উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারি বৃষ্টির কারণে ফুঁসে উঠছে যমুনা নদীর পানি। এক সপ্তাহ ধরে যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় গত চব্বিশ ঘণ্টায় ১৪ সেমি পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার মাত্র ৩৭ সেমি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই পানি বৃদ্ধি গত মাসের দুইবারের বৃদ্ধির চেয়ে বেশি। এতে করে চরাঞ্চলের নিচু এলাকা এরই মধ্যে প্লাবিত হয়েছে।
গতকাল ১৫ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সিরাজগঞ্জে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় নদীর পানির বিপৎসীমা থেকে মাত্র ৩৭ সেমি. কম রয়েছে। এদিকে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা ও ভাঙন আতঙ্কে দিন পার করছেন চরাঞ্চলসহ নদীপারের মানুষ।
কাজিপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, যমুনার পানি বাড়ায় উপজেলার অভ্যন্তরের চরাঞ্চলের গ্রামগুলোর ফসলের মাঠ প্লাবিত হয়ে বসতবাড়িতেও পানি উঠতে শুরু করেছে। পানি বৃদ্ধির ফলে উপজেলার চরাঞ্চলে অবস্থিত নাটুয়ারপাড়া, চরগিরিশ, মনসুননগর, তেকানি, খাসরাজবাড়ি, নিশ্চিন্তপুর ও মাইজবাড়ি, শুভগাছা, গান্ধাইল ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে বন্যার পানি ঢুকেছে।
তেকানি ইউনিয়নের হাড্ডিরঘাট এলাকায় যমুনার ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।
চরগিরিশ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক বলেন, এক সপ্তাহ ধরে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে নিম্নাঞ্চলের বাসাবাড়িতে পানি উঠতে শুরু করেছে। এ কারণে চরাঞ্চলের মানুষকে নিরাপদ স্থানে যেতে বলা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার শরীফুল ইসলাম জানান, এ পর্যন্ত দশ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের ক্ষেতে পানি প্রবেশ করেছে। চরের মানুষ এই বন্যা নেমে গেলে স্থানীয় ধান গাইনজার চাষ করে। তাই ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা নেই।
মাইজবাড়ি চরের কৃষক আফসার মিয়া বলেন, বানের পানি আমার গোয়ালঘরে প্রবেশ করেছে। গরু নিয়ে বেশ বেকায়দায় আছি।
আরো পানি বাড়লে কোথায় যাব জানি না।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জিত কুমার সরকার জানান, কয়েক দিনে ভারি বর্ষণের ফলে এক সপ্তাহ ধরে যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বন্যার পানি এবার বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। তবে বন্যা স্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা নেই।
কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুখময় সরকার জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সহায়তার বিষয়টি জেলায় জানানো হয়েছে। কেবল পানি ঢুকতে শুরু করেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে সহায়তা দেওয়া হবে।
এ জাতীয় আরো খবর..