পরিতোষ বড়ুয়া, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম নগরের পরিবহন ব্যবস্থায় চরম বিশৃঙ্খলা দেখা যাচ্ছে নতুন ব্রিজ মোড়ে। সড়কের যেখানে-সেখানে গাড়ি পার্কিং এখন নিত্যদিনের ঘটনা। এটি যেন দেখার কেউ নেই বা বলার কেউ নেই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। যদিও সড়ক প্রশস্ত করা হয়েছে, কিন্তু এর সুফল জনগণ পাচ্ছে না। অনেক সড়কে একসঙ্গে তিন-চারটি গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে, যা যানজটের প্রধান কারণ। রাস্তায় গাড়ি পার্কিং না করার বিষয়ে কঠোর আইন প্রয়োগ করা হলে নগরীর যানজট কমানো সম্ভব। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কার্যকর ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি। বিশেষ করে ট্রাক ও মিনিবাসের যথেচ্ছ পার্কিং নিয়ন্ত্রণে আনা প্রয়োজন।
রাত-দিন একই ভোগান্তি
নতুন ব্রিজ মোড়ে দিনের পাশাপাশি রাতেও যানজট লেগে থাকে। ঢাকা-কক্সবাজার মহাসড়কের এই গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়। চট্টগ্রামের দক্ষিণাঞ্চল থেকে যাতায়াতকারী অসংখ্য বাস—যেমন ঈগল, হানিফ, শ্যামলী, শাহ আমিন এলাইন—সড়কের ওপর যত্রতত্র পার্কিং করার কারণে এই সমস্যা আরও তীব্র হয়ে উঠছে। প্রতিদিন কর্ণফুলী, আনোয়ারা, পটিয়া, বাঁশখালী, সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, দোহাজারী, কক্সবাজার ও বান্দরবানের লাখো মানুষ এই সড়কে চলাচল করেন।
টার্মিনালের অভাবে সড়ক দখল
নতুন ব্রিজ চত্বরের সিটি গার্ডেন ভবনের সামনেই বেশ কিছু পরিবহন কোম্পানির টিকিট কাউন্টার রয়েছে। নির্দিষ্ট পার্কিংয়ের অভাবে এসব কোম্পানি সড়ক দখল করে রাখে। বাসগুলো যাত্রী তোলার জন্য সড়কের ওপর থেমে থাকে, যার ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। অথচ বহদ্দারহাটে নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল থাকা সত্ত্বেও সড়কের ওপর বাসস্ট্যান্ড গড়ে তুলেছে পরিবহন মালিক সমিতি। রাজনৈতিক শক্তির আশ্রয়ে থাকা এসব সংগঠনের কার্যক্রমে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটছে।
অবৈধ পার্কিংয়ে সরকারের রাজস্ব হারাচ্ছে
অবৈধ পার্কিং থেকে সরকার প্রতিনিয়ত রাজস্ব হারাচ্ছে। যদিও ট্রাফিক পুলিশ নিয়মিত মামলা দিচ্ছে, তবুও সমস্যার স্থায়ী সমাধান আসছে না। দক্ষিণ ট্রাফিক বিভাগের ডিসি মাহবুব আলম খান জানিয়েছেন, “অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে যান চলাচলের গতি কমে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এই সমস্যা মোকাবিলায় নিয়মিত জরিমানা করা হচ্ছে।”
মালিকপক্ষের দাবি
অন্যদিকে পরিবহন মালিকদের দাবি, নির্ধারিত টার্মিনাল না থাকায় তারা বাধ্য হয়েই সড়কে বাস পার্কিং করছেন। তারা জানান, পর্যাপ্ত জায়গা পেলে সড়ক থেকে বাস সরিয়ে নিতে তারা আগ্রহী। রাস্তায় বাস রাখা তাদের জন্যও ক্ষতিকর বলে তারা স্বীকার করেন।
দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা প্রয়োজন
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যদি নিয়ম মেনে সব গাড়ি টার্মিনাল থেকে ছাড়া যায় এবং সড়কের ওপর অবৈধ বাসস্ট্যান্ডগুলো উচ্ছেদ করা হয়, তবে নতুন ব্রিজ মোড়ের যানজট অনেকটাই কমে যাবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আন্তরিক ভূমিকা এবং কঠোর আইন প্রয়োগের মাধ্যমেই এই সমস্যা সমাধান সম্ভব।
এ জাতীয় আরো খবর..