আফনান চৌধুরী, বাঁশখালী: চট্টগ্রামের নকলস্বর্ণ ব্যবসায়ী বাঁশখালী ছনুয়ার সেই কুখ্যাত ডন মানিক ওরফে স্বর্ণ মানিক পুলিশের জালে আটকা পড়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামী আহমদ কবির মানিক ওরফে স্বর্ণ মানিক (৩৫) উপজেলার ছনুয়া ইউপির ৩ নং ওয়ার্ডের মৃত ছৈয়দ আহমদ প্রঃ কালা মিয়া ডাকাতের পুত্র। বাঁশখালীতে ছনুয়ার ডন মানিক হিসেবেও সে বেশ পরিচিত।
ডাকাতিসহ বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্ট আসামী ডাকাত মানিক ওরফে স্বর্ণ মানিক উপজেলার ছনুয়া ইউপির ৩ নং ওয়ার্ড এলাকায় আত্মগোপনে রয়েছে মর্মে খবর পেয়ে ১৮ মার্চ সোমবার ভোর সাড়ে ৪ টায় বাঁশখালী থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে, পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামী মানিক পুলিশকে লক্ষ্য করে আক্রমণ করে ৭ পুলিশ সদস্যকে আঘাত করে ঘরের টিনের উপর দিয়ে লাফিয়ে পালানোর সময় টিনের আঘাত তার গোপানাঙ্গ কেটে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশ আঘাত প্রাপ্ত হয়। ঘটনাস্থল থেকে আহতাবস্থায় গ্রেফতারের পর তাকে চমেক হাসপাতালের ইউরোলজী ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে পুলিশ সুত্রে জানা গেছে। আহত ৭ পুলিশ সদস্যের মধ্যে ২ জনের অবস্থা গুরুতর।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, আহমদ কবির মানিক (ওরফে স্বর্ণ মানিক), বাক্কা ডাকাত, নুরুল কাদের ওরফে স্বর্ণ কাদের,কামাল উদ্দিন ওরফে ডাকাত কামাল, মিজান ওরফে মিজান ডাকাতসহ ১৫-২০ জনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন যাবৎ চট্টগ্রাম শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় নকল স্বর্ণ ব্যাবসা কার্যক্রম চালিয়ে আসছে, এতে হঠাৎ হাজার কোটি টাকার মালিক হওয়ার কথা বলে নকল স্বর্ণের মূর্তি ও বারের লোভ দেখিয়ে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এরই মধ্যে গত কিছুদিন পূর্বে চট্টগ্রাম আগ্রাবাদের এক গরু খামারীকে গরু বিক্রির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছনুয়া এলাকায় নিয়ে যায়,সেখানে নিয়ে কামাল ডাকাত ও মিজান ডাকাতসহ চক্র সদস্যরা ওই খামারীর কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়ার পর ঘাড়ে অস্ত্র দিয়ে ছবি তোলে ছেড়ে দেন। তবে ওইসব ডাকাত চক্র সদস্যরা দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে একটি গ্রুপ থাকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এর ছোট ভাই মোহাম্মদ আলমগীরের ছত্রছায়া পরিচালিত হয়। অপর গ্রুপটি তার ছোট ভাই আব্দুল আজিজ টিপুর নির্দেশে পরিচালিত হয় বলে একাধিক সুত্রে জানা গেছে। এবিষয়ে ভুক্তভোগী খামারীর একটি ভিডিও বক্তব্য প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। এছাড়াও সাতকানিয়ার গারাংগিয়া এলাকার এক লোক বাঁশখালী জলদি লফিত মার্কেটের ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া, আনোয়ার বটতলী এলাকায় দুইজনের কাজনের কাছ থেকে ওই ডাকাত চক্র স্বর্ণের লোভ দেখিয়ে ১৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে, পরে মারধর করে তাদের গাড়ে অস্ত্র দিয়ে ছবি তোলে ছেড়ে দিয়েছে মর্মেও জানা যায়।
গ্রেফতার ও উদ্ধার সংক্রান্তে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি তোফায়েল আহমেদ বলেন, ওয়ারেন্টভুক্ত ডাকাত কবির মানিক (প্রকাশ স্বর্ণ মানিক)কে গ্রেফতার করতে গেলে সেই থানা পুলিশকে আক্রমণ করে টিনের ছাউনির উপর থেকে লাফদিয়ে পালানোর সময় টিনের আঘাতে তার গোপনাঙ্গ কেটে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত প্রাপ্ত হয়। বর্তমানে সে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। ধৃত আসামীর বিরুদ্ধে থানায় ১৬ থেকে ১৭ টি মামলা রয়েছে, পুলিশ তার কাছ থেকে একটি বিদেশী পিস্তল, দুটি দেশী এলজি, ৪ রাউন্ড কার্তুজ, ১ টি লম্বা কিরিচ, ১টি ছুরি উদ্ধার করা হয়, তার বিরুদ্ধে পুলিশকে হামলা ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার সংক্রান্তসহ দুইটি নতুন মামলা রুজু করার কথা জানান তিনি।
এ জাতীয় আরো খবর..