মোঃ ইসমাইল হোসেন ( খুলনা )
খুলনায় শিক্ষার্থী ও ইসকন সদস্যদের পাল্টা-পাল্টি বিক্ষোভ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী রেজিস্টার সাবেক মহানগর ছাত্রলীগ নেতা বিমান সাহা ও ডেপুটি রেজিস্টার কৃষ্ণপদ দাশ দেশের সাম্প্রতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির জন্য আওয়ামী লীগ ও দলটির দোসরসহ ইসকনকে দায়ী করে খুলনায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। একই সময়ে ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ করেছে সনাতন জাগরনী মঞ্চ। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে দুই পক্ষের লোকজন অবস্থান নিলে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ইসকন অনুসারীদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে শিক্ষার্থীরা। এ সময় উষ্কানিমূলক কথার মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে শিক্ষার্থীরা ৩ জনকে পুলিশে সোপর্দ করে। অপরদিকে সনাতন জাগরনী মঞ্চ বেলা সাড়ে ১১টায় নগরীর পিকচার প্যালেস মোড়ে বিক্ষোভ ও মিছিল করে। পরে দুপুরে তারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়েও একইভাবে বিক্ষোভ করে। অপরদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শিববাড়ি মোড় ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন ছিল।
এছাড়া টহল দেয় সেনাবাহিনী। এদিকে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে খুলনায় উত্তাপ ছড়াতে মাঠে নেমেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই কর্মকর্তা, দুই সাংবাদিক ও কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা। ৫ আগস্ট পরবর্তী খুলনার আওয়ামী লীগের নেতারা গা ঢাকা দিলেও চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতারের বিষয় নিয়ে মাঠে সরব হয়েছেন কয়েকজন। কয়েকজন শীর্ষ নেতা পর্দার আড়ালে থেকে খুলনার শান্ত পরিস্থিতি উত্তপ্ত করতে কলকাঠি লাড়ছেন। পর্দার আড়ালে থেকে তারা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্টার কৃষ্ণপদ দাশ, সহকারী রেজিস্টার সাবেক মহানগর ছাত্রলীগ নেতা বিমান সাহা, দুইজন আওয়ামী পন্থি সাংবাদিক, মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা বীরেন্দ্রনাথ ঘোষ মাঠ পর্যায়ে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
সুত্র দাবি করেছেন সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের একজন শীর্ষ নেতা চলমান আন্দোলনে অর্থের যোগান দিচ্ছেন। এ ছাড়া গত কয়েকদিনে মহানগর আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতা খুলনায় ফিরেছেন। তারা নেপথ্যে থেকে সনাতন জোটের আন্দোলনের মুল কলকাঠি নাড়ছেন। সুত্র দাবী করেছেন দুইজন সাংবাদিকের মধ্যে একজন ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের উস্কানিমুলক পোস্ট দিয়ে আসছে। এদিকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে খুলনায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাগরণ মঞ্চ। সমাবেশ থেকে তারা অবিলম্বে জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নি:শর্ত মুক্তির দাবি করেছেন। তারা বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা কোনো রাজনৈতিক হাতিয়ার নয়। চিম্ময় কৃষ্ণকে গ্রেফতার মানুষের বাক স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার পরিপন্থি।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই কর্মকর্তার আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপার্চায প্রফেসর ড. রেজাউল করিম দৈনিক অভয়নগর কে বলেন বিশ্ববিদ্যালয় চলাকালিন সময়ে কর্মকর্তাদের বাহিরের কোন আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহনের সুযোগ নেই। আমাদের দুজন কর্মকর্তা ছুটি নিয়ে সরকার বিরোধী কর্মকান্ডে অংশগ্রহন করার বিষয়টি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এদিকে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, খুলনার পরিবেশ উত্তপ্ত করলে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। পুলিশ প্রশাসন সবদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখছেন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ জাতীয় আরো খবর..