এমরান মাহমুদ প্রত্যয়,আত্রাই(নওগাঁ)প্রতিনিধি:
নওগাঁর আত্রাইয়ে প্রায় বিলুপ্তির পথে কৃষি এবং কৃষকের ঐতিহ্যের প্রতীক ধানের গোলা। একটু জুতওয়ালা কৃষকও এখন আর গরু পালতে চান না। পুকুর থাকলে তা মাটি ভরাট করে নির্মাণ করা হচ্ছে বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এখন শহর চলে গেছে গ্রামে। অধিকাংশগ্রামে গড়ে উঠেছে বাজার ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। গোলাভর্তি ধান, গোয়ালভরা গরু, পুকুরভরা মাছ এই ছিল আবহমান বাংলার কাব্যিক অভিব্যক্তি। জনশ্রুতি রয়েছে, এক সময় সমাজের নেতৃত্ব নির্ভর করত এই ধানের গোলার ওপর হিসাব কষে। এসব এখন শুধুই কল্পকাহিনী।
এ বিষয়ে দমদমা গ্রামের প্রবীন ব্যক্তি আলহাজ্ব মো.আব্দুল মালেক মোল্লা বলেন, গোলায় অল্প জায়গায় অনেক ধান রাখা যেত। তাতে ধান শুকিয়ে রেখে দিলে অনেক দিন ভালো থাকে। তবে সেই ঐতিহ্য হারিয়েও কারোর আফসোস করতে দেখা যায় না। বরং ছেলে-বউ কিংবা মেয়ে-জামাই চাকুরি করে বলতেই বেশি সম্মানবোধ করেন গ্রামের সেই কৃষক।
আহসানগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো.মুঞ্জুরুল আলম বলেন, আমি দেখেছি ও বাপ-দাদাদের কাছে শুনেছি, বর্ষার সময়ে কৃষকরা ধান মাড়াই করে গোলায় কিংবা বড় আকারের মাটির তৈরি পাত্রে রাখা হতো ধান। তা শুকনো মৌসুমে বের করে শুকিয়ে বাজারজাতসহ নিজেদের জন্য রাখা হতো। এখন আর এগুলো দেখা যায় না। কালের বিবর্তনে তা হারিয়ে যাচ্ছে।
আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ প্রসেনজিৎ তালুকদার
বলেন, আগে চেয়ে কৃষকদের আবাদি ও বসবাসের জমি কমে যাওয়া, গোলা তৈরিতে জায়গা বেশি লাগা, গোলাকে বায়ুরোধী রাখতে না পারার জন্য পোকা ও রোগের আক্রমণের সম্ভনা দেখা দেয়া ধানের গোলা এখন গুদাম ঘরে পরিণত হয়েছে।
উপজেলার সচেতনমহল মনে করেন, আধুনিকতার ছোঁয়ায় ছুঁয়েছে কৃষক ও কৃষকের পরিবারকেও। হয়তো চাকচিক্য ও বিলাসী জীবন তাদের ভুলিয়ে দিয়েছে ঐতিহ্যের কথা।বর্তমান প্রজন্ম হয়তো জানবেই না কোন দিন ধান সংরক্ষণ করার জন্য ধানের গোলা নামে কোন জিনিস ছিল।
এ জাতীয় আরো খবর..