জবি প্রতিনিধি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আইনুল ইসলামের নিয়োগ নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জবিশিস) থেকে পাল্টাপাল্টি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। ১৬ই এপ্রিল জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত 'বিতর্কিত শিক্ষককে জবির রেজিস্ট্রার নিয়োগ'-কে কেন্দ্র করে শিক্ষক সমিতি থেকে দুইটি বিবৃতি দেওয়া হয়।
গত ১৭ই এপ্রিল (বুধবার) শিক্ষক সমিতির একপক্ষের সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, অন্যপক্ষের সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কতৃক স্বাক্ষরিত বিবৃতি প্রদান করেন।
সভাপতি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কতৃক প্রকাশিত বিবৃতিতে উল্লেখ করেন 'দৈনিক জনকণ্ঠে বিগত ১৬/৪/২০২৪ তারিখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সম্মানিত অধ্যাপক, প্রাক্তন ছাত্রকল্যাণ পরিচালক, শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য, বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, আইসিবি সিকিউরিটির পরিচালক এবং রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মোঃ আইনুল ইসলাম এর নামে প্রকাশিত একটি খবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির দৃষ্টিগোচর হয়েছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি প্রকাশিত খবরটির নিন্দা জানাচ্ছে এবং এই ধরনের মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন খবর প্রকাশের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। এ ধরনের সর্বৈব মিথ্যা ও কুরুচিপূর্ণ খবর প্রকাশ শুধু অধ্যাপক ড. মোঃ আইনুল ইসলাম নয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় অব্যাহত সুনামকে কালিমালিপ্ত করার অপপ্রয়াস বলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি মনে করে।
উল্লেখ্য যে, অধ্যাপক ড. মোঃ আইনুল ইসলাম শুধু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নয় বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারকাতের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে সরকারের অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে আসছেন। যাচাই-বাছাই না করে খেয়াল খুশি মতো এ ধরনের মিথ্যা ও বানোয়াট খবর প্রকাশ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন না করে ভবিষ্যতে সত্য এবং বস্তুনিষ্ঠ খবর প্রকাশের আহবান জানাচ্ছে।'
সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কতৃক প্রকাশিত বিবৃতিতে বলেন, 'জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও অর্থনীতি বিভাগের সম্মানিত সহকর্মী অধ্যাপক ড. মো: আইনুল ইসলামকে নিয়ে গত ১৬/০৪/২০২৪ তারিখে দৈনিক জনকণ্ঠে প্রকাশিত খবরের প্রেক্ষিতে অদ্য ১৭/০৪/২০২৪ তারিখে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নামে প্রচারিত প্রতিবাদপত্রের সাথে শিক্ষক সমিতির সকল সদস্য একমত নন এবং প্রতিবাদপত্রের সাথে আমরা সংশ্লিষ্ট নই।'
পাল্টাপাল্টি বিবৃতি নিয়ে জবিশিসের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: জাকির হোসেন বলেন, সাধারণ সভা আহ্বান করা হয়েছিলো, সভায় সিদ্ধান্ত হয় আমরা শিক্ষক সমিতির প্যাডে জনকণ্ঠে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ লিপি দিব। এক্ষেত্রে সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরে অনীহা প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে একই প্যাডে আবার বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। এটা আসলে কতটা স্বাভাবিক, উদ্দেশ্যে প্রনোদিত কিনা সেটি আমার প্রশ্ন? এভাবে দুইবার শিক্ষক সমিতির প্যাডে বিবৃতি দেওয়া বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি তৈরি করে।
সাধারণ সম্পাদক ড: শেখ মাসরিক হাসান বলেন, যাকে নিয়ে বিবৃতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে তার কাছ থেকে আবেদনপত্র জানানোর কথা বলা হয়েছিলো। এছাড়াও এর আগে যেসব শিক্ষক নিয়ে নিউজ হয়েছে তাদের জন্যও বিবৃতি দিতে বলা হয়। কিন্তু নিজেদের মতো করে বিবৃতি দিয়ে শিক্ষক সমিতির প্যাডে সাধারণ সম্পাদককে বাদ দিয়ে বিবৃতি দেওয়ার আমাকে অপমান করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম-কে যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় ২০১১ সালের ১৫ মার্চ ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষের পদ থেকে অপসারণ করা হয়। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এবং বাংলা বিভাগের এক সহকারী শিক্ষিকার যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনায় যুক্ত থাকায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে এ পদ থেকে আইনুল ইসলামকে অপসারণ করা হয়। ২০১১ সালের ১৫ মার্চ অনুষ্ঠিত নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির তৎকালীন উপাচার্য ও সিন্ডিকেট সভাপতি অধ্যাপক ড. সৈয়দ গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদের সভাপতিত্বে সিন্ডিকেট সভায় সিন্ডিকেট সদস্য তৎকালীন ময়মনসিংহ-৭-ত্রিশাল আসনের এমপি অ্যাডভোকেট রেজা আলীসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এ জাতীয় আরো খবর..