বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধিঃ ঘূর্ণিঝড় রিমালে লন্ডভন্ড হয়েছে উপকূলীয় জেলা বরগুনার বেতাগী উপজেলা। এতে ঘুমহীন রাত কেটেছে উপকূলের বাসিন্দাদের। ভারি বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসলের ক্ষেত, উপড়ে গেছে বহু গাছ। ৪৮ ঘন্টারও বেশি সময় যাবৎ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে পুরো উপজেলা। রোববার দুপুর থেকে সোমবার সারাদিন জোয়ারের পানিতে ৩৫ কিলোমটার বেড়িবাঁধ ভেঙে কয়েকশ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলায় প্রায় পাঁচ শতাধিক কাঁচাবাড়ি ঘর বিধ্বস্তসহ উপড়ে পড়া গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে প্রায় অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিষখালী নদীর অস্বাভাবিক জোয়ারে গ্রামর্ধন, বলইবুনিয়া, কাউনিয়া, বদনিখালী, কাঠালতলী, চরখালী, কালিকাবড়ি, আলিয়াবাদসহ বিভিন্ন এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ফলে এসব এলাকার মৎস্য খামারের অন্তত ৪০টি মাছের ঘের, ২৫০টি পুকুর পানির নিচে তলিয়ে আছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার বিকেল থেকে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি শুরু হলে নদীতীরের মানুষ আতংকে পার্শ্ববর্তী সাইক্লোন শেল্টারে সন্ধ্যার পর থেকে ভিড় করেছে। এ সময় নদীগুলোতে জোয়ারের পানি বাড়তে থাকে। সকালে জোয়ারের পানির চাপে বেতাগী উপজেলার কমপক্ষে ১২টি স্থানে জোয়ারের পানিতে বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। এতে গ্রামের কয়েক হাজার কাঁচা ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জোয়রের পানি পাকা সড়ক উপচে লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় বেশ কিছু সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তলিয়ে যায় ফসলের ক্ষেত।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানজিলা আহমেদ বলেন, রিমালে উপজেলায় পাঁচ সহস্রাধিক কৃষক অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হয়েছেন। এতে অন্তত ৫০০ হেক্টর জমির ফসল জলাবদ্ধতায় ডুবে গেছে। এর মধ্যে ৩ হাজার হেক্টর আউশের বিজতলাসহ, পান, সুপারি ফল, কলা বাগান ও শাকসবজি ক্ষেতসহ আরও ৫০০ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কত টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে তা নিরূপন করা যায়নি।
বেতাগী উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও ভরপ্রাপ্ত ইউএনও বিপুল শিকদার ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি গ্রাম পরিদর্শন করে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে কাঁচা ঘর, রবিশস্য, সড়ক ও বেড়িবাঁধের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভাঙ্গা বেড়িবাঁধ দ্রুত মেরামতের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে কথা হয়েছে।
এ জাতীয় আরো খবর..