নাদিমুল আল তানভীর (কুমিল্লা উত্তর জেলা) প্রতিনিধি:
★জরিমানা আদায় করা হয় ১৬ লাখ ৬৬ হাজার
★ড্রেজারের পাইপ বিনষ্ট করা হয়েছে ৯০ হাজার ফুট
★ট্রলি ট্রাক্টর ও ভেকু জব্দ করা হয় ৬০ টি
কুমিল্লার মুরাদনগরে ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে অপ্রতিরোধ্য অভিযান চালিয়ে কৃষকদের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাকিব হাসান খান। তার সাহসী নেতৃত্বে মাত্র ৪৫ দিনে ১১০টি অবৈধ ড্রেজার অপসারণ এবং কৃষিজমি রক্ষায় একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, যা মুরাদনগরের জনগণের মধ্যে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।
সাকিব হাসান খান ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখে মুরাদনগরে যোগদানের পরই কৃষিজমি রক্ষায় কাজ শুরু করেন। ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, তিনি যোগদান করেই অবৈধ মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেন। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তিনি ১১০টি ড্রেজার অপসারণ, ৯০ হাজার ফুট ড্রেজারের পাইপ বিনষ্ট এবং ৬০টি ট্রলি ট্রাক্টর ও ভেকু জব্দ করেন। এসময় তিনি বিভিন্ন মামলা পরিচালনা করে মোট ১৬ লাখ ৬৬ হাজার ১ শত টাকা জরিমানা আদায় করেন।
এছাড়া, সাকিব হাসান খানের নেতৃত্বে পরিচালিত এ অভিযান কৃষকদের মধ্যে আশার আলো দেখিয়েছে। পূর্বধৈইর ইউনিয়নের কৃষক কাদের মিয়া ও মকবুল হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে ভূমিদস্যুরা তাদের ফসলি জমির উর্বর মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু বর্তমানে এসিল্যান্ড স্যারের অভিযান পরিচালনার ফলে মাটি কাটা বন্ধ হয়েছে। তারা জানান, ভূমিদস্যুরা তাদের উপর ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে মাটি কেটে নিলেও এখন আর তা সম্ভব হচ্ছে না।
যাত্রাপুর ইউনিয়নের কৃষক করিম মিয়া এবং শামীম আহমেদ জানান, মাটি ব্যবসায়ী নয়ন ও তার সাঙ্গীরা তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করে জমি বিক্রি করতে বাধ্য করত। কিন্তু এসিল্যান্ড সাকিব হাসান খানের উদ্যোগে ড্রেজার অপসারণের ফলে তারা নিজেদের জমির নিরাপত্তা ফিরে পেয়েছেন।
দারেরা ইউনিয়নের কৃষক আনোয়ার ও জাকির হোসেন বলেন, আমরা বহু এসিল্যান্ড দেখেছি, কিন্তু এমন সাহসী ও সক্রিয় অফিসার দেখিনি। জমি রক্ষায় আমাদের অভিযোগের ভিত্তিতে এসিল্যান্ড স্যারের ব্যবস্থা অত্যন্ত কার্যকরী হয়েছে।
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাকিব হাসান খান বলেন, বিভিন্নভাবে কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও আমি এটি রক্ষা করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। অবৈধ ড্রেজিং এবং ভেকু দিয়ে মাটি কাটার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং কৃষিজমি রক্ষা করা আমার প্রধান দায়িত্ব। কোনো অবস্থাতেই কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
মুরাদনগরের এই এসিল্যান্ডের সাহসী পদক্ষেপের ফলে এলাকার কৃষকরা এখন একটি সুরক্ষিত পরিবেশে তাদের ফসল চাষ করতে পারছেন, যা কৃষিজমির সুরক্ষা ও স্থানীয় জনগণের জন্য এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে।
এ জাতীয় আরো খবর..