করোনার প্রাদুর্ভাবে ২০২০ সালে পুরো ও ২০২১ সালে আইপিএলের শেষাংশ হয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতে। মহামারির ধাক্কা সামলে ২০২২ সালে ভারতে ফেরে আইপিএল। ২০১১ সালের পর সেবারই প্রথম ১০ দলের টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়।
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ ঘরে ফেরার পর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) কপাল আরও খুলে গেছে। ওই বছর আইপিএল থেকে বিসিসিআই প্রায় ৩০ কোটি ডলার আয় করেছে; বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৩ হাজার ২৮২ কোটি টাকা। বোর্ডের সদ্য প্রকাশিত আর্থিক নথি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
২০০৮ সালে আইপিএল শুরু হওয়ার সময় থেকেই টিভি স্বত্ব ও পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে কোটি কোটি টাকা পকেটে পুরছে ভারতীয় বোর্ড। বিসিসিআই বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম ধনী সংস্থা হতে পেরেছে আইপিএলের সুবাদেই। বিশ্ব টি-টোয়েন্টির সবচেয়ে বড় বাজার আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোরই দখলে।
পরশু বিসিসিআইয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত গত পাঁচ বছরের বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বোর্ডে উদ্বৃত্ত আয় হিসেবে জমা করেছে ২৭০ কোটি ডলার (২৯ হাজার ৫৪৬ কোটি টাকা)। ওই বছর থেকে আবার আইপিএলে দুটি দলের সংখ্যা বাড়িয়ে ১০ করা হয়। সেবার টুর্নামেন্ট থেকে বোর্ডের রাজস্বে যুক্ত হয়েছে ৭৭ কোটি ১০ লাখ ডলার (৮ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা), টুর্নামেন্ট আয়োজনে খরচ হয়েছে ৪৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার (৫ হাজার ২৪১ কোটি টাকা)। তার মানে, বিসিসিআইয়ের লাভ ২৯ কোটি ২০ লাখ ডলার (৩ হাজার ১৯৫ কোটি টাকা)। সে সময় ভারতীয় বোর্ডপ্রধানের দায়িত্বে ছিলেন সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলী। ওই বছরেরই অক্টোবরে সৌরভ বোর্ড সভাপতির দায়িত্ব ছাড়লে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন ১৯৮৩ বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য রজার বিনি।
বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, ২০১৭ সালের পর এবারই প্রথম আর্থিক বিষয়াদি প্রকাশ্যে আনল বিসিসিআই। বোর্ডের দুর্নীতিবিরোধী–বিষয়ক উপদেষ্টা নিরাজ কুমার এ বছর ‘অ্যা কুপ ইন ক্রিকেট’ নামে একটি বই প্রকাশ করেছেন। সেখানে বিসিসিআইয়ের ভেতরকার অনেক কিছু উঠে এসেছে। গত জুনে অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ সংবাদমাধ্যম সিডনি মর্নিং হেরাল্ডকে তাঁর লেখা বই নিয়ে সাক্ষাৎকার দেন নিরাজ কুমার। সাক্ষাৎকারে তিনি বিসিসিআইয়ের আর্থিক গোপনীয়তার সমালোচনা করে বলেন, ‘আমাদের বোর্ড অনেক ধনী। আমরা রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাগুলোকে বিপুল অর্থ দিয়ে থাকি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এসবের কখনো হিসাব করা হয় না।’
নিরাজ কুমারের কথাগুলোকে আমলে নেওয়াতেই হয়তো এবার বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করল বিসিসিআই। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত সম্প্রচার সংস্থা ডিজনি ও ভায়াকমের কাছে আইপিএলের সম্প্রচার স্বত্ব বিক্রি করে বিসিসিআই। ২০২৩ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত আইপিএল সম্প্রচারের অনুমোদন পাওয়া ডিজনি স্টার ও ভায়াকম ভারতীয় বোর্ডকে দিয়েছে চোখ কপালে তোলার মতো অর্থ—অঙ্কটা ৬২০কোটি ডলার (৬৭ হাজার ৮৪৬ কোটি টাকা), যা আগের পাঁচ বছরের সম্প্রচার স্বত্ব থেকে পাওয়া অর্থের চেয়ে প্রায় আড়াই গুণ বেশি।
এ বছর বিসিসিআই প্রথমবার মেয়েদের আইপিএল (ওমেন’স প্রিমিয়ার লিগ নামে পরিচিত) মঞ্চস্থ করেছে। ফ্যাঞ্চাইজি ও টিভি স্বত্ব থেকে ২০২৩ সালে এরই মধ্যে ৭০ কোটি ডলার (৭ হাজার ৬৬০ কোটি টাকা) আয় করে ফেলেছে বিসিসিআই।
এ জাতীয় আরো খবর..