ইরানের এমপিরা বন্ধ দরজার পেছনে বিতর্কিত হিজাব আইন পর্যালোচনা করার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। এর মাধ্যমে ইঙ্গিত পাওয়া যায়, এ বিষয়ে দেশটিতে কোনো প্রকাশ্য বিতর্ক হবে না।
দেশটিতে তথাকথিত হিজাব ও সতীত্ব বিল পাশ হলে হিজাব না পরা নারীদের জন্য নতুন কিছু শাস্তি আরোপ হবে। হিজাব সঠিকভাবে না পরার অভিযোগে অভিযুক্ত এক তরুণীর পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর কারণে কয়েক মাস ধরে চলা ব্যাপক বিক্ষোভের প্রতিক্রিয়ায় বিলটি তৈরি করা হয়েছিল।
ইরানের সংসদ এখন পরীক্ষামূলকভাবে বিলটিকে তিন থেকে পাঁচ বছরের জন্য অনুমোদন করতে পারে। তবে ইরানের সবচেয়ে শক্তিশালী আইনী সংস্থা কাউন্সিল অব গার্ডিয়ানসকে প্রথমে বিলটিতে অনুমোদন দিতে হবে। একবার আইনটি চালু হলে, সংসদ সদস্যরা আইনটি পরিবর্তন করতে সক্ষম হবেন। শেষ পর্যন্ত সেটি একটি স্থায়ী আইনে পরিণত হবে।
সংসদ সদস্যরা এ আইন প্রণয়নের অগ্রগতির জন্য ইরানের সংবিধানের ৮৫ অনুচ্ছেদের আহ্বান জানিয়েছেন, যা একটি সংসদীয় কমিটিকে প্রকাশ্য বিতর্ক ছাড়াই কোনো বিল পর্যালোচনা করার অনুমতি দেয়। পার্লামেন্টের একটি উন্মুক্ত অধিবেশনে অনুষ্ঠিত ভোটে ১৭৫ জন সদস্য এ পদক্ষেপের পক্ষে ভোট দিয়েছেন এবং ৪৯ জন এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন।
সংসদ সদস্য মোহাম্মদ রশিদি বলেছেন, কত দিনের জন্য এটি ‘পরীক্ষামূলকভাবে’ বাস্তবায়ন করা উচিত, তা নির্ধারণ করতে এমপিরা ভোট দেবেন।
তবে এমপি গোলামরেজা নুরি-কেজেলজেহ সতর্ক করে বলেছেন, এই পদক্ষেপটি ‘বিপদ’ নিয়ে আসবে, বিশেষ করে যেহেতু বিলের একটি বড় অংশজুড়ে রয়েছে হিজাব সম্পর্কিত লঙ্ঘনের ‘অপরাধীকরণ ও শাস্তি’।
হিজাব ইরানে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক প্রতীক। কঠোর হিজাব নিয়ম ভঙ্গ করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া মাহসা আমিনির (২২) পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর প্রতিবাদে অনেক নারী প্রকাশ্যে ড্রেস কোড আইন লঙ্ঘন করেছিল। আমিনির মৃত্যু ইরানে কয়েক মাস ধরে গণবিক্ষোভের জন্ম দেয়। যার ফলে দেশটির রাস্তায় নীতি পুলিশ ইউনিটের বিতর্কিত টহল সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। তবে গত মাসে তারা আবারও সক্রিয় হয়েছে।
নাগরিক অধিকার রোধ করে—এমন আইনের মাধ্যমে জোর খাটাতে ইরানের ৮৫ ধারা প্রয়োগের ঘটনা এটিই প্রথম নয়। ২০২১ সালের আগস্টে রাজনীতিবিদরা একটি কঠোর ইন্টারনেট বিল পর্যালোচনা করার জন্য এ ধারা ব্যবহার করার পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন। ওই সিদ্ধান্ত মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছিল।
সূত্র : বিবিসি
এ জাতীয় আরো খবর..