রাশিমুল হক রিমন, আমতলী প্রতিনিধি:
কোরআন শরীফে ভুল আছে। আল্লাহ বলতে কিছুই নেই। হয়রত মুহাম্মদ (সঃ) ৫২ বছর বৃদ্ধ বয়সে এক শিশুকে বিয়ে করেছেন। তিনি দুশ্চরিত্রের মানুষ। এমন ভাবে আল্লাহ, নবী ও কোরআর শরীফ নিয়ে কটুক্তি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কলাগাছিয়া আব্দুল গনি দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষিকা (বাংলা) তাপসী রানী মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের পাঠদানকালে এমন কটুক্তি করেছেন। এ ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভ বিরাজ করছে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসী ওই শিক্ষকের শাস্তি দাবী করেছেন। এ ঘটনার বৃহস্পতিবার আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম ওই শিক্ষিকাকে কারন দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন।
জানাগেছে, ২০২১ সালে এনটিআরসির মাধ্যমে বাংলা বিষয়ের শিক্ষিকা হিসেবে তাপসী রানী আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের কলাগাছিয়া আব্দুল গনি দাখিল মাদ্রাসায় যোগদান করেন । যোগদানের পর থেকেই তিনি শ্রেনী কক্ষে ইসলাম ধর্মের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কটুক্তি করে আসছেন এমন অভিযোগ মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের। গত বুধবার মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেনীর ক্লাসে বাংলা বিষয়ের পাঠদান করছিলেন তিনি। ওই সময় ছাত্রদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তোমরা যে আল্লাহকে স্বরন কর, ওই আল্লাহ বলতে কিছু নেই। তোমাদের কোরআন শরীফে ভুল আছে। কোরআরতো মানুষের লেখা। তোমাদের নদী হয়রত মুহাম্মদ (সঃ) ৫২ বছর বয়সে ৯ বছরের এক শিশুকে বিয়ে করেছেন। তিনি একজন দুশ্চরিত্রের লোক। শিক্ষার্থীরা এমন কথা শুনে তার (শিক্ষিকা) প্রতিবাদ করেন। এ ঘটনা মাদ্রাসায় ছড়িয়ে পরছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী ক্ষোভে ফেটে পরেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ওই শিক্ষকের শাস্তি দাবী করেছেন তারা। এ ঘটনার বৃহস্পতিবার আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম ওই শিক্ষিকাকে কারন দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন।
মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেনীর শিক্ষার্থী নেছার উদ্দিন, মোঃ নাঈম, রিয়ামনি ও হাফসা বলেন, বাংলা বিষয়ের শিক্ষিকা তাপসী রানী শ্রেনী কক্ষে পাঠদান কালে প্রায়ই ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটাক্ষ করে। গত বুধবার বাংলা ক্লাস চলাকালিন সময় বলেন, দেখ কিভাবে মুসলমানরা মন্দিরগুলো ভাংচুর করতেছে। এ সময় ছাত্ররা বলেন, আপা মুসলমানরা কেন মন্দির ভাংচুর করবে? এ সময় তিনি ক্ষুব্দ হয়ে বলেন, তোমরা কি বুঝ? তোমাদের আল্লাহ বলতে কিছুই নেই, কোরআন শরীফে অনেক ভুল আছে। কোরআনতো মানুষের লেখা, তোমাদের নবী হয়রত মুহাম্মদ (স) ৫২ বছর বৃদ্ধ বয়সে ৯ বছরের এক শিশুকে বিয়ে করেছেন। তিনি একজন দুশ্চরিত্রের মানুষ। শিক্ষিকা তাপসী রানীর বিচার দাবী করের তারা।
মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক হারুন অর রশিদ বলেন, তাপসী রানী মাদ্রাসায় আসার পর থেকেই ইসলাম ধর্ম নিয়ে বেশ কয়েকবার কটুক্তি করেছেন। তখন মনে করেছি এমনি বলে। কিন্তু এখনতো দেখছি তিনি আল্লাহ, নবী ও কোরআন নিয়ে কটুক্তি করছেন। তার এমন ঘটনার শাস্তি দাবী করছি।
মাদ্রাসার সহ-সুপার মাওলানা মোঃ শহীদুল ইসলাম তার শাস্তি দাবী করে বলেন, তাকে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে কটুক্তি করতে বেশ কয়েকবার বারণ করা হয়েছে। কিন্তু তিনি তা মানছেন না।
শিক্ষিকা তাপসী রানী বলেন, আমার ভুল হয়েছে। আমি অসুস্থ তাই ক্লাসে গিয়ে আল্লাহ, নবী ও কোরআন সম্পর্কে কিছু ভুল কথা বলেছি। তিনি আরো বলেন, ধর্ম সম্পর্কে তেমন কিছুই যানিনা। না জেনে বলেছি। আমি সবার কাছে ক্ষমা চাই।
মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আবু জাফর বলেন, এ বিষয়ে শিক্ষিকা তাপসী রানী ভুল স্বীকার করেছেন। তারপরও মাদ্রাসা কমিটিকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন।
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। সন্তোষজনক জবাব না দিলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ জাতীয় আরো খবর..