এ,কে,এম আসাদুজ্জামান রানা, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি:
দক্ষিণ এশিয়ার সেরা গোলরক্ষক হিসেবে খ্যতি অর্জন করা পঞ্চগড়ের মেয়ে ইয়ারজান বেগমের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। ভাঙা কুড়ে ঘর থেকে ঈদ উপহার হিসেবে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পেয়েছেন দুই রুম বিশিষ্ট একটি ঘরসহ আধুনিক সুযোগ সম্মলিত একটি ওয়াশ ব্লগ বাথরুম। আর এতে করে আনন্দের জোয়ার বইছে সাম্প্রতি নেপালে অনুষ্ঠিত হওয়া সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের নায়ক ইয়ারজানের গ্রামের বাড়িতে।
বুধবার (১২ জুন) দুপুরে পঞ্চগড় সদরের হাড়িভাসা ইউনিয়নের খোপরাবান্দি গ্রামে গিয়ে তার হাতে ঈদ উপহার হিসেবে "ইয়ারজান নীড়" নামে স্বপ্নের বাড়ির ঘরের চাবি তুলে দিয়েছেন পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক জনাব জহুরুল ইসলাম। পরে দোয়া শেষে ইয়ারজানকে মিষ্টিমুখ করান তিনি।
এর আগে জেলা প্রশাসক সদ্য তৈরি করে দেয়া বাড়িটি পরিদর্শন করে "ইয়ারজান নীড়" নামে ঘরের ফলক উম্মোচন করেন।
এতে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন, সদর উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভূমি) মলিহা খানম, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জিয়ায়ুর রহমানসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
এসময় পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক জনাব জহুরুল ইসলাম বলেন, আপনারা জানেন মাস দুই-এক আগে নেপালে অনুষ্ঠিত হয় সাফ অনূর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলা। সেই খেলায় বাংলাদেশকে গৌরব এনে দেয় আমাদের পঞ্চগড়ের মেয়ে ইয়ারজান বেগম। সেই বিজয়ের মাঝে তার বাবা-মায়ের সাথে সাক্ষাৎ করতে এসে বাড়ির দূবস্থা দেখে সরকারের পক্ষ থেকে ঘর উপহার দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। সেই থেকে আমরা ঘরের কাজ শুরু করে দ্রুত কাজ সমাপ্তের পর তার হাতে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেছি। আশা করি পরিবারটির এই ঈদ ভালো কাটবে, এবং সবাই ভালো থাকবে। আগামীতে এই ইয়ারজান দেশের নাম আরো উজ্জল করবে এই কামনা করছি।
ইয়ারজান বেগম বলেন, একটা সময় খুব কষ্টে বাড়িতে দিন অতিবাহীত করেছি। বিশেষ করে আমার বাবা-মা সব থেকে বেশি কষ্ট করেছে। যখন সাফ খেলতে বাইরে যাই, তখন থেকে চিন্তা আরো বেড়ে যায় যে না জানি আমার ভাঙ্গা ঘরে তারা কি ভাবে আছে। এখন সেই চিন্তা কেটেছে। প্রশাসন সহ সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এমন ঘর উপহার দেয়ার জন্য। তবে অসুস্থ্য বাবার পাশে প্রশাসনকে থাকার আহব্বানের অনুরোধ জানিয়ে ইয়ারজান বলেন, ঈদের আগে এমন উপহার আনন্দের মাত্রা আরো কয়েকগুণ বাড়িয়েছে।
ইয়ারজানের মা রেনু বেগম ও বাবা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, একটা সময় খুব কষ্টে ভাঙা বাড়িতে ঝড়-বৃষ্টির দিন রাত পার করেছি। ঝড়-বৃষ্টির কারণে মাঝে মধ্যে সন্তান গুলোকে অন্য বাড়িতে রাতে রাখতাম। এখন সেই আর ভয় থাকলো না। আগামী ৫/৬ মাসেও আমার দ্বারা এমন ঘর পাওয়া সম্ভব হোত না। একমাত্র আমার এই মেয়ের জন্যই এটি সম্ভব হয়েছে। তার জন্য আজ আমরা নতুন ঘর পেয়েছি। সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি, আমাদের মেয়ের জন্য সকলেই দোয়া করবেন।
এদিকে টুকু ফুটবল একাডেমির পরিচালক ও ইয়ারজানের কোচ টুকু রেহমান বলেন, খুব কষ্ট করে ইয়ারজান এই উচ্চতায় এসেছে। আমি চেষ্টা করেছি তাকে ভালো খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে তোলার। তবে তার ইচ্ছা শক্তির কারণে সব সম্ভব হয়েছে। তার মঙ্গল কামনা করছি।
এ জাতীয় আরো খবর..