ইব্রাহিম মুকুট ময়মনসিংহ: "অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং নজরুল"এই প্রতিপাদ্য সামনে নিয়ে ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল দরিরামপুরে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম এর ১২৫ তম জন্মবার্ষিকীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩মে) ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার নজরুল অডিটোরিয়ামে ৩ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান উদ্বোধনী করা হয়।ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন৷ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো: মহিববুর রহমান এমপি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শরীফ আহমেদ এমপি , ফাহমি গোলন্দাজ (বাবেল)এমপি,এ বি এম আনিসুজ্জামান এমপি, , নিলুফার আনজুম পপি এমপি, এম এ মোহাইমেনুর রশিদ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ময়মনসিংহ প্রমুখ। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাসহ প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যম কর্মীবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাঙালির মননে কাজী নজরুল ইসলামের মর্যাদা ও গুরুত্ব অপরিসীম। তার কবিতা ও গানের জনপ্রিতা বাংলাভাষী পাঠকের মধ্যে তুঙ্গস্পর্শী। তার বিদ্রোহী অভিব্যক্তি ধর্ম ও রাজনীতির নামে অনমনীয় গোঁড়ামি পর্যন্ত প্রসারিত। জাতীয় কবি ছিলেন বিদ্রোহী বাঙালির প্রতিচ্ছবি।তিনি আরো বলেন, নজরুল বাংলা ভাষা ও সাহিত্যকে নানাদিক দিয়ে করেছেন সমৃদ্ধ এবং মজবুত। কলম বন্দুকের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী হতে পারে তা তিনি প্রমাণ করেছেন ক্ষুড়াধার আগুনঝরা লেখনীর দ্বারা। তার অসাম্প্রদায়িক জীবনদর্শ অনুসরণ করে একটি অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন ,শান্তিপূর্ণ, সুখী- সমৃদ্ধ আধুনিক বাংলাদেশ নির্মাণ হোক এটাই আমাদের প্রত্যাশা।এ সময় প্রধান অতিথি ত্রিশাল উপজেলার ৫ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বই উপহার দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য শরীফ আহমেদ বলেন, কবি নজরুল ইসলামের কবিতা গুলো একদিকে যেমন প্রাণচঞ্চল, অন্যদিকে তার বিদ্রোহ চেতনার স্বাক্ষর। তার সংগ্রামী জীবনের গল্প মানবজীবনে বেঁচে থাকার লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা যোগায়।
সংসদ সদস্য ফাহমি গোলন্দাজ (বাবেল) বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন বাংলা সাহিত্যের এক অসাধারণ প্রতিভার নাম। ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার ,সাম্প্রদায়িকতা ও পরাধীনতার বিরুদ্ধে কাজী নজরুল ইসলামের অবস্থান ছিল বলে তাকে 'বিদ্রোহী' কবি হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছিল। নজরুলের কবিতার মূল বিষবস্তু ছিল মানুষের উপর মানুষের অত্যাচার,সামাজিক অনাচার ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার প্রতিবাদ। তার সব সাহিত্য কর্মে সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা ছিল সুস্পষ্ট।
সমাপনী বক্তব্যে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক বলেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের সাহিত্য সমৃদ্ধে রেখেছেন অগ্রণী ভূমিকা। একই সাথে তিনি আমাদের সাহিত্যের দিকপাল। তিনি আজীবন অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন ,শুষনমুক্ত ও শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা স্বপ্ন দেখেছেন, দেখিয়েছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে কবির দেখানো অসাম্প্রদায়িক ও বৈষম্যহীন চেতনার উপর ভিত্তি করে আগামী প্রজন্ম কাজ করে যাবে এটাই প্রত্যাশা।
অনুষ্ঠানে স্বাগত ও স্মারক বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাহফুজুল আলম মাসুম ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আশিক সরকার।
এছাড়াও সকালে কবির ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথিগণ ত্রিশালে বই মেলার উদ্বোধন করেন।
এ জাতীয় আরো খবর..