অভ্যন্তরীণ বাজারে দাম স্থিতিশীল রাখতে চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এবার চিনি রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে বলে দেশটির ব্যবসায়ীরা উদ্বেগ প্রকাশ করছেন।
ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদন জানাচ্ছে, চিনির সরবরাহ কমে যাওয়ায় বিশ্ববাজার এখন ভারতের চিনির ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল। কিন্তু এ বছর ভারতে কৃষি উৎপাদন অঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টির কারণে শঙ্কা তৈরি হয়েছে যে আখ উৎপাদনও কমে যাবে। সেটা হলে এ নিয়ে টানা দুই বছর আখ উৎপাদন কমবে। আগামী অক্টোবরে মৌসুম শুরু হবে।
চিনির উৎপাদন কমে গেলে ভারতের রপ্তানি সক্ষমতা কমবে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যে গম ও কিছু কিছু ধরনের চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। প্রতিকূল আবহাওয়া ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এমনিতেই বিশ্ববাজারে সরবরাহ কম, ভারতের এই সিদ্ধান্তের কারণে বিশ্ববাজারে স্বাভাবিকভাবেই আরও চাপ পড়েছে।
ভারতের গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ট্রপিক্যাল রিসার্চ সার্ভিসেসের চিনি ও ইথানল বিভাগের প্রধান হেনরিক আকামিনে ইকোনমিক টাইমসকে বলেন, চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার অর্থ হলো, সরকার খাদ্যনিরাপত্তা ও মূল্যস্ফীতি নিয়ে শঙ্কিত। এখন শঙ্কা হলো, চিনির বেলায়ও সরকার একই ধরনের সিদ্ধান্ত নেবে।
ইন্ডিয়ান সুগার মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আদিত্য ঝুনঝুনওয়ালা ইকোনমিক টাইমসকে বলেন, মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকের মতো আখ উৎপাদনকারী রাজ্যে জুনে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি। তাঁরা ধারণা করছেন, ২০২৩-২৪ মৌসুমে ভারতের আখ উৎপাদন ৩ দশমিক ৪ শতাংশ কমে ৩ কোটি ১৭ লাখ টনে দাঁড়াবে। আদিত্য ঝুনঝুনওয়ালা অবশ্য মনে করছেন, এই পরিমাণ আখ দিয়ে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানো যাবে।
তবে ভারতে জৈব জ্বালানি উৎপাদনে আখের ব্যবহার বাড়বে। অ্যাসোসিয়েশন মনে করছে, ইথানল তৈরিতে এবার ৪৫ লাখ টন আখের ব্যবহার হতে পারে, আগের বছরের চেয়ে যা ৯ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।
আরেক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান স্টোন এক্সের চিনি ও ইথানল বিভাগের প্রধান ব্রুনো লিমা বলেন, উৎপাদন এ রকম হলে কেন্দ্রীয় সরকার রপ্তানি বন্ধ করে দেবে। সেই সঙ্গে দেখতে হবে, ইথানল উৎপাদনে কী পরিমাণ আখ সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে পিটিআইয়ের এক সংবাদে ভারতের কেন্দ্রীয় খাদ্যসচিব সঞ্জীব চোপড়াকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, সুগার মিল অ্যাসোসিয়েশনের উৎপাদনের হিসাব বাস্তবসম্মত নয়। তারা অনেক আগেই এই পূর্বাভাস দিয়ে ফেলছে, ফলে বাজারে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে যে দেশে আখ উৎপাদন কমবে।
তবে ভারত এর আগেও চিনি রপ্তানি সীমিত করেছে। ২০২২-২৩ মৌসুমে ৬১ লাখ টন চিনি রপ্তানি করা হয়েছে, যদিও আগের বছরে তা ছিল ১ কোটি ১০ লাখ টন।
এ জাতীয় আরো খবর..