নরসিংদী প্রতিনিধি:
নরসিংদীতে জেলা প্রশাসকের উদারতায় প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পর জেলা প্রশাসন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যািলয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীরা বেতন-ভাতা পেয়েছেন। এতে শিক্ষক-কর্মচারীদের মনে দেখা দেয় আশার আলো, মুখে ফুটে উঠে আনন্দের জিলিক ।
বুধবার (১২ জুন) জেলা শহরের ভেলানগর এলাকাস্থ জেলা বিদ্যালয়ের অস্হায়ী কার্যালয়ে এক প্রতিকী জন্মদিন অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম শিক্ষক ও কর্মচারীদের হাতে এ বেতন-ভাতা তূলে দেন।
জানা যায়, ২০১০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারী সুইড বাংলাদেশ নরসিংদী শাখা হিসেবে কার্যক্রম এ বিদ্যালয়টি যাত্রা শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনে বটতলায়, রেলওয়ে স্কুলেরএকটি অব্যবহত কক্ষেই চালায় বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। ২০১৫ সালে বিদ্যালয়টি সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হওয়ার পর জেলা প্রশাসকের বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা অনুযায়ী (১৩ সদস্য বিশিষ্ট বিদ্যালয়ের ব্যাস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়। পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসক এ বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ইতোমধ্যে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ১৪ বছর গত হলেও বর্তমান সময় পর্যন্ত কোন শিক্ষ কর্মচারী বেতন ভাতা পায়নি। বিদ্যালয়ের ১২জন শিক্ষক ও কর্মচারী দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে বিনা বেতনে প্রায় দেড় শতাধিক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিশুদের পাঠদান করে আসছিলেন। সম্প্রতি বিষয়টি নরসিংদী জেলা প্রশাসকের নজরে আসলে তিনি উদ্যোগী হয়ে মানবিক দিক বিবেচনা করে এ বেতন-ভাতার ব্যেবস্হা করেন। এরই প্রেক্ষিতে বিদ্যাঠলয়ে কেক কেটে প্রতিকী জন্মদিন পালন করেন নরসিংদী জেলা প্রশাসন।
নরসিংদী জেলা প্রশাসক ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ড. বদিউল আলমের সভাপতিত্বে স্থানীয় আব্দুল মজিদ মোল্লা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শিল্পপতি আব্দুল কাদির মোল্লা এতে প্রধান গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক জসিম উদ্দিন সরকারের পরিচালনায় প্রতীকি জন্মদিন অনুষ্ঠানে অন্যােন্যরদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) অঞ্জন দাস, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ডেপুটি নেযারত কালেক্টর শিহাব সারার অভি, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক, মো: আব্দুল্লাহ আল মামুন, প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র কর্মকর্তা, নঈমা আক্তার, সুইড বাংলাদেশ নরসিংদী শাখার সাবেক সদস্য সচিব, নাজমুল হক ভূইয়া, বর্তমান সুইড বাংলাদেশ নরসিংদী শাখার সদস্য সচিব, এডভোকেট আমিনুল হক রানাসহ অন্যরা।
আলোচনা সভা শেষে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীকে জেলা প্রশাসক ও বিদ্যালয়ের সভাপতি, ড. বদিউল আলমের নিরলস প্রচেষ্টায় মাসে ১২জন শিক্ষক -কর্মচারির বেতন- ভাতা প্রদান করে যাবেন ঘোষণা করেন এবং চলতি মাসের ভাতা অগ্রিম প্রদান করেন। পাশাপশি শিক্ষক ও কর্মচারীদেরকে আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে ঈদ বোনাস হিসাবে একলক্ষ টাকা নগদ উপহার প্রদান করেন। পরে অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে প্রতিকী জন্মদিনের কেক কাটেন অতিথিরা।
উল্লেখ্য যে,নরসিংদী জেলা শহরের একমাত্র অটিজম আক্রান্ত শিশুদের নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান। এখানে লেখাপড়ার পাশাপাশি শারীরিক ব্যায়াম ও থেরাপি দেয়া হয়।
এসময় অতিথিগণ বলেন, এই শিশুদের একেকজন হতে পারেন ভবিষ্যতের বাতিঘর। এর জন্য আজকে এই শিশুদের মা-বাবার কস্ট করতে হচ্ছে। এই শিশুদের জন্য মান সম্মত একটি প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫০ শতক জায়গা ও শিল্পপতি আবদুল কাদির মোল্লার পক্ষ থেকে ভবন করে দেয়ার ঘোষনা দেন।
এ জাতীয় আরো খবর..