শ্রীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুরে প্রকাশে ছুরি আঘাতে আবদুল্লাহ (২৬)নামে একজনকে হত্যার অভিযোগে প্রধান আসামি শহিদুল ইসলাম @ শহিদ(৪৫) ও তার ছেলে এছানুল হক কে(২৪) গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১)।
বুধবার (১৩ মার্চ) রাতে রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখানের আব্দুল্লাহপুর আটিপাড়ার সুজনের বাড়ি হতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার মো.শহিদুল ইসলাম গাজীপুরের শ্রীপুরে গাজীপুর ইউনিয়নের বাঁশবাড়ী এলাকার মৃত কাশেম আলী এর ছেলে ও এছানুল হক তার ছেলে।
র্যাব-১ সহকারী পরিচালক (মিডিয়া অফিসার) সহকারী পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন,ভিকটিম আবদুল্লাহ ও আসামিদের মধ্যে জমি-জমা সংক্রান্ত সমস্যা, পাওনা টাকা না দেওয়া এবং সর্বশেষ চায়ের দোকানের হাতাহাতির ঘটনায় মো. শহিদুল ইসলাম এর ভিতরে প্রচন্ড ক্রোধ এবং প্রতিশোধ পরায়ণতার সৃষ্টি করে। ফলশ্রুতিতে আসামিদ্বয় ভিকটিমকে হত্যা করার পরিকল্পনা করা সহ সুযোগ খুঁজতে থাকে।
র্যাব বলেন,গত ০৯ মার্চ বিকাল সাড়ে চারটায় সময় ভিকটিম আব্দুল্লাহ তাহার নিজ মোটরসাইকেল যোগে বাঁশবাড়ী বাজারের পূর্ব পাশে মেধা বিকাশ প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে যায়। ভিকটিম অনুষ্ঠান চলাকালীন অনুষ্ঠান স্থলের পশ্চিম পাশে জনৈক সালাম এর চায়ের দোকানে বসিয়া চা খাইতেছিলো। এ সময়ে বিরোধের জের ধরে আসামি মো. শহিদুল ইসলাম @ শহিদ(৪৫) ভিকটিম আব্দুল্লাহ(২৬) এর সহিত গায়ে পড়ে ঝগড়ার সৃষ্টি করলে দুই জনের মধ্যে মারামারি ও হাতাহাতি হয় এবং উপস্থিত স্থানীয় লোকজন এটা মিটমাট করে দেয়।
পরে ভিকটিম আব্দুল্লাহ(২৬) কনসার্টের ভিতরে চলে যায়।কিছুক্ষণ পর পূর্ব পরিকল্পিতভাবে আব্দুল্লাহ কে ডেকে ওই এলাকার বাঁশবাড়ী বাজারের পূর্বপাশে জনৈক সুরুজ মিয়ার সেমিপাকা টিনসেড ভবনের পিছনে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে পৌছামাত্র পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা শহিদুল ইসলাম এর হাতে থাকা ধারালো ছোরা দিয়ে আবদুল্লাহর বাম পাজরে স্বজোরে পার মারিয়া গুরুতর জখম করে এবং সহযোগী আসামী এছানুল হক(২৪) ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চত করার জন্য বাম পাজরে পার মারিয়া গুরুতর জখম করে। ভিকটিম গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটাইয়া পড়ে থাকা অবস্থায় অন্যান্য আসামিরা ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল, ঘুষি, লাথি মারিয়া আনন্দ উল্লাস করে। ভিকটিমের আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন আগাইয়া আসলে আসামিগণ দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে আত্মগোপনে চলে যায়।
স্থানীয় লোকজন ভিকটিমকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে সিএনজিযোগে শ্রীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার ভিকটিমকে মৃত ঘোষণা করে। পরবর্তীতে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানা পুলিশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাজির হয়ে ভিকটিমের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রেরণ করেন।
ওই এলাকার ভুক্তভোগীর পিতা সাহাদত আলী(৫৫) বাদী হয়ে গত ১০ মার্চ শ্রীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যাহা গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানার মামলা নং-১৮/১০৯,।
তিনি আরও বলেন,ঘটনাটির পর বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয় এবং এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।র্যাব-১ অপরাধীদের গ্রেফতার করতে ছায়া তদন্ত শুরু ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। গতকাল বুধবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তি তে র্যাব-১ এর দল রাজধানী ঢাকার দক্ষিণখানের আব্দুল্লাহপুর আটিপাড়ার সুজনের বাড়ি হতে তাদের গ্রেফতার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রধান আসামি মো. শহিদুল ইসলাম @ শহিদ(৪৫) ও অন্যমত সহযোগী এছানুল হক(২৪)দ্বয় হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
আসামিদের জেলা শ্রীপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অন্য আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে বলেও জানিয়েছেন র্যাবের এই কর্মকর্তা।
এ জাতীয় আরো খবর..