পোল্যান্ড যাওয়া হলো না প্রবাসী উত্তম কুমার রায়ের স্ত্রী ফিলিপাইনের নাগরিক রুবি রায় এবং মেয়ে বিভাংকার। সেই স্বপ্ন এখন বেইলি রোডের আগুনে পুড়ে কফিনবন্দি।
স্ত্রী ও মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে শুক্রবার (১ মার্চ) দিবাগত রাতে পোল্যান্ড থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন উত্তম কুমার রায়। সব কাগজপত্র ও অন্যান্য কাজ শেষ করে শনিবার (২ মার্চ) সকালে মরদেহ নিয়ে তিনি রওনা হন হবিগঞ্জের উদ্দেশ্যে। গ্রামের বাড়িতে দুপুর ২টায় মরদেহ এসে পৌঁছা মাত্র কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বজনরা। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নিহত মা-মেয়ের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
ইঞ্জিনিয়ার উত্তম কুমার রায়ের স্ত্রী ও মেয়ে ঢাকায় বসবাস করতেন। পোল্যান্ডে সপরিবারে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য এরই মধ্যে প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়েছে। শুক্রবার রাতে উত্তম কুমার দেশে এসে স্বজনদের সঙ্গে কিছুদিন থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পোল্যান্ড চলে যাওয়ার কথা ছিল। পূর্ব প্রস্তুতি অনুযায়ী মা ও মেয়ে বাসা থেকে কেনাকাটা করতে বের হন। রাতের খাবার খেতে তারা বেইলি রোডের হোটেলে যান। সেখানে গিয়ে আর ফিরে আসেননি। শোকে স্তব্ধ বাড়ির আশেপাশের মানুষও।
উত্তম কুমার রায়ের বড় ভাই বিঞ্চু রায় জানান, তার ছোট ভাই উত্তম কুমার রায় ১৯৯৬ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় হুন্দাই কোম্পানিতে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত অবস্থায় সেখানে ফিলিপাইনের নাগরিক রুবি রায়কে বিয়ে করেন। পরবর্তীতে তিনি ওই কোম্পানির কাজের জন্য পোল্যান্ড যান। এ সময় তিনি স্ত্রী ও মেয়েকে দেশে রেখে যান। তারা ঢাকার মালিবাগে থাকতেন।
প্রতিবেশী অজয় মিহির দেব বলেন, উত্তম কুমার রায় পোল্যান্ড প্রবাসী। উনার স্ত্রীও ফিলিপাইনের নাগরিক। উনার মেয়ে বিয়াংকা দেব অত্যন্ত মেধাবী ছিল। তাদের মৃত্যুতে আমরা শোকাহত।
চৌমুহনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান সোহাগ বলেন, তাদের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আমি নিহত মা-মেয়ের আত্মার শান্তি কামনা করছি ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।
গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ নামের ভবনটিতে আগুন লাগে। প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে আগুন নিভিয়ে আনতে সক্ষম হয় ফায়ার সার্ভিস। এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত হয়েছেন ৪৬ জন।
এ জাতীয় আরো খবর..