ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁও শহরসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে শব্দদূষণ এক গুরুতর সমস্যায় পরিণত হয়েছে। যত্রতত্র মাইকিং, গাড়ির হাইড্রলিক হর্নের অতিরিক্ত শব্দ এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উচ্চস্বরে সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করে সৃষ্টি করা হচ্ছে অসহনীয় পরিবেশ। এই পরিস্থিতিতে শিশু, বয়োবৃদ্ধ এবং রোগাক্রান্ত ব্যক্তিরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পাশে অব্যাহত মাইকিং শিশুদের মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে। চিকিৎসক মোঃ জুয়েলের মতে, উচ্চমাত্রার শব্দদূষণ শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। পাশাপাশি বয়োবৃদ্ধদের জন্য এই পরিস্থিতি আরও গুরুতর। তাদের মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ এবং শ্রবণশক্তি ক্ষতির ঝুঁকি বাড়ছে।
ঠাকুরগাঁওয়ের বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন যে, প্রশাসনের নজরদারির অভাবেই এই ধরনের অনিয়ন্ত্রিত শব্দদূষণ চলছে। বিশেষ করে, বিবাহ অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক সভা এবং বিভিন্ন প্রচারমূলক কার্যক্রমে মাইকিংয়ের মাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে।
স্থানীয় পরিবেশ সংরক্ষণ সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শব্দদূষণ প্রতিরোধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৭ অনুযায়ী, নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি শব্দ উৎপন্ন করা দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও এর প্রয়োগে যথেষ্ট গাফিলতি রয়েছে।
প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের প্রত্যাশা করছেন, সাথে সাথে ঠাকুরগাঁওয়ের বাসিন্দারা দাবি করেছেন, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করা প্রয়োজন:
* যত্রতত্র মাইকিং বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনের কড়া নজরদারি বৃদ্ধি করা।
* হাইড্রলিক হর্ন ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
*শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের আশেপাশে 'নীরব অঞ্চল' ঘোষণা এবং তা কার্যকর করা দরকার।
*জনসচেতনতা বাড়াতে প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
শব্দদূষণ রোধে প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সচেতনতা একসঙ্গে কাজ করলে এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে দ্রুত কার্যক্রম শুরু না করলে এর প্রভাব দীর্ঘমেয়াদে মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলবে দাবি ঠাকুরগাঁওয়ের বিশেষজ্ঞ মহলের।
এ জাতীয় আরো খবর..