কুমিল্লা তিতাসে চাঁদার টাকা না দেয়ায় কিশোর গ্যাং গ্রুপের হামলার শিকার হয়ে আহত যুবক স্বপন ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ১২ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছে।
নিহত স্বপন ভূইয়া (৩৫) উপজেলার জগতপুর ইউনিয়নের ওমরপুর গ্রামের সোবহান ভূঁইয়ার ছেলে। স্বপন এক সন্তানের জনক এবং তার স্ত্রী মরিয়ম বর্তমানে নয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা
নিহতের পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, আসিফ ও নাজমুল নামে দুই কিশোরের পরিচালনায় একটি গ্যাং দুই দফায় স্বপনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নেয়। তৃতীয় দফা টাকা না দেয়ায় গত ৩১ অক্টোবর স্বপনকে প্রকাশ্যে তুলে এনে একটি কনফেকশনারির সামনে উপর্যুপরি গণপিটুনী, লোহার রড ও পাইপ দিয়ে আঘাত করে গুরুতর আহত করে। মারধরে স্বপন অজ্ঞান হয়ে গেলে সন্ত্রাসীরা তাকে ফেলে যায় এবং পরিবারের লোকজন খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে পরে তাকে ঢাকার একটি বেসরকরী হাসপাতালে ভর্তি দিয়ে চিকিৎসা করান।স্বপনের স্ত্রী মরিয়ম জানান, আমার স্বামীকে মারার আগে সন্ত্রাসীদের লিডার আসিফ ও নাজমুলসহ কিশোর গ্যাং নানাহ অপবাদ ও ভয় দেখিয়ে দুই দফা চাঁদা নেয়। ওইদিন আবারো তারা দুই লাখ টাকা দাবী করেছিলো। সেই টাকা দিতে মানা করলে তাকে আবার মারধর করে। শেষমেষ আমার স্বামী অনেক যন্ত্রণায় ছটফট করে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। ওই গ্যাংয়ের ভয়ে গ্রামের মুরব্বিরাও আতংকে থাকতো। আমি এই হত্যার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি চাই।অভিযুক্ত আসিফ ও নাজমুল 'স্বপ্নপূরণ ফাউন্ডেশন" নামে একটি সংগঠন পরিচালনা করে। ওই সংগঠনের সদস্যরাই স্বপনকে মারধর করে। সদস্যরা ঘটনার পর থেকে তারা আত্মগোপনে থাকায় কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। অনেকের পরিবারের সদস্যরাও এ বিষয়ে কথা বলতে চাননি। তবে কেউ কেউ কেউ দাবী করেন স্বপন প্রবাস থেকে এসে মাদক বিক্রি করতো। এ নিয়েই স্বপ্ন পূরণের সদস্যরা তাকে বেধম মারধর করে।ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কুমিল্লা তিতাস থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশীদ জানান, শুনেছি উপজেলা ওমরপুর গ্রামে মারামারি হয়। এতে স্বপন নামক এক যুবক আহত হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যায়। নিহতের লাশ বাড়ীতে আনা হয়েছে। বুধবার রাতে নিহতের লোকজন থানায় এসে অভিযোগ না দিয়ে আবার চলে যায়। আজ বৃহস্পতিবার এসেছে অভিযোগ দিলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।