ফেনী সদর উপজেলাধীন ধর্মপুর ইউনিয়নের দেওয়ানগঞ্জ এলাকায় ময়লাস্তুপের পেছনের পরিত্যক্ত বিল থেকে আহনাফ আল মায়িন নাশিদ নামে ১০বছর বয়সী এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফেনী শহরের একাডেমীস্থ বিরিঞ্চি এলাকার মাইনউদ্দিন সোহাগের সন্তান নাশিদ ৮ ডিসেম্বর রবিবার বিকালে কোচিং ক্লাস শেষে বাড়ি ফেরার পথে অপহরণের শিকার হয়। এরপর অপহরণকারীরা ভিকটিম নাশিদের বাবার কাছে ফোন করে ১২লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে ।
ছেলের সন্ধান না পেয়ে অপহরণের পরদিন ৯ ডিসেম্বর ভিকটিমের বাবা সোহাগ বাদি হয়ে ফেনী মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করে।
এরপর যে মোবাইল থেকে চাঁদা দাবি করা হয় সেই মোবাইলের মালিককে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান গত ৫আগষ্ট তার মোবাইলটি হারিয়ে যায়, পুলিশ এ কথার সত্যতা পেয়ে তাকে ছেড়ে দেয়। ভিকটিমের প্রতিবেশী তুষার ভিকটিমের বাবাকে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিখোঁজ সংবাদ ছাপিয়ে খোঁজখবর নেয়ার পরামর্শ দেন এবং পরক্ষণে দাবিকৃত চাঁদা প্রদান করার পরামর্শ দেন। এরপর ভিকটিমের বাবার সন্দেহের তীর যায় তুষারের দিকে, তারপর ভিকটিমের বাবার সন্দেহের ভিত্তিতে স্থানীয় তুষার নামের সেই যুবককে পুলিশ আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয় স্বীকার করে জানান, গত ৮ ডিসেম্বর নাশিদ কোচিং শেষ করে ফেনীর একাডেমি রোড দিয়ে বাসায় যাওয়ার সময় তাকে ঘুরে বেড়ানোর কথা বলে সিএনজিতে করে ধর্মপুর রেললাইনে নিয়ে যায় আটককৃত তুষার ও ওয়াসিম। এরপর তুষার ও ওয়াসিম রিফাতকে ফোন করে জুস আনতে বলে এবং জুসে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে নাশিদকে খাওয়ায়। পরের দিন ৯ ডিসেম্বর নাশিদের বাবার কাছে ১২ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করলে নাশিদের বাবা পুলিশের শরণাপন্ন হয়, কিন্তু মুক্তিপনের টাকা না পেয়ে রাতেই অপহরণকারিরা নাশিদকে গলাচিপে হত্যা করে। লাশ গুম করার জন্য নাশিদের স্কুল ব্যাগে পাথর ভর্তি করে রেল লাইনের পাশে একটি বিলে ফেলে দেয় যাতে লাশ ভেসে উঠতে না পারে। আসামীদের তথ্য মতে পুলিশ আজ ১২ ডিসেম্বর ঘটনাস্থলে গিয়ে নাশিদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।
বিকালে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার মোঃ হাবিবুর রহমান উক্ত ঘটনা নিশ্চিত করে জানায়, আমরা ভিকটিমের লাশ উদ্ধার ও ঘটনায় জড়িত থাকা ৩ জন আসামীকে গ্রেপ্তার করেছি। এর বাহিরে আর কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে এবং পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।