রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর শাখার গণিতের শিক্ষকের দ্বারা ছাত্রীদের যৌন হয়রানির ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে এ নিন্দা প্রকাশ করে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২৫ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে জানা যায় যে, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর শাখার গণিতের শিক্ষক মুরাদ হোসেনের দ্বারা ছাত্রীদের যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেছে। জানা যায়, শ্রেণীকক্ষে অশ্লীল কৌতুক শুনিয়ে ছাত্রীদের চেহারার প্রতিক্রিয়া দেখে শিক্ষক মুরাদ তাদের টার্গেট ঠিক করত।
আজিমপুরের সিয়াম আইডিয়াল স্কুলের পাশে একটি তিন তলা ভবনে তার কোচিং সেন্টার। সেখানে মুরাদ পড়াশোনার নাম করে নানা অজুহাতে ছাত্রীদের শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন এবং মেয়েদের বুকে জড়িয়ে ধরেন। তিনি এক্সট্রা ক্লাসের কথা বলে ছাত্রীদের কোচিং সেন্টারে আটকে রেখে বাবার মতো আদর করছেন বলে তাদের সঙ্গে যৌন হয়রানিমূলক আচরণ করেন। পাপের ভয় দেখিয়ে এসব বিষয়ে কাউকে না জানানোর জন্য ভয়ভীতি দেখাতেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করায় অভিযুক্ত শিক্ষক মুরাদ হোসেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসে তাদের নামে মিথ্যা কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রচার করছেন। বর্তমানে নিপীড়নের শিকার ছাত্রীরা চরম নিরাপত্তাহীন অবস্থায় বসবাস করছে এবং তাদের নিরাপত্তা ও শিক্ষা জীবন চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
আমরা লক্ষ্য করছি যে, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে শিক্ষক দ্বারা শিক্ষার্থীদের যৌন নিপীড়নের ঘটনা পূর্বেও ঘটেছে। যৌন নিপীড়নের ঘটনা একদিকে যেমন কমলমতি শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলছে, তেমনি শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি স্বাভাবিক শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্ন ঘটাচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আমরা স্কুল পরিচালনা পর্ষদ ও কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাই, এ ধরনের যৌন নিপীড়নের ঘটনা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বারবার কেন ঘটছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন প্রতিরোধে হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের আলোকে যৌন নিপীড়ন নিরোধ কমিটি গঠন করেছে কি না, কমিটি থাকলেও যথাযথভাবে কাজ করছে কি না এবং কমিটি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অবগত করা হচ্ছে কি না।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ যৌন নিপীড়নের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে সব শিক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহত প্রদানসহ তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং শিক্ষার্থীদের লেখাপড়াসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছে।
এ ধরনের ঘটনা পুনরাবৃত্তিরোধে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে হাইকোর্ট বিভাগের রায়ের আলোকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়ন নিরোধ কমিটি গঠন এবং গঠিত কমিটি যথাযথভাবে কাজ করছে কি না তা মনিটরিং করার বিষয়ে অনুরোধ জানাচ্ছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
এ জাতীয় আরো খবর..