ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় অপরিহার্য ওরস্যালাইন নিয়ে শুরু হয়েছে কারসাজি। লবণ আর গ্লুকোজের মিশ্রণে রাজধানীর চকবাজারে খুপড়ি ঘরে তৈরি করছে নকল ওরস্যালাইন। পরে তা বাজারজাত করা হচ্ছে রাজধানীসহ সারা দেশে। এই চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতারের পর পুলিশ বলছে, প্যাকেট দেখে বোঝার উপায় নেই এগুলো নকল।
নকল স্যালাইন
বুলবুল রেজা
কারখানাটিতে অভিযান চালাতে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায়, লবণ আর গ্লুকোজের বস্তা ছড়ানো ছিটানো ফ্লোরের মধ্যে। চুলায় লবণ দিয়ে তা থেকে ছাড়ানো হচ্ছে পানি। এর সঙ্গে গ্লুকোজ মেশানোর পর তা প্যাকেটজাত করলেই হয়ে যাচ্ছে ওরস্যালাইন। এভাবেই রাজধানীর চকবাজারের একটি বাসার ছাদের ওপর খুপড়ি ঘরে তৈরি হচ্ছে এসএমসির ওরস্যালাইন।
গত রোববার (১৩ আগস্ট) রাতে অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ উদ্ধার করেছে বিপুল পরিমাণ তৈরিকৃত নকল এসএমসির ওরস্যালাইন। তবে প্যাকেট দেখে বোঝার উপায় নেই এগুলো নকল। নারায়ণগঞ্জে নকল প্যাকেট তৈরির কারখানার সন্ধানও পেয়েছে পুলিশ। যেখানে তৈরি হচ্ছে লাখ লাখ প্যাকেট।
এসএমসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কয়েকটি চিহ্ন দেখে আসল স্যালাইন চেনা যায়। যেখানে এন লোগো, রেজিস্টার্ড মার্ক, সিল এবং এসএমসি এন্টারপ্রাইজের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু এই সবগুলোই আছে নকল স্যালাইনেও। তাহলে নকল চেনার উপায় কী?
নকল ওরস্যালাইন তৈরি চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। পুলিশ বলছে, এসব নকল স্যালাইনে নেই মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অনেকের অবস্থা মরণাপন্ন। তাই আমি অনুরোধ করব, এসব ওরস্যালাইন কেনার আগে অবশ্যই বিএসটিআইয়ের সিল আছে কিনা এবং মেয়াদের তারিখ আছে কিনা, সেটা দেখে কিনবেন।
বর্তমানে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় চাহিদা বেড়েছে স্যালাইনের। এই সুযোগটি কাজে লাগাচ্ছে প্রতারকরা, বলছে গোয়েন্দারা।
হারুন অর রশিদ বলেন, গ্লুকোজ দিয়ে লবণ ভেজে তারা স্যালাইন বিক্রি করছে। কারণ এখন প্রত্যেকটা হাসপাতালে অনেক ডেঙ্গু রোগী। তাই স্যালাইনের সংকট। আর এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে চক্রটি স্যালাইন তৈরি করে স্বল্প দামে বিক্রি করছে।
নকল স্যালাইন তৈরি চক্রের আরও অনেকের নাম পেয়েছে পুলিশ। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
এ জাতীয় আরো খবর..