পটুয়াখালী প্রতিনিধি: নিষেধাজ্ঞার ২৩তম দিনে পটুয়াখালীর বাউফলে জাটকা ইলিশে বাজার সয়লাব। প্রজনণের অভায়ারণ্য হিসেবে চিহ্নিত তেঁতুলিয়া নদীর বাউফল সীমানায় ৪০কিলোমিটার এলাকায় নিষিদ্ধ বাঁধা জাল, গোপজাল, বেহুন্দিজাল ও কারেন্ট জালে অবাধে ধরা পড়ছে ইলিশের পোনা। সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জেলেরা প্রতিনিয়তই শিকার করছেন লাখ লাখ জাটকা। ইলিশের এই পোনাকে এলাকার হাটবাজারে ‘চাপিলা মাছ’ বলে বিক্রি করা হয়। অথচ জেলে ও বিক্রেতা সকলেই স্বীকার করছেন এগুলো জাটকা বা ইলিশের পোনা। বিশেষ অভিযানের ভয়ে গ্রামে গ্রামে গিয়ে বিক্রি করেন জেলেরা।
জানাগেছে, প্রজনণ কেন্দ্র খ্যাত তেঁতুলিয়ার মোট ৪০কিলোমিটার এলাকা গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করে করে ৬০দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে সৎস্য অধিদপ্তর। গত ১মার্চ থেকে শুরু হয় এবং চলবে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। এসময় কোন ধরনের মাছ শিকার ও বাজারজাত করা নিষেধ। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার কোন চিহ্নও লক্ষ্য করা যায়নি নদীতে কিংবা বাজারগুলোতে। নদীতে নেই প্রশাসনের কোন হাঁকডাক। একদিকে ফিশারিজ ট্রলার অপর দিকে জেলে নৌকা নদীতে ভাসমান থাকে। অপরদিকে অনেকটা প্রকাশ্যেই প্রতিটি বাজারে মাছের ট্রেতে ভাগ দিয়ে বিছিয়ে বিক্রি হচ্ছে চাপিলা নামে ইলেশর বাচ্চা।
নদীতে সাড়ে তিন ইঞ্চির কম ফাঁসের জাল ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। জেলেরা ছোট ফাঁসের নিষিদ্ধ বাঁধা জাল, গোপজাল, বেহুন্দিজাল, বেড় জাল ও কারেন্ট জাল ব্যবহার করে প্রতিদিন জাটকা ইলিশ শিকার করছেন। মাঝে মাঝে অভিযান পরিচালনা করেন মৎস্য অফিস। অভিযোগ রয়েছে ওই অভিযানে কোন জেলে গ্রেপ্তার হন না। নদীতে পৌছার আগেই মৎস্য কর্মকর্তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে যান সকল জেলে। কর্মকর্তাদের সাথে রয়েছে জেলেদের যোগসাজস। অভিযানে উদ্ধার হয় অবৈধ জাল। উদ্ধার হওয়া জাল পুনরায় বিক্রি হয় জেলেদের কাছে এমন অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
জেলেরা জানিয়েছেন, বর্তমানে তেঁতুলিয়া নদীর পাড়ে ২ঝুড়ি জাটকা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার থেকে ১২'শ টাকায়। তারা আরো জানান, নিষিদ্ধ পাই জাল , মশারী জাল দিয়ে চিহ্নিত ১৫ থেকে ১৬ জন ব্যাক্তি এ মাছ ধরার সেন্ডিকেট নিয়ন্ত্রন করছে। নৈ-পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জকে ফোন করা হলেও তিনি (০১৩২০১৬৭১৮০) রিসিভ করেননি। এবিষয়ে মৎস্য কর্মকর্তা মাহাবুবুল আলম ঝান্টা বলেন, ‘অভয়াশ্রম রক্ষায় বাউফলের ৪০কিমি এলাকায় ৬০দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে। আমারা নদীতে আছি। আমাদের কোন নৌযান না থাকায় ঠিকমত অভিযান পরিচালনা করতে পাড়ি না। তাছারা আমাদেরকে সরকারী ভাবে কোন নৌযান ভাড়া পরিষোধ করা হয় না। আমারা নিজস্ব টাকায় ১টি ট্রলার নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে থাকি। জেলেদের ট্রলার আমাদের চেয়ে দ্রতগামী হওয়ায় আমরা তাদেরকে আটক করতে পারি না।
এ জাতীয় আরো খবর..