×
সদ্য প্রাপ্ত:
  • প্রকাশিত : ২০২৪-১১-২৯
  • ২৫ বার পঠিত
রিয়াজ, শেরপুর 
 শেরপুর  জেলার  সীমান্তের  ৩টি উপজেলায়   সক্রিয় হয়ে উঠেছে   মাদক পাচারকারীরা। 

প্রতিদিন ভারত থেকে পাচার হয়ে আসছে মাদকের চালান। মদ,গাঁজা হিরোইনসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক আসছে বাংলাদেশ।
 ফলে  শেরপুর জেলার সর্বত্র ব্যাপকহারে     
বেড়ে গেছে  মাদকের সরবরাহ ও  ব্যবহার। 

জেলার  সর্বত্রই এখন হাত বাড়ালেই মিলছে মদ গাঁজা,হিরোইন ও ইয়াবা । আর এসব মাদকের  প্রভাব পড়ছে  তরুন ও   যুবসমাজের উপর। তরুণ ও যুব সমাজ বেপরোয়াভাবে মাদকাসক্ত হয়ে পরছে। 

মাদক পাচারকারী সিন্ডিকেটের সদস্যরা সীমান্ত পথে ভারত থেকে দামি দামি  বিভিন্ন ব্যান্ডের  মাদক পাচার করে এনে এলাকায় সরবরাহের  পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করে আসছে।  

ফলে বর্তমানে জেলার যত্রতত্র হাত বাড়ালেই  মিলছে মাদকদ্রব্য । 

মাঝে মধ্যেই র‍্যাব, পুলিশ, বিজিবি,জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও সাধারন জনতার হাতেও  মাদক আটকের ঘটনা ঘটছে।

 জানা গেছে, ৫ আগষ্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা  সরকারের পতনের পর থেকে ভারত সীমান্ত ঘেষে অবস্থিত শেরপুরের নালিতাবাড়ি,ঝিনাইগাতী ও  শ্রীবরদী উপজেলার ৪০ কিলোমিটার  সীমান্ত পথে  মাদক পাচারকারী সিন্ডিকেটের সদস্যরা মাদক  পাচারে সক্রিয় হয়ে ওঠে। 

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সীমান্তে বিজিবি সদস্যদের অনেকটাই  নিষ্ক্রিয়তা। এটাকে পুঁজি করে  জেলার  সীমান্তবর্তী , সমশ্চুড়া, কালাপানি, বারোমাড়ি, হাতিপাগাড়ার,বুরুঙ্গা, চৌকিদারটিলা,নাকুগাঁও  হলদিগ্রাম,সন্ধ্যাকুড়া, রাংটিয়া,গোমড়া, রাংটিয়া,নকশী, গজনী ও তাওয়াকোচা,খাড়ামুড়া, কর্ণঝোড়াসহ  সীমান্তের বিভিন্ন চোরাই পথে মাদক পাচারে সক্রিয় হয়ে উঠেছে পাচারকারীরা। 

বন বিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা আব্দুল করিম জানান,  আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অতীতের ন্যায় পদচারণা না থাকায়  সীমান্ত এলাকায় দিনে রাতে অপরিচিত মানুষের আনাগোনা  ও বৃদ্ধি পেয়েছে। গভীর রাত পর্যন্ত অপরিচিত লোকজনের আনাগোনা লক্ষ্য করা যায় বলে জানান তিনি।  

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, সীমান্ত পথে গভীর রাত পর্যন্ত  অপরিচিত প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেলে রহস্যজনক আনাগোনা।

উপজেলার সীমান্তে রাস্তাও সড়ক উন্নয়ন হওয়ায় মাদক পাচারকারী সিন্ডিকেটের সদস্যরা প্রাইভেট কার, মোটরসাইকেল, সিএনজি ও ইজিবাইক দূরো পাল্লার বাস ও রাতের আঁধারে বালুর ট্রাকেও মাদকের চালান দেশের বিভিন্ন স্থানে অনায়াসে পাচার  করে  আসছে। 

 এছাড়া মাদক পাচারকারীরা মাদক পাচারে ব্যবহার করে আসছে কিশোর গ্যাংএর সদস্যদের। 

স্কুল ব্যাগে করে  কিশোর গ্যাং এর   সদস্যদের  মাদক পাচারে  ব্যবহার করা হচ্ছে। 

 বর্তমানে  জেলাসদরসহ গ্রামে গঞ্জে, হাটে বাজারে, পাড়া মহল্লায় ব্যাপকহারে বেড়ে গেছে কিশোর গ্যাং এর পদচারণা। কিশোর গ্যাং এর বেপরোয়া মোটরসাইকেলের দৌড়াত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে।  

জানা যায়,  মাদকের  ছড়াছড়ি ও সহজ লভ্যতার কারণে অতি সহজেই মাদক পৌঁছে যাচ্ছে কিশোর গ্যাংএর  হাতে। 

এতে অভিভাবকরা তাদের সন্তানের  ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছে। 

জানা গেছে, গত ২৯ অক্টোবর মঙ্গলবার রাতে স্কুলব্যাগে করে ১৯ বোতল ভারতীয় মদ পাচারকালে ঝিনাইগাতী  উপজেলা সদরের সিএনজি স্টেশন থেকে রাকিবুল ইসলাম(১৩) নামে এক কিশোরকে আটক করে স্থানীয় জনতা। 

একই রাতে ডাকাবর এলাকা থেকে ১১৯ বোতল ভারতীয় মদসহ ৩ জনকে আটক করে থানা পুলিশ। 



২৩ অক্টোবর বুধবার রাতে উপজেলা সদরের সিয়াম বাসকাউন্টার থেকে ২৪ বোতল ভারতীয় মদসহ ৩ জনকে  গ্রেপ্তার করে জনতা,    

উপজেলার নলকুড়া ইউনিয়নের রাংটিয়া গ্রামের কালুগাজির ছেলে মিষ্টার আলী (২৯), বাচ্চু মিয়ার ছেলে বাদল মিয়া (২০),চান মিয়ার ছেলে আয়নাল হক ( ২৫)। পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, বুধবার রাত ১১টার দিকে ওই ৩ মাদকপাচারকারি ঢাকায় পাচারের উদ্যেশে  ব্যাগে মাদক নিয়ে সিয়াম বাস কাউন্টারে টিকিট করতে যায়। 

এসময় স্থানীয়দের সন্দেহ হলে মাদক পাচারকারীরা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাদের আটক করে। 

খবর পেয়ে থানা পুলিশ ২৪ বোতল ভারতীয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদসহ তাদের গ্রেপ্তার করে।  হলদিগ্রাম সীমান্ত ফাঁড়ির বিজিবি সুত্রে জানা গেছে, সেপ্টেম্বর মাসে ৩টি অভিযানে ভারতীয়  ২০০বোতলেও বেশি  মদ  ও কম্বলসহ ২ জনকে আটক করে হলদিগ্রাম সীমান্ত ফাঁড়ির  বিজিবি সদস্যরা।  

নালিতাবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো,ছানোয়ার হোসেন বলেন ৬ নভেম্বর রাতে দাওধারা এলাকা থেকে প্রাইভেটকারে করে পাঁচার কালে ৭৭৪ বোতল ভারতীয় বিভিন্ন ব্যন্ডের মদসহ ২ চোরাকারবারিকে আটক করে নালিতাবাড়ী থানা পুলিশ। এছাড়া তিনি আরও বলেন ডিবি পুলিশের পৃথক অভিযানে ১৩ কেজি গাঁজা,৩৭০পিছ ইয়াবা, বিপুল পরিমাণে ফেনসিডিল ও ৫০ বোতল ভারতীয় মদ উদ্ধার করা হয়েছে।  

এরপর বারমাড়ি এলাকা থেকে ৩৬ বোতল ভারতীয় বিভিন্ন ব্যান্ডের মদ উদ্ধার করা হয়। শেরপুর ডিবি পুলিশ সুত্রে জানা গেছে,  ২৬ নভেম্বর রাতে নালিতাবাড়ী উপজেলার বারমারি এলাকা থেকে ৫০ বোতল ভারতীয় মদসহ ও ফেনসিডিলসহ ৩ জনকে আটক করে  ডিবি পুলিশ। 

শেরপুর জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো,ফয়সাল মাহমুদ    জানান, তারা  গত এক বছরে ৬৮৫টি অভিযান পরিচালনা করেছেন। 
এসব অভিযানে ২৮৬ জনকে গ্রেপ্তারসহ  নিয়মিত  ২৮টি ও ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে  ২৫৯,টি মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। 

বর্তমানে সীমান্ত এলাকাগুলোতে মাদক পাচারকারী সিন্ডিকেট সদস্যরা  সক্রিয় হওয়ায় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিজিবি সদস্যদের চোখের ঘুম হারাম হয়ে পরেছে।    

ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আল আমিন বলেন গত  মাসে তারা ৫টি অভিযানে ২ শতাধিক বোতল ভারতীয় মদসহ ৮ জনকে আটক করেছেন।  

এবিষয়ে মদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

শেরপুরের পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলামের সাথে মাদক পাঁচার সম্পর্কে কথা হলে তিনি বলেন,এলাকার যে কোন স্থানে মাদক পাচারের ঘটনার সন্ধান পেলে আমাকে জানাবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর..
lube
ফেসবুকে আমরা...
ক্যালেন্ডার...

Sun
Mon
Tue
Wed
Thu
Fri
Sat