ঝিকরগাছা প্রতিনিধি, যশোর: আমাদের সমাজে মাদকের ভয়াবহতা ক্যান্সারের মতো। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ক্যান্সারের থেকেও মাদকের ভয়াবহতা বেশি। মাদকে আসক্ত হয়ে সন্তানেরা বাবা-মাকে হত্যা করছে। আবার মাদকাসক্ত বাবা-মায়েরা সন্তানদের কথা চিন্তা না করে পরিবারকে ধ্বংস করে দিচ্ছেন। একটা পরিবারের একজন সদস্য যখন মাদকে আসক্ত হয়, তখন তার পুরো পরিবার ধ্বংস হয়ে যায়। যার উদাহরণ বর্তমান আমাদের সমাজের অনেক পরিবার। মাদকের নেশা দ্রব্যের কারণে সমাজে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে এবং এই মাদককে কেন্দ্র করে ক্রমাগতই বেড়ে চলে অন্যায়-অত্যাচার। আর এই পরিস্থিতিকে সামাল দিতে যশোরের ঝিকরগাছা থানা পুলিশের চৌকস অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামাল হোসেন ভূঁইয়া আমাদের পাশে আছে বলে মনোউক্তি প্রেষণ করেছেন।
থানাতে যোগদানের পর হতে উপজেলার মধ্যে কোন মাদক নির্মূলে মাদকের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের সাথে আপোষহীন ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষনা করে সর্বদাই মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়াও তিনি বর্তমানে ফুলের রাজধানী খ্যাতো উপজেলার পাশ্ববর্তী গদখালী, পানিসারা ও নাভারণ এই তিন ইউনিয়নের কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের দ্বারা ক্ষতি সাধিত কার্যক্রম রুখে দিয়ে তিনি ভ্রমণ পিপাসুদের পাশে দাঁড়িয়ে মহত্বের পরিচয় দিয়েছেন। ঝিকরগাছা
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামাল হোসেন ভূঁইয়া সাংবাকর্মীদের সাথে একান্ত আলাপচারিতাকালে সোমবার বিকালে তিনি বলেন, মাদক নির্মূলে ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমি সর্বদা আপনাদের পাশে আছি এবং ভবিষতেও থাকবো। একটি জাতিকে ধ্বংস করতে মাদকই যথেষ্ট। আজকের এই অবস্থানটি একদিনে আসেনি। মাদক নিলে মস্তিষ্কে আনন্দের কোষ আন্দোলিত হয়। যারা মাদক নেন তাদের জিজ্ঞাসা করলে একটি লোকও বলবে না যে মাদক ভালো লেগেছে। হতাশা আর অবসাদ ঘিরে রাখা তাদের জীবন। তারা বলবে, ‘স্যার/ভাই আমি তো বাঁচব না! আমাকে মাদক খেতেই হবে।’ তারা মাদক গ্রহণের ক্ষেত্রে এ ধরনের ভাষা ব্যবহার করে থাকে। মাদকাসক্তরা জেনেশুনেই বিষপান করছে। কারণ আমাদের সমাজের অবক্ষয়। ধনী-গরিবের মধ্যে বৈষম্য, বেকারত্ব আর হতাশা। কেউ ভালো খাচ্ছে আর কেউ খেতে পাচ্ছে না। এ ধরনের সামাজিক বৈষম্য থেকেই আমাদের সমাজের অনেকে মাদকের দিকে ঝুঁকছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ও মাননীয় জেলা পুলিশ সুপারের সার্বিক সহযোগিতা আমরা মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। যশোর জেলাকে মাদক নিমূলে জিরো টলারেন্স আনতে ক্রমাগতই কাজ করে চলেছি। মাদক কারবারি যেই হোক না কেন কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। মাদকের সাথে সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যাক্তি বা গোষ্ঠীর সাথে আপোষ নয়। মাদকের বিরুদ্ধে আমিও যুদ্ধ ঘোষণা করছি । মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা বাড়িয়ে আইনশৃংখলা রক্ষায় আমি আপনাদের সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
তিনি আরও বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের পার্শ্ববর্তী উপজেলা হল ঝিকরগাছা। আর এই সীমান্ত থেকে মটরসাইকেল, প্রাইভেটকার, পরিবহন সহ বিভিন্ন মাধ্যমে মাদকদ্রব্য আনা-নেওয়ার কাজে যারা লিপ্ত সহ সকল মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। মাদকমুক্ত ঝিকরগাছা উপজেলা গড়তে প্রয়োজনে আরো কঠোর ভাবে অভিযান পরিচালনা করা হবে। আমার কাছে অন্যায় বা দূর্নীতির কোন সুযোগ নাই। মাদক নির্মুল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই অভিযান অব্যহত থাকবে। আশাকরি আপনারা সহ সকলেই মাদকমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়তে আমাদেরকে সার্বিক সহায়তা করবেন। এছাড়াও উপজেলার মধ্যে কোনো প্রকার অন্যায় অবিচারের সংবাদ আসলেই আমিসহ আমার চৌকস টিম তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বদ্ধ পরিকর।
এ জাতীয় আরো খবর..