ইব্রাহিম মুকুট, ময়মনসিংহ:
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান এমপি বলেছেন, পুলিশ যেকোনো চ্যালেঞ্জ, জঙ্গি, সন্ত্রাস, দুর্যোগ, বিপর্যয় সব জায়গায় এগিয়ে যায়। করোনার সময় ছেলে তার মায়ের দাফন কাফন করতে যায়নি, সেখানে পুলিশ এগিয়ে গিয়ে দাফন কাফন করেছে। পুলিশ সবারই হৃদয় জয় করেছে। যে দায়িত্বটি পুলিশকে দেওয়া হয়েছে, সেটি সুন্দরভাবে পালন করেছে। পুলিশ নিরাপত্তা দিচ্ছে বলে আমরা শান্তিতে ঘুমাতে পাচ্ছি, ছেলে মেয়েরা স্কুলে যেতে পাছে, ব্যবসায়ীরা ব্যবসা বাণিজ্য করতে পারছে। পুলিশ জনগণকে, দেশকে ভালোবাসে। দেশের ইতিহাসকে রক্ষা করার জন্য তারা জাদুঘরও তৈরি করে, যেমনটা ময়মনসিংহেও করেছে।
শনিবার (১৩ জুলাই) ময়মনসিংহ পুলিশ লাইন্সে জেলা পুলিশ কর্তৃক আয়োজিত ‘বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহ’ ও জেলা পুলিশের প্রকল্প এর উদ্বোধন এবং ‘মুক্তিযুদ্ধে পুলিশঃ ময়মনসিংহ জেলা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়েরর কর্মকর্তাবৃন্দ, শিক্ষক, সুধীজন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোক অংশগ্রহণ করেন।
প্রধান অতিথি বলেন, ময়মনসিংহ এমন একটি জেলা শূধু বাংলার সংস্কৃতিকে ধরে রেখেছে, সেটা বললে কম হবে। ময়মনসিংহবাসী সবসময় ভালো চিন্তা করে, দেশের চিন্তা করে সে জন্যই তারা আওয়ামী লীগকে ভালোবাসে। ভোটের মাধ্যমে সবসময় ময়মনসিংহকে জিতিয়ে নিয়ে আসছে। ভাষা সৈনিক শামসুল হক, অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, গোলন্দাজসহ আরো অনেক নেতাদের নেতৃত্ব ছিল স্মরণীয়। যিনি আওয়ামী লীগকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসতেন বঙ্গবন্ধুও তাকে খুব ভালোবাসতেন। যারা জনপ্রিয় তারা নির্বাচনে জয় লাভ করেছেন। পুলিশের কোনো পক্ষ পাতিত্ব ছিলনা। বড় পুলিশ কর্মকর্তাদের অনেক আত্মীয় স্বজনও নির্বাচনে ফেল করেছে। এতে বুঝা যায় পুলিশ তার সঠিক দায়িত্বটি পালন করেছে। মানুষ যাকে চায় তারাই জয় লাভ করেছেন। মেয়র, উপজেলাসহ সকল নির্বাচনেই একটা অসাধারণ ভূমিকা রেখেছে পুলিশ। এধরনের জাদুঘর উপহার দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি।এর আগে মন্ত্রী, উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন এর মাধ্যমে জেলা পুলিশের ১১ টি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। প্রকল্পগুলো হলো- পুলিশ লাইন্সের ৬ তলা ভিত বিশিষ্ট পুলিশ ব্যারাক ভবনের ২য়-৬ষ্ঠ তলা পর্যন্ত ঊর্ধমুখী সম্প্রসারণ কাজ, ফুলবাড়িয়া থানা ভবনের ২য় তলার আংশিকসহ ৩য় ও ৪র্থ তলার নির্মাণ কাজ, হালুয়াঘাট থানা ভবনের ২য় তলার আংশিকসহ ৩য় ও ৪র্থ তলার নির্মাণ কাজ, গৌরীপুর থানা ভবনের ২য় তলার আংশিকসহ ৩য় ও ৪র্থ তলার নির্মাণ কাজ, ২নং শহর পুলিশ ফাঁড়ি ভবনের ৪র্থ-৬ষ্ঠ তলার নির্মাণ কাজ, ফুলপুর থানা ভবনের ২য় তলার আংশিকসহ ৩য় ও ৪র্থ তলার নির্মাণ কাজ, ১নং শহর পুলিশ ফাঁড়ি ভবনের ৩য় ও ৪র্থ তলার নির্মাণ কাজ, পাগলা থানায় ৬ তলা ভিতের ১ তলা ইনচার্জ অফিসার্স কোয়ার্টার ও ৬ তলা ভিতের ৩লা ডরমিটরি ভবন নির্মাণ, পাগলা থানা ভবনের ২য় তলার আংশিক এবং ৩য় ও ৪র্থ তলার নির্মাণের অতিরিক্ত কাজ, পাগলা থানাধীন পাঁচবাগ তদন্ত কেন্দ্রের কার্যক্রম । ‘বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, ময়মনসিংহ’ এর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন শেষে জাদুঘরটি ঘুরে দেখেন। ‘মুক্তিযুদ্ধে পুলিশঃ ময়মনসিংহ জেলা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন।ময়মনসিংহ রেঞ্জ ডিআইজি মো: শাহ আবিদ হোসেন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সুধী সমাবেশে শরীফ আহমেদ এমপি,মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহিত উর রহমান শান্ত এমপি, ফাহমী গোলন্দাজ বাবেল এমপি, কৃষিবিদ ডা. নজরুল ইসলাম এমপি, মাহমুদুল হাসান সুমন এমপি, এ বি এম আনিছুজ্জামান এমপি, মোহাম্মদ আব্দুল ওয়াহেদ এমপি, মো: আ: মালেক সরকার এমপি, মাহমুদুল হক সায়েম এমপি, বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: ইকরামুল হক টিটু, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. এমদাদুল হক চৌধুরী, জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান,জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এহ্তেশামূল আলম, বীর মুক্তিযোদ্ধা ম. হামিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রবসহ শতাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধগণ, সাবেক সংসদ সদস্যবৃন্দ, কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। বিভাগীয় আনসার, র্যাব, এনএসআই, ডিজিএফআই, বিজিবি, টুরিস্ট পুলিশ, শিল্পাঞ্চল পুলিশসহ আরো গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভূঞা বিপিএম পিপিএম যার ব্যতিক্রমী এবং দূরদর্শী চিন্তার ফসল ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ লাইন্সের অভ্যন্তরে পুরাতন পুলিশ হাসপাতাল ভবনে নির্মিত হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
এ জাতীয় আরো খবর..