ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৬ তলা ভবণ নির্মাণ কাজ ফেলে উধাও ঠিকাদার। নির্মাণ কাজের সময়সীমা’র প্রায় ৮ মাস পার হলেও কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ২৫ শতাংশ। যার ফলে ব্যাহত হচ্ছে চিকিৎসা সেবা; ভোগান্তিতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা।
জানা গেছে, ১০ কোটি টাকা বরাদ্দে নির্মিত হতে যাওয়া এ ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় গত ২০২২ সালের শেষের দিকে। শুরুর দিক থেকেই ছিলো অনিয়ম ও ধীরগতি’সহ নানা অভিযোগ। তবে গত (৫ই আগস্ট) আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর থেকে একেবারেই বন্ধ রয়েছে নির্মাণ কাজ।
যার ফলে ছোট একটি ভবনে রোগীদের শতভাগ সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে চিকিৎসকরা। পাশাপাশি জায়গা সঙ্কটের ফলে ফ্লোর কিংবা প্রায়ই কাঠের তৈরি বেঞ্চে’ই বাধ্য হয়ে দিন পার করছে নানা রোগে আক্রান্ত রোগীরা।
সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, প্রশাসনিক দু’তলা ভবণে বর্তমানে চলছে ৫০ শয্যা সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সকল কার্যক্রম। নীচতলা’য় বহিঃবিভাগ ও চিকিৎসকদের চেম্বার এবং জায়গা সঙ্কটের কারণে দোতলার মাত্র তিনটি রুমে রাখা হয় নানা রোগে আক্রান্ত ও দূর্ঘটনা’র শিকারে ভর্তি হওয়া নারী পুরুষ ও শিশুদের। সিঁড়ি বেয়ে দোতলায় উঠতেই চোখে পরে ডায়রিয়া ওয়ার্ড, খোলামেলা পরিবেশেই চলছে সংক্রামক এই রোগের চিকিৎসা। রোগীর চাপ বেড়ে গেলে পর্যাপ্ত সিট দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ। যার ফলে অতি কষ্টে ফ্লোর কিংবা বেঞ্চেই থাকতে হচ্ছে রোগীদের।
রোগীদের মতে, দ্রুত সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করা জরুরি। সরাইল উপজেলা’র কয়েক লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা আরও উন্নত করতে ভবনটি অতি গুরুত্বপূর্ণ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে ইচ্ছে থাকলেও জায়গা সঙ্কটের কারণে রোগীদের সাচ্ছন্দ্যে সেবা দিতে পারছেন না তারা।
এদিকে নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকার কারণে অযত্ন অবহেলায় নষ্ট হচ্ছে রড’সহ গুরুত্বপূর্ণ মালামাল।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সিভিল সার্জন ও তৎকালীন সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোঃ নোমান মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, গত তিন মাস যাবত নির্মাণ কাজ বন্ধ। ঠিকাদার ও আসছেনা। আমি এই বিষয়ে একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। জায়গার অভাবে কষ্ট করছে রোগীরা; ভবনটির কাজ শেষ হলে রোগীদের শতভাগ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত হবে।
নির্মাণ কাজ স্থগিতের বিষয়ে ঠিকাদার মোঃ জুয়েল সাংবাদিকদের বলেন, এসি সাহেবের নির্দেশে কাজ বন্ধ রেখেছি। সারাদেশে ২৪ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ বন্ধ রয়েছে। এটা আমার লসের কাজ, তারপরেও করব। প্রকল্পটি আবারও একনেকে পাঠানো হয়েছে, এবং চিফ ইঞ্জিনিয়ার দৌড়াদৌড়ি করছেন, অনুমোদন হলেই কাজ শুরু করব।