষের। এছাড়াও ঢাকা জেলার অধীনে পরিচালিত ওই পার্কের বিরুদ্ধে চন্দ্রা-নবীনগর মহাসড়কের পাশে বনবিভাগের জমিও দখলের অভিযোগ রয়েছে। মহাসড়ক থেকে পার্কে প্রবেশের রাস্তা ও গাড়ী পার্কিং এরিয়াসহ বনবিভাগের কয়েক বিঘা জমি নন্দন পার্ক দখল করে রেখেছে।   ওই পার্কের পশ্চিম/ উত্তর পাশের সীমানা প্রাচীর ঘেষে রযেছে বড়ইছুটি গ্রাম। স্থানীয়দের সহযোগীতায় ওই পার্ক প্রতিষ্ঠা হলেও র্দীঘদিন ধরে পার্কের এক পাশ দিয়ে এসব বাসা-বাড়ির  পানি নিষ্কাশন হয়ে আসছিল। কিন্তু হঠাৎ করে ঈদের আগে ওই পানি নিষ্কাশনের মুখে উচু করে মাটির বাঁধ দেয় নন্দন পার্ক কর্তৃপক্ষ। ফলে ওই এলাকার পানিতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। একমাত্র রাস্তাসহ বাসা-বাড়িতে ঢুকে পড়ছে পানি। ওই পানি ঠেকাতে কেউ ঘরের পাশে দিয়েছে বাঁধ, আবার কেউ উঠানের পানি সেচের মাধ্যমে ফেলছেন বাইরে। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওই গ্রামবাসী। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েন শিশু ও রোগীরা। সৃষ্টি হচ্ছে মশা, মাছিসহ বিভিন্ন রোগ-বালাই। এর সমধান চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে নালিশ জানান ওই গ্রামবাসী। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে কোনো সমস্যার সমাধান করা হয়নি এখন পর্যন্ত । এর সমাধান চেয়ে বিক্ষোভ করেছে গ্রামবাসী। পার্কের বাধের কারনে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। দুর্ভোগে পোহাচ্ছেন ওই গ্রামের ইফাজাতুল উলুম ইসলামিয়া মাদ্রাসা, আফাজ উদ্দিন মোল্লা স্কুল এনড কলেজ, মোল্লাবাড়ি জামে মসজিদসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, মসুল্লি ও কারখানার শ্রমিকরা। তাদের ঘরে যেন নেই দুটি উৎসবের আমেজ, আছে চরম দুর্ভোগ আর হতাশা। নিজেদের উদ্যোগে মেশিন দিয়ে সেচে কোন রকমে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করলেও বৃষ্টি হলে ঘরে ঘরে আবর্জনা-ময়লাযুক্ত পানি ঢুকে পড়ার আশঙ্কা করছেন দুর্ভোগে পড়া মানুষ গুলো।

স্থানীয় জালাল উদ্দিন, সিলুম উদ্দিন, ফয়সাল সরকার, লিয়াকত সরকারসহ অনেকেই বলেন, এখানে আমাগো বাপ-দাদার বাড়ি। এ পর্যন্ত ময়লাযুক্ত পানি এ দিক দিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ করে নন্দন পার্কের বাঁধের কারণে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এছাড়াও আগে এ জমি নন্দন পার্কের ছিল না, পরে কিনে নিয়েছে। কিন্তু বিকল্প ব্যবস্থা না করে বাঁধ দেওয়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছি। দুটি উৎসবেও আমাদের মধ্যে কোনো আমেজ ছিলনা। ভাড়াটে মর্জিনা বেগম বলেন, আমি এখানে ৫ বছর ধরে ভাড়া থাকি। আগে এ রকম ময়লাযুক্ত পানির কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু পার্কের বাঁধের কারণে ময়লাযুক্ত পানির জলাবদ্ধতা হচ্ছে। ওই পানি আমাদের একটি ঘরেও ঢুকে যায়। ওই পানি সেচে কোন রকমে ঘরে থাকি। আবার ভরে গেলে আবার সেচে ফেলি। এছাড়া টয়লেট ও টিউবয়েলেও যেতে পারি না। দুর্গন্ধে খাওয়া-দাওয়াও করতে পারছি না। তবে সংশ্লিষ্টদের উদ্যোগে এই জলাবদ্ধতা থেকে বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান চান গ্রামবাসী।

এব্যাপারে নন্দন পার্কের চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত  খাইরুল ইসলাম জানান, আবর্জনা-ময়লাযুক্ত পানি পার্কে ঢুকে যাচ্ছে। এতে পার্কের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। এর সমাধানের জন্য দুই বছর ধরে চেষ্টা করতেছি। সেই লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীসহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছি। কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না। আমাদের জমি এভাবে কতদিন ফেলে রাখবো। তাই মাটি দিয়ে বাঁধ দিয়ে আমাদের জমি উন্নয়ন করতেছি। ইউএনও স্যার পরিদর্শন শেষে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন। আমরাও তাদের সাথে আছি।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাখাওয়াত হোসেন শাকিল মোল্লা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকার  সব ধরণের আবর্জনা ও ময়লাযুক্ত পানি ঐদিক দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে নন্দন পার্কের বাঁধের কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তবে পার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এ বিষয়ে অফিসিয়াল ভাবে বক্তব্য দিতে রাজি নন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহম্মেদ।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
lube
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat