করোনাভাইরাস আর ‘গ্লোবাল হেলথ ইমারজেন্সি’ নেই- গেল মে মাসেই এমন ঘোষণা দিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তবে বিভিন্ন সাব-ভ্যারিয়েন্টের কারণে করোনার সংক্রমণ আবারও বাড়ছে বলে সতর্ক করে ডব্লিউএইচও এবার জানিয়েছে, ভাইরাসটির মিউটেশন অব্যাহত থাকবে অর্থাৎ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট আসবে। যার ফলে ‘মাঝে-মধ্যেই’ সংক্রমণ, হাসপাতালে ভর্তি রোগী এবং মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে।
ডব্লিউএইচও’র সাপ্তাহিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত ১০ জুলাই থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে প্রায় দেড় লাখ নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে, যা আগের ২৮ দিনের তুলনায় ৮০ শতাংশ বেশি।
তবে এই সময়ের মধ্যে করোনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৫৭ শতাংশ কমে আড়াই হাজারে দাঁড়িয়েছে বলেও জানায় জাতিসংঘের এই সংস্থাটি।
যদিও ডব্লিউএইচও সতর্ক করেছে যে, প্রতিবেদনে উল্লেখ করা সংখ্যা আক্রান্ত এবং মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যাকে প্রতিফলিত করে না। কারণ মহামারির শুরুর দিকের তুলনায় দেশগুলোতে এখন করোনা পরীক্ষা এবং পর্যবেক্ষণের হার অনেক কম।
এর মধ্যেই পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে করোনার সংক্রমণ বেড়েছে ১৩৭ শতাংশ।
নতুন ভ্যারিয়েন্টের থাবা
করোনার দাপট শেষ হয়ে গেলেও, ভাইরাসটির নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনই একটি ভ্যারিয়েন্ট ‘কোভিড এরিস’, যা সম্প্রতি যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে।
ডব্লিউএইচও’র মতে, বর্তমানে করোনার নবম ঢেউ চলছে। বিশ্বের ২৩৪টির মধ্যে ১০৭টি দেশেই (৪৬%) কোভিড ধরা পড়ছে নতুন করে। এর মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশও রয়েছে। তবে একটি ভ্যারিয়েন্টের ওপর সতর্ক নজর রাখছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, যার কারণ কয়েকটি দেশে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
নতুন এই ভ্যারিয়েন্টটির নাম ইজি.৫.১, যাকে ‘এরিস’ বলেও ডাকা হচ্ছে। এটি করোনাভাইরাসের দ্রুত সংক্রামক প্রজাতি ওমিক্রনের উপ-প্রজাতি। চলতি বছরের জুলাইতে যুক্তরাজ্যে প্রথম এর হদিস মেলে।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, এই ভ্যারিয়্যান্ট এরই মধ্যে ইউরোপের কয়েকটি দেশে ছড়িয়েছে। এছাড়া উত্তর আমেরিকা, এশিয়া ও জাপানে এরিস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে অনুমান বিশেষজ্ঞদের।
বাংলাদেশের পরিস্থিতি
শনিবার (১২ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, দেশে সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন আরও ১২ জন। এ সময় ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে একজন মারা গেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় ৬৪১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এতে শনাক্তের হার এক দশমিক ৮৭ শতাংশ। আগের দিন শুক্রবার (১১ আগস্ট) ২০ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়। এখন পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ১৭ শতাংশ।
নতুন করে ১২ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হওয়ায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৪৪ হাজার ৯৬৯ জনে। নতুন একজনসহ মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ৪৭৬ জনে দাঁড়িয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, করোনা আক্রান্তদের মধ্যে সবশেষ ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪২ জন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ ১২ হাজার ৬৬ জন। সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৩৯ শতাংশ।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যমতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।
এ জাতীয় আরো খবর..