মোঃ নাজমুল হুদা, লামাঃ
লামার দুর্গম সরই ইউনিয়নে বড়দিনে গীর্জায় প্রার্থনায় থাকার সুযোগে দুর্বৃত্তদের অগ্নিসংযোগে ১৭টি ঘর পুড়ে দেওয়ার অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগীরা।
২৪ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের তংগঝিড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও প্রশাসন সুত্রে জানা যায় লামা সরইয়ের তংগঝিরিপাড়া এলাকায় এসপি বাগানে বসবাসরত ত্রিপুরাদের ঘরবাড়ি ২৪ডিসেম্বর দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে দুর্বৃত্তরা পুড়িয়ে দিয়েছে।
বলে জানিয়েছেন নতুন তংগঝিরি পাড়ার প্রধান (কার্বারী) পাইসাপ্রু ত্রিপুরা। তিনি আরো বলেন, তংগঝিড়ি এলাকার নতুন পাড়া এসপি বাগান নামে পরিচিত পাড়াবাসীদের বেদখল হওয়া জায়গা থেকে কথিত এসপির লোকজন চলে যাওয়ার পর ১৯টি ত্রিপুরা পরিবার সেখানে বসবাস করে। তারা সবাই তংগঝিরি পাড়ার বাসিন্দা। ১৯ পরিবারের পাড়াটি নাম দিয়েছে তংগঝিরি নতুন পাড়া। বড়দিন উপলক্ষ্যে নতুনপাড়ার বাসিন্দারা ঘরবাড়ি খালি রেখে মঙ্গলবারে সবাই তংগোঝিরি পাড়ায় যায়। কারণ নতুনপাড়ায় কোনো গীর্জা নেই। রাতে মানুষ শূন্য পাড়ায় দুর্বৃত্তরা আগুন লাগিয়ে দেয়। দুটি ঘর বাদে পাড়ার ১৭টি ঘরবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত গুঙ্গামনি ত্রিপুরা বলেন, তংগঝিড়ি নতুন পাড়ায় ১৯টি পরিবার বসবাস করে কিন্তু পাড়ায় খ্রীষ্টানদের কোন প্রার্থণা ঘর গীর্জা নাই সেজন্য বড়দিন উপলক্ষে পুরাতন তংগঝিড়ি পাড়া গীর্জায় রাতে প্রার্থণা করতে গেলে দুর্বৃত্তরা রাত সাড়ে ১২টার দিকে ১৭টি বাড়িঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। আমরা এক পোশাকে আছি, আমরা সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করছি।
সরই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ইদ্রিস কোম্পানি বলেন, ৮নম্বর ওয়ার্ড তংগঝিড়ি এলাকায় নতুন তংগঝিড়ি পাড়াতে গতরাতে দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে ১৭টি ঘর পুড়ে গেছে বলে শুনেছেন, সরেজমিনে দেখার জন্য ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন, লামা ইউএনও পরিদর্শনে আসতেছেন বলে জানান তিনি।
লামা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত ওসি) মোঃ এনামুল হক ভুঁইয়া বলেন,সরই ইউনিয়নের এটা দুর্গম এলাকা তংগঝিড়ি এলাকায় এই অগ্নিকান্ড ঘটনাটি ঘটে। গত ৫নআগষ্টের পর ভুমি সংক্রান্ত বিষয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ ও বেদখল সংক্রান্ত ঘটনা রয়েছে। যথাযথ তদন্ত করে দোষী ব্যাক্তিদের আইনের আওতায় আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।
লামা উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) রুপায়ন দেব জানান, তংগঝিড়ি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা তিনি সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখেছেন যেহেতু দুর্বৃত্তরা হিংসাত্মকভাবে ১৭টি ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদেরকে অভিযোগ দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। আপাতত সতেরটি পরিবারের জন্য কম্বল, খাদ্যসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তার পক্ষ থেকে প্রদান করবেন। তারপর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে ক্ষতির পরিমাণ নির্নয় করে প্রয়োজনী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
এ জাতীয় আরো খবর..