বরগুনা প্রতিনিধি:
বরগুনায় এক গৃহবধূকে অপহরণ করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে অপহরণকারীরা। এ ঘটনায় ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং পাঁচজনকে আসামি করে মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেছেন গৃহবধুর মা। মামলার কথা জানতে পারিয়া অপহরণকারীরা মামলা তুলে নিতে বাদীকে হুমকি দিচ্ছে। মামলা তুলে না নিলে গৃহবধূকে খুন করে লাশ গুম করে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। বর্তমানে বাদী ও তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে । তিনি তার কন্যাকে উদ্ধারের জন্য এবং আসামিদের আইনের আয়ত্তে আনার দাবিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছেন। উল্লেখ্য গত শনিবার ৩১ আগস্ট ২০২৪ সকাল দশটায় তালতলী উপজেলার, নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নে, গৃহবধূর বাড়ির সামনের পাকা রাস্তার উপর থেকে মোটরসাইকেলে অপহরণ করা হয় । অপহরণকৃত গৃহবধূ, নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের, নিজাম হাওলাদার এর কন্যা । মামলায় অভিযুক্তরা হলেন , বরগুনা সদর উপজেলার, এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের ,ছোনবুনিয়া গ্রামের আল আমিনের ছেলে জাকারিয়া , নলটোনা ইউনিয়নের, গর্জন বুনিয়া (শিয়ালিয়া) গ্রামের মৃত মনসুর আলী আকন এর ছেলে ফোরকান তিনি ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল মতিঝিল শাখার ২৪/বি আউটার সার্কুলার রোড, মতিঝিল ঢাকা ১২১৭ ,১নং ভবনে, মার্কেটিং শাখায় কর্মরত। একই ইউনিয়নের, পালের বালিয়াতলী গ্রামের মৃত ইউসুফ মোল্লার ছেলে আব্বাস মোল্লা, ছোনবুনিয়া গ্রামের বাবুল মুসল্লির ছেলে আল-আমিন, ও আল আমিনের স্ত্রী নাজমা ওরফে তাসলিমা, মামলার বাদী বলেন অভিযুক্তরা মানব পাচার কারী সংঘবদ্ধ লোক, এরা একত্রিত হইয়া গৃহবধূকে জোর পূর্বক অপহরন করিয়া নেওয়ার ও বিদেশে পাচার করিয়া দেয়ার হুমকি দিয়া আসিতে থাকে। আমার মেয়ের গতিবিধি লক্ষ্য করিয়া খোজ খবর নেয়। আমার মেয়ে ঘরের সামনে রাস্তায় পানি আনিতে বের হইলে অভিযুক্তরা ০৮ জুলাই ২০২৪ ইং সকাল দশটায় ঘরের সামনের রাস্তা হইতে দুই খানা মোটর সাইকেল যোগে অভিযুক্তদের হাতে থাকা চাকু ও ডেগার দিয়া মেয়েকে খুনের ভয়ভীতি দেখাইয়া মুখ চাপিয়া মোটর সাইকেল যোগে অপহরন করিয়া পূর্বদিকে নিয়া যায়। তিনি আরো বলেন মেয়ের ডাক চিৎকার দিতে চাহিলেও অপহরণকারীরা মুখ চাপিয়া রাখে। আমি ও স্থানীয়রা দেখিতে পাই মোটর সাইকেল যোগে জোর পূর্বক নিয়া যায়। বাধা দেয়ার চেষ্টা করিয়া ব্যর্থ হই। পরবর্তীতে খোজাখুজি করি দীর্ঘ এক মাস অতিবাহিত হলে অপহরণকারীদের মোবাইল নম্বর দিয়া আমার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে ফোন দিয়া এবং আরো অপরিচিত নম্বর দিয়া একাধিকবার ফোন করে জানায় আপনার মেয়ে বর্তমানে ঢাকায় আছে। সে খুব গুরুত্বর অসুস্থ্য আপনি ঢাকা যাত্রাবাড়ী এসে নিয়ে যান। পরে আমি ঐ দিনই ঢাকায় রওয়ানা হইয়া যাইয়া পরের দিন ঢাকায় পৌছাইয়া যাত্রাবাড়ী বাসষ্ট্যান্ড হইতে আমার মেয়ে গুরুত্বর অসুস্থ্য অবস্থায় উদ্ধার করি, এবং মেয়ের কাছে জানতে পারি আমার মেয়ের সাড়ে তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা গর্ভের সন্তান নষ্ট করার ঔষধ খাইয়ে মেরে ফেলছে অপহরণকারীরা। আমি মেয়ে নিয়ে আসিয়া চিকিৎসা করিয়া সুস্থ্য করি। আমার মেয়ে অভিযুক্তরা অপহরন করিয়া বিদেশে পাচার করিয়া দিতে চাইছে বলিয়া মেয়ে আরো জানায়। অতঃপর ৩১ আগষ্ট ২০২৪ ইং অপহরণকারীরা পুনরায় আমার মেয়েকে অপহরন করিয়া পাচার করিবার উদ্দেশ্যে দুই খানা মোটর সাইকেল যোগে আসিয়া ওৎ পাতিয়া থাকিলে আমার মেয়ে আমার বসত ঘরে সামনে বের হইলে সেই সুযোগে সকাল অনুমান দশটায় মেয়েকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করিয়া মুখ চাপিয়া জোর পূর্বক উঠাইয়া অপহরন করিয়া নিয়া যায়। পরে আমি খোজা খুজি করিয়া পূর্বে অভিযুক্তদের দেয়া নম্বরে যোগাযোগ করিলে অপহরণকারীরা আমার নিকট তিন লক্ষ্য টাকা মুক্তিপন দাবী করে , বলে মেয়েকে জীবিত পাইতে হইলে ৩ লক্ষ্য টাকা নিয়া ঢাকায় চলিয়া আসো। আমি একই দিন বিকাল অনুমান পাঁচটায় আমতলী হইতে ঢাকার গাড়ীতে ঢাকায় গিয়া যোগাযোগ করিলে তখন মামলার ২নং আসামীর হাল ঠিকানায় যেতে বলিলে আমি আসামীর মতিঝিল আউটার সার্কুলার রোড গেলে বাসার মধ্যে আমার, কন্যাকে বাধা অবস্থায় দেখিতে পাই। আমি কথা বলিতে চাইলে কথা বলিতে দেয় নাই। তখন সকল আসামীগন বলে ৩ লক্ষ্য টাকা মুক্তিপন না দিলে মেয়েকে জীবিত অবস্থায় পাবি না। আমার মেয়ে আসামীদের নিকট নির্যাতিত ও মানবেতর জীবন যাপন করিতেছে। আমার মনে দৃঢ় বিশ্বাস যে, ১-৩ নং আসামীগন আমার মেয়েকে তাহার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ধর্ষন করিয়া এবং বিদেশে পাচার করিয়া দিতে পারে। খুন করে লাশ গুম করতে পারে। তালতলী থানার (ওসি) মোঃ শহিদুল ইসলাম খান জানান, এ বিষয় মামলা হয়েছে, তদন্ত চলছে, গৃহবধূকে উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
এ জাতীয় আরো খবর..