এম.এ.হাসনাত শুভ, আজমিরীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :-
সারা বছর কদর না থাকলেও পৌষ সংক্রান্তি সামনে রেখে মাটির তৈজসপত্র তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে কুমারপাড়ার মৃৎশিল্পী কারিগরা। জরাজীর্ণ আবাসগুলোতে কেউ মাটি ঘুটছেন, কেউ সেই মাটি ছাঁচে দিয়ে তৈজসপত্র তৈরি করছেন। কেউবা খেলনা শুকানোর পর রং–তুলির আঁচড় দিচ্ছেন। পুরুষের পাশাপাশি নারী শিল্পীরাও কাজে ব্যাস্ত।
এমন চিত্র দেখা যায় হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ পৌরসভাধীন নগর গ্রামে কুমার পাড়ায়। বাঙালির প্রাণের উৎসব নববর্ষ ও পৌষ সংক্রান্তি মেলা ঘিরে আজমিরীগঞ্জে কুমারপাড়ার মৃৎশিল্পীদের ব্যস্ততা প্রতিবছরই বেড়ে যায়। সারা বছর মৃৎশিল্পীদের কদর না থাকলেও পৌষ সংক্রান্তি মেলা উপলক্ষে তাঁরা দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। মৃৎশিল্পীরা বলছেন, পৌষ সংক্রান্তি ও নববর্ষে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মেলা বসে। সারা বছর মাটির তৈজস বানিয়ে জীবিকা নির্বাহ না করলেও মেলার কারণে বাহারি সব খেলনা তৈরি করেন। যার মধ্যে মাটির পুতুল, হাতি, ঘোড়া, ষাঁড়, নৌকা, টিয়া, সিংহ, দোয়েল, কচ্ছপ, মাছ, হাঁসসহ নানা রকম ফল, ফুল আর বাহারি মাটির ব্যাংক, প্লেট, মগ, গ্লাস, চায়ের কাপ, পিঠা তৈরির ছাঁচ তৈরি হচ্ছে সমানতালে। বিভিন্ন মেলায় এসব জিনিস বিক্রি করা হবে জানান উনারা। প্রবীণ একজন মৃৎশিল্পীর সাথে কথা বলে জানা যায়, আগেকার সময়ে এইসব মাটির তৈজস তৈরিই ছিলো তাঁদের জীবন-জীবিকার উৎস।
কালের বিবর্তনে আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে তাঁদের অনেকেই এই পেশা ছেড়ে দিয়েছেন। শিল্পযোদ্ধারা বলছেন, হাজার বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অনবদ্য রূপ মৃৎশিল্প। এর সঙ্গে একদিকে জড়িয়ে আছে জীবনের প্রয়োজন, অন্যদিকে নান্দনিকতা ও চিত্রকলার বহিঃপ্রকাশ। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ নিয়ে পেশাটি বাঁচিয়ে রাখার উদ্যোগ গ্রহণের আহবান জানান কুমারপাড়ার মৃৎশিল্পীরা।
এ জাতীয় আরো খবর..