মোঃ নাহিদ সিকদার, আশুগঞ্জ: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে মসজিদের ভেতরে নামাজের মাসআলা জানা নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে দু-পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চরচারতলা মোল্লা বাড়ি ও কিছকি বাড়ি গোষ্ঠীর মধ্যে এ সংঘর্ষ ঘটে। আহতদের স্থানীয় বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, চরচারতলা উত্তরপাড়া জামে মসজিদে মোল্লা বাড়ির নেতা মাওলানা মহিউদ্দিন মোল্লা ইমামতি করেন। শুক্রবার ইশা ও তারাবির নামাজ শেষে মসজিদের মুসল্লি কিছকি বাড়ির ঠিকাদার শফিকুর রহমান ইমাম সাহেবের অনুমতি নিয়ে নামাজের কিছু মাসআলা নিয়ে মুসল্লিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এতে মুসল্লিদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। পরে নামাজ শেষে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে পুলিশ সহ অন্তত ১৫জন আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষে হামলার শিকার হয়েছে মসজিদও। ভেঙে ফেলা হয়েছে মসজিদের দরজা-জানালার কাচ।
এ ব্যাপারে মসজিদের ইমাম মাওলানা মহিউদ্দিন মোল্লা বলেন, তারাবি নামাজ শেষে ঠিকাদার শফিকুর রহমান দু-মিনিট কথা বলতে আমার অনুমতি চাইলে আমি তাকে অনুমতি দেই। তিনি তার বক্তৃতায় এ মসজিদের কোন মুসল্লিরই নামাজ হয় না বলে ফতুয়া দিলে উপস্থিত মুসল্লিরা এর প্রতিবাদ করে। এতে শফিকুল ইসলামের বাড়ির লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে মসজিদসহ আমাদের বাড়ির লোকজনের ওপর হামলা করে। এসময় আমাদের বাড়ির ৫ জন গুরুতর আহত হয়।
তবে মসজিদের মুসল্লি ঠিকাদার শফিকুর রহমান বলেন, আমি তারাবিহ নামাজ শেষে নিয়ম অনুযায়ী অনুমতি নিয়ে নামাজের কিছু গুরত্বপূর্ণ মাসআলার বিষয়ে ইমাম সাহেব ও মুসল্লিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করি। নামাজের প্রয়োজনীয় তাসবিহ পাঠের জন্য রুকু, সেজদা ও দাড়ানোতে পর্যাপ্ত সময় দান ও কাতার সোজা করা করার গুরুত্ব নিয়ে এসব বিষয়ে খেয়াল দিতে ইমাম সাহেবকে অনুরোধ করি। এতে ইমাম সাহেব ও তার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে মসজিদের ভিতরেই আমাকে নাজেহাল করে। পরে তারা আমার ও আমার এক ভাইয়ের বিল্ডিং এ অতর্কিত হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। আমার ব্যবহারের গাড়ি ও দুটি মোটর সাইকেল ভাংচুর করে। এসময় আমদের বাড়ির ৮ জন গুরুতর আহত হয়।
স্থানীয় লোকজন জানায়, চরচারতলা উত্তরপাড়া জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মহিউদ্দিন মোল্লা স্থানীয় একটি আলীম মাদরাসার অধ্যক্ষ। মাদারাসাটির নামকরণ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছে।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ নাহিদ আহম্মেদ জানান, সংঘর্ষ বাধার সাথে সাথেই পুলিশ উপস্থিত হয়ে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণ আনতে পুলিশ প্রায় ৩৫ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে। এসময় অফিসারসহ ৩ জন পুলিশ আহত হয়েছে। ঘটনার পর থেকে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
এ জাতীয় আরো খবর..